somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনের দরজা ..

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- আপনি ডায়রি লেখেন ?
- আর বোলেন না, কতবার যে শুরু করলাম .. একদম কন্টিনিউ করতে পারিনা ..

বলতে বলতেই কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে উপরে তাকাই ... সিলিং ছুইছুই করা ৪ টা তাকে বই, সিডি, ডিভিডি রাখা। একদম নিচেরটায় এলোমেলো সিডি, ডিভিডি .. যখনই দেখি তখনই মনে হয় গুছায় রাখা দরকার। পরে গুছাই - ভেবে সাথে সাথেই অবশ্য কম্পিউটারে ডুবে যাই আবার। আর সেই "পরে" টা আর আসতেই চায়না। সিডির উপরে বইয়ের তাকটার অবস্থা অবশ্য অত খারাপ না। একটু খুজতেই পেয়ে গেলাম যা চাচ্ছিলাম।

- দাড়ান তো একটু। একটা জিনিস দেখি।
- আচ্ছা।

তাক থেকে নামানো ডায়রির পাতা উল্টাই। দু'টা মোটা ডায়রি। কত কিছু লিখতে চেয়েও লেখা হয়নি প্রায় কিছুই। হঠাৎ করে জীবনের মত মনে হয় কি। এটা সেটা করতে চাই। কয়টাই বা করা হয়ে ওঠে।
একদম সামনের দেখি কয়েক পৃষ্ঠা লেখা আছে।

- আগের লেখা পাইসি কয়েকটা।
- তাই ? পড়েন তো।
- একদম অল্প কিন্তু..
- আরে কোন ব্যাপারনা.. পড়েন ..

হেডফোনটা ঠিক করে নেই। নেট এ নতুন পরিচিত বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। একথা সেকথায় দেখি দুজনেই সেবা প্রকাশনীর কিশোর ক্লাসিকের অনেক ভক্ত। অনেক কথা বললাম বই আর নিজেদের টুক টাক বিষয়ে। পছন্দের অনেক মিল দেখে আড্ডা জমে ওঠে। জানলাম, বন্ধুটা ব্লগ লেখেন। ব্লগের কথা থেকে ডায়রির কথা শুরু হয়। সেখান থেকেই শুরু বইয়ের তাক থেকে অনেক বছরের পুরাতন আমি টাকে খুড়ে বের করার চেষ্টা..

- ২০০০ সালের লেখা.. ২৫শে ফেব্রুয়ারী..
"আসলে অনেক সময় পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখি করে দেয়। এক সাথে অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। অনেক কিছু ভেবে, নিজের কিছু দোষত্রুটি, ভুলভালের মধ্যে থেকে সবার কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার আশাটা বোকামিই হয়তোবা"
খাইসে!! কি কাঠখোট্টা ভাষা রে বাবা। এসব আমি লিখসি!!
- হেহেহে। থামলেন কেন?
- নাহ। কেমন করে জানি লেখা। শক্ত শক্ত লাগতেসে। নিজের লেখা পড়ে নিজেই কিছুটা লজ্জা, কিছুটা দ্বিধার সাথে বলি।
- এত কিছু ভাবতে হবে না। বন্ধু উৎসাহ দেয়।
তখন যেমন করে ভাবতেন তেমনই লিখসেন। অসুবিধা কোথায়।

কিছুটা উৎসাহ পেয়ে, কিছুটা নিজের কৌতূহল থেকে কলেজ জীবনের কথা ভাবতে ভাবতে পড়তে থাকি ..
" দোষত্রুটি, ভুলভালের মধ্যে থেকে সবার কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার আশাটা বোকামিই হয়তোবা। তবুও কলেজের অনেক পরিস্থিতিতে এতটা দুঃখিত, বিব্রত, হতবুদ্ধি হতে হয়। ... "

বন্ধুটাকে আমার সেসব ছেলেমানুষি পড়ে শোনাতে গিয়েই আমার সবশেষে লেখা নোট টা পেলাম।

"২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৬
কত দিন পর ডায়রি লিখতে বসলাম মনে নাই। অনেক ছোটখাট, কিছু বড়সর ঘটনা ঘটে গেছে। কতো নতুন মানুষের সাথে পরিচয়, changes in the depth of relationships.. এটা সেটার অভিজ্ঞতা-- চিন্তা করলেই মনে হয়, কিছু লিখে রাখা উচিত ছিল। অনেক কিছুই আর কখনোই হয়তো মনের দরজায় নক করবে না ... "

চুপ হয়ে যাই। অনেক ছোটবেলার কথা, স্কুল-কলেজের কথা, বন্ধুদের স্মৃতি একসাথে করার চেষ্টা করি। ভাবতে থাকি। ছিড়ে যাওয়া চিঠি জোড়া দেয়ার জন্য টুকরোগুলো খুঁজতে থাকি যেন। অনেক কিছু পাই, কিন্তু তার চেয়ে বেশি পাইনা...

বন্ধু যেন মনের কথা বুঝতে পারে।
- আপনি লেখা শুরু করেন। ডায়রি, ব্লগ যেটা ইচ্ছা। তাহলে চিন্তাগুলো আর হারাবে না।

আমি হাসি। চাপা পড়া অতীত গুলোও হেসে ওঠে নাকি।
- ঠিক বলসেন। লেখার চেষ্টা করবো এখন থেকে। মনে অপ্রয়োজনীয়, এলোমেলো, কতো কিছু জমে আছে। কিন্তু অনেক প্রিয় মুহূর্ত হারায় ফেল্‌সি ..

মনের দরজায় এসে টোকা দেয়ার সুযোগ করে দিতে স্মৃতিগুলোর জন্য রাস্তা বানানো শুরু করি আমি...


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৬:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×