অষ্টম শতকের শুরু থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস পর পর দুটো বিদেশী শাসন দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত - ইসলামী ও ব্রিটিশ।
ইসলামের শাসন শুরু হয় ৭১২ সালে মোহাম্মদ বিন কাসিম দ্বারা সিন্ধু দখলের মাধ্যেম এবং তা সরকারীভাবে শেষ হয় ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের পর। অপরদিকে ব্রিটিশ উপনিবেশিক দখল কার্যকর হতে শুরু করে ১৭৫৭ সালে; শেষ হয় ১৯৪৭ সালে।
৭১২ সালে দামেষ্কের খলিফা আল-ওয়ালিদের আশির্বাদপুষ্ট ও বাগদাদের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফের দ্বারা পরিচালিত হয়ে কাসিম ভারতে ইসলামের বিজয় ও শাসনের অভিষেক ঘটান। ১৫৯০’এর দশকে মুঘল সম্রাট আকবরের অধীনে মুসলিম শাসকগণ শক্তভাবে ভারতবর্ষের প্রায় সম্পূর্ণ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণে আনে বা লাভ করে। সম্রাট আওরঙ্গজেবের অধীনে (১৬৫৮-১৭০৭) ভারতের মুসলিম নিয়ন্ত্রণ আরো কিছুটা সম্প্রসারীত হয়। ১৭৭৫ সালে পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভাড়াটিয়া বাহিনীর হাতে বাংলার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয় ভারতে ইসলামি শাসনের সমাপ্তি সূচনা করে। ১৭৯৯ সালে সর্বশেষ স্বাধীন মুসলিম শাসক মহীশূরের টিপু সুলতান ইংরেজদের হাতে পরাজয় কার্যকরভাবে ভারতে মুসলিম শাসনের সমাপ্তি টানে।
যে জন্য এই লেখার অবতারণা করা সেটা হলো ইসলামি শাসন এর পর শুরু হয় ইংরেজ শাসন এবং এর সমাপ্তি ১৯৪৭। আর আমরা যারা ভারতবর্ষের ইতিহাস পড়ি তা এই দুটো বিদেশী শাসনের ইতিহাস পড়লেও মাত্র একটি শাসন ব্যাবস্থাকে উল্লেখ করা হয় উপনিবেশিক হিসেবে। তার মানে কি ইসলাম এই ভারতবর্ষে ভারতবর্ষের জন্ম থেকেই ছিল? নাকি এই উপমহাদেশে মুসলিম জাতিটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পূষ্ট হয়ে আকাশ থেকে পড়েছে যে তাদের শাসনামলের গুনকীর্তন ছাড়া অন্য কিছু পড়ানো হয় না?
বলা যায় বরং ইংরেজ উপনিবেশিক আমল এর ব্যপ্তিকাল মাত্র ১৯০ বছর এবং ইসলামি শাসন কত হয় তা উপড়ের বর্নণায় বলা যায় ১০০০ বছরের উপড়ে যা কোন অংশকে কম অন্ধকারাচ্ছন্ন বা দুর্দশাগ্রস্ত ছিল না; অথচ সে ইসলামি শাসনকে দুধে-ধোয়া বানানোর জন্য সচেতন ও সুচিন্তিত প্রয়াস চালানো হয়েছে।
ভারতে ইসলামি শাসনের কথা যখন বলা হয়, তা মূলত একটা ইতিবাচক, লাভজনক, এমনকি গৌরবময় অধ্যায়রুপে বর্ণিত হয়। উদাহরণস্বরুপ, ভারতের ইসলামি স্বেচ্ছাচারীতাকে ধুয়ে-মুছে নির্মল্রুপ প্রদানে অগ্রণী পন্ডিত নেহেরু বলেনঃ ‘ইসলাম ভারতে অগ্রগতির উপাদান এনেছিল’।
অথচ আমরা যদি আওরঙ্গজেবের (১৬৫৮-১৭৭)শাসনকালকেই দেখি তাহলে পাবো ব্যাপক সংখ্যায় হিন্দু মন্দির ও শিক্ষালয় ধ্বংস, এবং অবিশ্বাসীদেরকে (হিন্দু, শিখ প্রভৃতি) হত্যার অভিজ্ঞতা। সুলতাম মাহমুদের ১৭ বার ভারত আক্রমণ করে মন্দির ভেঙ্গে সেখানকার স্বর্ণালংকার লুট করার কথা তো সাধারণ ইতিহাস বইয়েই পাওয়া যায়।
(এখানকার বেশীর ভাগ তথ্য এম এ খানের ‘ইসলামিক জিহাদ’ থেকে নেওয়া)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




