somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আয়েশাদের পাশেই যেন অর্চনারা থাকতে পারে

২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রিয়া সাহা যা বলেছেন তাঁর প্রথমাংশ খুবই সত্যি!
আমাদের আশে পাশের চেনা জানা হিন্দুরা অনেকেই তো দেশে নেই, অন্যান্য দেশে যেমন মাইগ্রেট করেছে, ভারতেও বড় একটা অংশ মাইগ্রেট করেছে, এটা অস্বীকার করবার কোন উপায় নেই।
আর এটাও তো সত্য, হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের ভিটা মাটি দখল হয়ে গেছে। তবে আমি নিশ্চিত উনি কিছু হারাননি। ট্রাম্প সরল বিশ্বাসে উনাকে যখন বললেন কে তোমার জমি দখল করেছে? উনি একটু ভাবলেন কোন সুনির্দিষ্ট নাম বলতে পারলেন না। কেউ যদি আমার সব দখল করে নিত সেই নাম কোন দিন ভুলতে পারতাম? উনি আমতা আমতা করে মুসলিম এক্সট্রিমিস্ট বলে উত্তর দিলেন, আরও বললেন দখলদাররা সরকারী মদদপুষ্ট!

এবারো অর্ধেক সত্য, অর্ধেক বিভ্রান্তি। শেষের অংশটুকু একদম সঠিক, কেননা রাজনৈতিক পান্ডারাই জবড় দখল করছে সব, গ্রাস করছে সব। তবে একটা কথা না বললে অন্যায় হবে সেটি হচ্ছে এদেশে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে অত্যাচারিত হচ্ছে, দখলদাররা অসাম্প্রদায়িক ভাবে দুর্বলদের সব কেড়ে নিচ্ছে, এখানে মজলুমের ধর্ম পরিচয় মুখ্য না একদমই।এই ঘোলা পানিতেই মাছটা শিকার করতে চেয়েছেন প্রিয়া সাহা। কিন্তু এ কথা আমাদেরকে এই সিদ্ধান্তে আনে না যে দেশ ত্যাগ করছেন না। হিন্দুরা দেশ ত্যাগ করছেন এটা ধ্রুব সত্য। শুধু অত্যাচারিত হয়েই করছেন তা না, আরও নানান কারণ আছে, সামাজিক, পারিবারিক এবং অবশ্যই নিরাপত্তাহীনতা। কিন্তু কথা হল এই নিরাপত্তা হীনতায় এই দেশের সবাই আছি, কারো জীবনের নিশ্চয়তা নেই এই দেশে, এই সমাজে, স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা কারো নেই, সম্পদ বা সম্পত্তি দখল হয়ে যাবে না, এমন নিশ্চয়তা নেই, স্ত্রি-কন্যা-বোন এমন কি মা ও ধর্ষিতা হবেন না এমন কথা কেউ বলতে পারি না! ধর্মের নামে বা অন্য যে কোন কারণে আমি আপনি গুম হব না কেউ বলতে পারি না। আমরা ভিডিওতে দেখেছি, সাঁওতাল পল্লীতে পুলিশ আগুন লাগাচ্ছে, তাঁরা কি সংখ্যা লঘু নন? পুলিশ কি এখানে মুসলিম এক্সট্রিমিস্ট?! জাতির বেয়াই যে সাংবাদিকের জমি দখল করে, হাতে হাত কড়া পরিয়েছিলেন তখন তিনি কি এক্সট্রিমিস্ট ছিলেন?! মোটেও নাহ!

মুল কথা এদেশের অধিকাংশ মানুষই নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আমি সব সময় বলি, ধর্ম নয় বরং যার ক্ষমতা নাই অর্থনৈতিক শক্তি নাই, তাঁরা সবাই এদেশে আসলে সংখ্যা গুরু হলেও গুরুত্বহীন, ক্ষমতাবানের সহজ শিকার। হিন্দুদের অনেকেই এখন বড় বড় সরকারী পদ পদবী পেয়েছেন, এটা আই ওয়াশ, তাঁদের ঘর, বাড়ী, জমি- খামার দখল হচ্ছে তো, এটা কেউ না করতে পারবে না, একেই সাথে এটাও বলতে হবে মুসলিমদেরও সাথেও একই ঘটান ঘটছে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ভাবেই অত্যাচার চলছে। এখন দেখতে হবে ল অফ এভারেজে এই অনুপাত কি বলছে?
তারপরও সাধারণ মুসলিমদের দায়িত্ব অন্যান্য ধর্মালম্বীদের পাশে থাকা, নিদেন পক্ষে সামাজিক ভাবে তাদের একটা নিরাপত্তা দেয় বা এই টুকু সহমর্মিতা প্রকাশ করা যেন তাঁরা বুঝতে পারে আমরা তাঁদের ব্যাথাটুকু, কষ্টটুকু অনুভব করতে পারি। প্রতিমা ভাংচুর হলে কি কষ্ট তাঁরা পান, আমরা যেন বুঝতে পারি। ভারতে বাবরী মসজিদ ভাঙলে আপনি যেমন কষ্ট পান, তেমনই একজন হিন্দু বা বৌদ্ধ একই কষ্ট পান মন্দির বা প্যাগোডা বা প্রতিমা ভাঙলে। প্রতি বছর কেউ না কেউ তো ভাংছেই (যেই ভাঙ্গুক), আমাদের সেটা প্রতিহত করা উচিৎ না পারলে তাঁদের দুঃখে দুঃখী হওয়া উচিৎ, সেটুকু না পারলেও অন্তত ভুল তথ্য বা তত্ত্ব বা বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধ করা উচিৎ। একজন গুড মুসলিমের দায়িত্বের ভিতরে এগুলোও পরে।

ভারতে গোমাংসের জন্য মারপিত বা খুন খারাবা হলে, বা জোড় করে কোন মুসলিমকে “জয় সিরাম” বলালে আমাদের দেশের হিন্দুদের কি করবার আছে? তেমনই কোথাও উল্টো ঘটনা ঘটলে সব মুসলিমদের দায়ী করাও ঠিক নয়, এটাও সবার বুঝতে হবে। যে কোন জায়গায় এই ধর্মীয় ইস্যু আসলেই সবাই সব ভুলে দোষারোপ করা শুরু করে দেই। কাদা ছোঁড়া ছুঁড়ি শুরু করে দেই। এই ব্যক্তি প্রিয়া সাহার দায় কি আমার পাশের বাসার অর্চনার? কোথাও সো কল্ড ইস্লামিস্টরা যদি কিছু ঘটায় আমরা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলি, এরা মুসলিম নন, এরা আমাদের প্রতিনিধি নন। সেই বিবেচনা এখন নেই কেন? প্রিয়া সাহা কি সমস্ত হিন্দুদের প্রতিনিধি? নিশ্চয়ই না।

আসলে এভাবে বিভাজন করেই রাজনৈতিক ফায়দাটা লুটছে কেউ কেউ! দইটা সব সময় নেপয়ই মারে। আমি-আপনি শুধু বৃথা তর্কই করে যাই।

আমাদের বিবেক জাগ্রত থাকুক। অন্যায় কে প্রতিহত করার সাহস জাগ্রত হউক। আর সত্যর মুখোমুখি দাড়াবার শক্তি অর্জিত হউক!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:১৮
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×