প্রথমেই কম্পু বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসাবে (ডাহা মিথ্যা) আমি তোমাদেরকে জানাতে চাই যে, অধর্মব্যবসায়ী কথাটি দুভাবে পার্সিং হতে পারে । (১) অ/ধর্মব্যবসায়ী ও (২) অধর্ম/ব্যবসায়ী। আমি কোন অর্থে বলছি, তা পরিষ্কার করতে চাই না, কারণ পরিষ্কার জিনিস আমার পছন্দ না। পরিষ্কারের সাথে ওজু, গোসল এসবের সম্পর্ক আছে। এগুলো আমি ভয় পাই -- ঠান্ডা লেগে যাবে, সীজন বদলাচ্ছে তো!
তোমরা বল ধর্ম সব অলীক গল্পে ঠাসা। কিন্তু তোমাদের লেখা সাইফাই গল্পও অনেক অসম্ভবে ভর্তি, যেমন অতীতে টাইম ট্রাভেল। তুমি যদি পেছনে গিয়ে তোমার ঠাকুর্দাকে খুন করে আস, জন্মাবে কি করে এই কাজ করতে? নিছক বিনোদন ভাবতে পার, মোটেই বিজ্ঞান নয়। বেশ, ধর্মের (আসলে শুধু ইসলামই তো খারাপ ধর্ম তোমাদের কাছে, আমি জানি) কথাগুলোকেও না হয় বড় কারো হিতোপদেশ ভাবলে, কোন অলৌকিক অস্তিত্বের প্রয়োজন নেই। অনেক ভালো কথা আছে। তার মধ্যে আত্ম-নিয়ন্ত্রণও আছে, নিজের সারা দিনের কৃতকর্মের হিসাব নিকাশের কথা আছে। প্রার্থনা নাই করলে, একটু চিন্তা করলেও তো পার।
যেমন ভাবতে পারো, এই যে আমি দিনের পর দিন আমার পদটা আঁকড়ে রেখেছি, আমি কি আসলে তার উপযুক্ত? এই যে আমি ২০০টা সাইফাই গল্পের বই বাচ্চাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বড়লোক হয়ে গেছি, তার চেয়ে চারটা ভালো গবেষণা পেপার লিখে ছাপালে ভালো হতো না? এই যে নাদান বাচ্চাদেরকে ঢং করে রাতের বেলায় ল্যাবে গিয়ে পিসি সল্ডার করে দেখিয়ে "স্যার কি মহৎ পরিশ্রমী শিক্ষক" উপাধি অর্জন করেছি, তার চেয়ে তাদেরকে নিয়ে বিশ্ব মানের কিছু গবেষণা করলে ভালো হতো না? তারা তা সিভিতে দেখিয়ে ভালো জায়গায় চান্স পেত, যেটা একটা সত্যিকারের ভালো শিক্ষকের কাজ।
তোমরা সব ছেলেমেয়েদের রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে বল। তারা শোনে না, কে বলল তোমাদের? তবে সবার সঙ্গীত-রুচি তোমাদের পছন্দ মত হতে হবে, এই দাবী কি জুলুম নয়? তোমরা হিজাব পছন্দ কর না, ভালো। অন্যদের কেন পরতে বাধ দেবে, সবাই কেন তোমাদের নিকট-আত্মীয়াদের মত সমুদ্র সৈকতে স্বল্পতম বসন পরে মহাকালোদের (ইশ, বর্ণবাদী হয়ে গেল, ইসলামেও মহাপাপ, অথচ বাঙালীদের মজ্জাগত) ঘাড়ে চড়ে খিল খিল করবে? অনেকের তো তা দেখে গা ঘিন ঘিন করতেই পারে।
তোমরা একুশে ভোরে ফুল দিতে যাবে, তোমাদের পোষালে যাও, আমাকে বাধ্য করতে চাও কেন? এই লম্বা লাইনে খালি পায়ে হাটা কি বিজ্ঞান সম্মত? এটা কি ধর্মীয় পূজা রিচুয়াল হয়ে গেল না? আমি না হয় সেই সময়টা বাড়িতে বসে বরং কিছু বাংলা শিখলাম, যাতে কেউ আমার ভাষায় কোন ভুল না পায়। সেটাই কি আমার মাতৃভাষার প্রতি বেশি ভালোবাসা দেখাবে না?
তোমরা দাড়ি-টুপি দেখলে ক্ষেপে যাও, কিন্তু বিদেশী গুণীলোকদেরও (বিশেষত ইহুদী) দাড়ি টুপি ছিল ও আছে। এটা কি একটা এমন ফান্ডামেন্টাল খারাপত্বের চিহ্ন হতে পারে, যে তোমাদের লেখা সব বইতে ভিলেনের মুখে দাড়ি, মাথায় টুপি? বাচ্চাদের এই সব আজব সাধারণীকরণ শেখানো কি অনৈতিক কাজ নয়?
তোমরা মুক্তি যুদ্ধের কথা বল। এমন কি ১৭ পাতায় তার পুরো ইতিহাস লিখে ফেল। ব্যাপারটা কি এত সোজা ছিল, জটিলতা ছিল না? তোমরা সবাই যারা ১৮ বছরের বেশি ছিলে, কই গেলে না তো সেই যুদ্ধে, বরং রাজাকার নানাদের আশ্রয়ে থেকে গেলে। এত বছর পরে হঠাৎ এত দরদ উথলে উঠল? ভালো ব্যবসার সন্ধান পেয়ে গেছ, তাই?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




