জানি ঠিক যখন আমি এই মেইলটি লিখছি তখন তুই গভীর ঘুমে আছন্ন আর তোর জন্য এটাই স্বাভাবিক। সারাদিনের ধকল শেষে যে এটার বড্ড প্রয়োজন।
ঘুম শেষে ওঠে ঢুলুঢুলু চোখে পড়তে বসা,আমার ফোন ভ্রু কুচকে রিসিভ করা, অতি দ্রুত কথা শেষ করে কোনভাবে রেডী হয়ে কলেজে দোড়ানো। ব্যাস্ত তুই তোর ব্যাস্ততা ঘিরে যেখানে আমার অবস্তান খুবই সামান্য।আসলে এটা নিয়ে আমার একটু ও রাগ বা অভিমান নেই। আমি জানি এটাই বাস্তবতা এই নিয়ে আমাকে, আমাদের চলতে হবে।
আচ্ছা তুই কি জানিস সারা দিনের ব্যস্ততা শেষে, কাজ শেষে পরিশ্রান্ত আমি কতটা দিন বসে ছিলাম গভীর রাত পযন্ত শুধু তুই ঘুম থেকে উঠে আমার সাথে ২-১ মিনিট কথা বলবি বলে।কি করব বল একবার ঘুমিয়ে গেলে যে তোকে ফোন করা হবে না, ১ মিনিটের জন্য হলেও তোর কন্ঠটা শোনা হবে না, হবে না কল্পনার ফানুসটা ওই দূর আকাশের নীলিমায় উড়িয়ে বেড়ানো।
জানিস মাঝে মাঝে ঘড়ির কাটার উপর এমন রাগ হয় কেন আমাদের মাঝে সময়ের ব্যবধান আরও বেশী হল না তাহলে তো আর আমাকে সারারাত জেগে বসে থাকতে হত না আর ঢুলু ঢুলু চোখে কাজে যেতে হত না। আমার এই ক্লান্তিহীন ভাবে বসে থাকা শুধু অল্প কিছুখন তোর সাথে কথা বলব বল.।
জানিস কতদিন ইছে হয়েছে তোকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলি " ঐ আজ ১/২ ঘন্টা কম ঘুমা। আয় এই সময়টা আমরা কথা বলি , কল্পনায় লাল,নীল বাহারী রংয়ের ফানুস ওড়াই। পারিনি যখনই কল্পনায় তোর ক্লান্ত, ঘুমুঘুমু মায়াময় চেহারটা ভেসে ওঠত আমার সেই অদম্য ইচ্ছেটাকে দমিয়ে রাখতাম। কাজের ফাকে ১৫ মিনিট ব্রেক টাইমে তোকে ফোন দিতাম এই আশায় যদি তুই তখনও না ঘুমিয়ে থাকিস এই আশায়। কত বার যে নেটওয়াক ূলাকে ইংলিশ মানুষদের বাংলা ভাষায় গালি দিয়েছি লং ডিস্ট টেন এ লাইন না পাওয়ার জন্য তার কোন ইয়াতা নাই।
জানিস তোকে কখনও বলা হয় নি আমার অনেক জমানো কথা যেমন বলা হয়নি খুব মায়া লাগত যখন তোই কথা বলতে বলতে গুমিয়ে পরতি।মনে আছে ম্যানেজারের ভয়ে কত কত দিন টয়লেটে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কথা বলেছি
।মাঝে মাঝে আমার ইংলিশ ফ্রেন্ডরা শুনে বলত " MO i dont understand wht u saying. r u saying anything? আমি বলতাম " singing my country song. আর ওরা হাসত। জানিস বৃহস্পতিবার সারা রাত বসর থাকতাম কারন পরেরদিন তোর ছুটি একটু লম্বা কথা হবে বলে।
তোকে কখনও বলা হয়নি অনেক অনুনয় বিনয় এর পর তুই যখন গান গাইতি এত ভাল লাগত যে আমি তা মোবাইলে রেকড্র করে রাখতাম, বলা হয়নি কখনো তুই ভেংছি কাটবি এই ভয়ে। এমনিতে তো বদনাম এর শেষ নেই। নতুন করে আর একটা যোগ করতে ই চ্ছে ছিল না যে।
কখনও বুঝবি না এই দীঘ ১বছর ৪ মাসে আমি কতটা সময় তৃষ্ঞাত পথিকের মত বসে ছিলাম তুই তুমি করে বলবি এই আশায়। কত প্লান,মান অভিমান, আমার দেশে আসা নিয়ে। মনে কি পড়ে ক্লাশ এর কথা বলে শপিং করে বৃষ্টিতে ভিজে জবুথবু হয়ে বাসায় ফেরা, তারপর ৩দিনের জন্য অসুখ বাধানো। জানিস ভিজে ভিজে যখন হাত ধরে হাটছিলাম সেই সৃম্তি আমার এখনও কল্নায় ভাসে। আচ্ছা তুই কেমন ডাক্তার বলত অল্পতেই অসুখ বাধিয়ে ফেলিস।
ঐ ভুলোমনা মনে কি আছে ২য় ইয়ার ফাইনাল exam এর item এর কথা। তুই তখন মহা ব্যস্ত exam r exam নিয়ে। আর এদিকে আমাকে বেক করতে হবে। তোর ১৪৪*২=২৮৮ কে পাশ কাটিয়ে তোর কলেজে উপস্হিত। কত কিছুর বিনিময়ে যাস্ট ৫ মিনিটের জন্য বের করে বাইকে বসিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা টি.এস.সি, শাহবাগ, আর রাত অবধি জমিয়ে আড্ডা।
জানিস কতদিন কতরাএি আমি এই সব জায়গায় আড্ডা দিয়েছি বাট সেদিনের মত ভাললাগা, এতটা মজার সময় কাটানো আমি কখনও পাইনি।
মামার ঝাল মুড়ি খাওয়া, ভুলে মরিচে কামড় দেয়া র দুচোখ বেয়ে অশ্রও গড়িয়ে পড়া, সন্ব্যার পরে রোকেয়া হলের সামনে বসে হেডফোনে গান শুনা, হাতে হাত রেখে অনেকটা সময় চুপচাপ বসে থাকা...........
জানিস অনেক ইচ্ছে ছিল তোকে নিয়ে মুভি দেখব বাট কি করব বল তোর এক্সাম আর আমার ৫ বছর পর শেষে ফেরা সবকিছু নিয়ে এত বিজি ছিলাম আর তা হয়ে ওঠল না।
আচ্ছা বলতো এখানের পিজ্জা এমন বিস্বাদ কেন ? কতবার যে এখানে পিজ্জা খেলাম বাট সেদিনের মত একটু ও স্বাদ লাগে না কি করি বলত? এটা কি তুই পাশে ছিলি বলে নাকি অন্যকোন কারনে।
জানিস এখানে কেউ আমার সাথে ঝগড়া করে না লং ড্রাইভ এ গান সিলেকশন নিয়ে কেমন লাগে বলত? আমার হিপ হপ নাকি তোর আধুনিক ঝগড়াটা যে খুব মিস করছি। কি হয় আর একবার আমার সাথে ঝগড়া করে গেলে। আচ্ছা তুই যদি প্রমিজ করিস আমার সাথে যাবি তাহলে তোর সিলেকশন হই।
মাএ ১মাসের জন্য দেশে ফেরা কত সৃম্তি , কত ানন্দ , রাগ অভিমান, তোকে এক পলক দেখার জন্য চাটগা থেকে ঢাকায় ছুটে আসা।
বল কি করে ভুলি এত এত সৃম্তি সব যে আমার চোখের পাতায় ভাসে। হঠাত ব্যস্ত হয়ে ওঠল তোর ফ্যামিলি বিয়ে দেয়ার জন্য আর আমি এই দিকে মাএ পড়ালেখার পাট চুকিয়ে জব সেক্টরে ঢুকার ট্রাই করছি, financial gap, সবকিছু নিয়ে যখন আমি দিশেহারা তখন তুই প্রথম মোনতা ভেংে বলে ওঠা " আমাদের অন্তজালের পরিচয়, অল্পদিনের ঘোরাঘুরি, আমাকে প্রওফ করতে বলা ভালবাসার গভীরতা, অন্তজালের পরিচয়টাকে বিশ্বাস করতে না পারা আর সবোপরি পরিবারের অমতে বিয়ে করতে না পারার কারন গোলো দেখিয়ে যখন তুই সরে যাচ্ছিলি যানিস ততটা খারাপ লাগেনি যতটা খারাপ লেগেছে যখন তুই বল্লি আমি আপনার তেমন কোন খ্ষতি করিনি।
আচ্ছা আমাদের সম্পক কি ছিল লাভ - লোকসানের খতিয়ান বের করার জন্য।আমি তো কোন দোষারোপ করোনি বা করার চেষ্টা করিনি। তাহলে লাভ -খ্ষতির কথা কেন আসে বলতে পারিস?
বাস্তবতা বুঝার মত বয়স আমার হয়েছে, যদিও অনেক দেরীতে বুঝতে শিখলাম। জানিস তোর উপর আমার কোন রাগ নেই, নেই কোন অভিমান বাস্তবতা দিয়েই তোই তোর ডিসিশন নিয়েছিস। হয়তো তোর জায়গায় আমি হলেও তাই করতাম।
পরিশেষে শুধু বলব , যেখানেই থাকিস , যেভাবেই থাকিস ভাল থাকিস এবং সুখে থাকিস।
বি.দ্র.: ৫তারিখের এই বিশেষ দিনটি তোর জীবনে আর শতবার আসুক এই কামনায়.................................................................................................................................................................
শুভাকাংখী।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




