লাইফ ইজ সিগারেট লেখার কারনে ধূমপানে উৎসাহ প্রদানের অভিযোগে আমাকে কেউ অভিযুক্ত করবেন না প্লীজ। আর করলেও আমাকে নয়। কারন এই দর্শনটি আমার এক 'মিনি' দার্শনিক বন্ধুর। তাকে মিনি দার্শনিক বলার কারন হলো তার দর্শন প্রায় প্রতিদিনই কম-বেশি পরিবর্তন হয়। যদিও পরিবর্তন নিজে ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছুই অপরিবর্তনীয় নয়, তবুও বারংবার দর্শন পরিবর্তনটাকে বোধ করি খোদ দার্শনিকেরাও ভালো চোখে দেখেন না। আমার সেই বন্ধু একসময় খুব বলতো- 'লাইফ ইজ রেইস'। তখন সে ব্যাপক রিক্স নিয়ে সুন্দরী এক মেয়ের সাথে চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছিল। এই প্রেমে যখন ভাঙ্গন শুরু হলো তখন বন্ধুটি বলতে শুরু করলো- 'লাইফ ইজ পেইন'। সম্প্রতি তার দর্শন আবারো বদলে গেছে। এখন সে বলে বেড়াচ্ছে- 'লাইফ ইজ সিগারেট'। আমার বন্ধুটির ভালোবাসার কাহিনী বাংলা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়। প্রথমবার না দেখেই এক মেয়ের সাথে ম্যারাথন প্রেম। এর মধ্যে অবশ্য দেখাদেখির পার্টটা চুকে গেছে। তবে ট্র্যাজিডির বিষয় হলো সুদীর্ঘ সাড়ে চার বছরের ম্যারাথন প্রেম শেষে বন্ধুটি আবিষ্কার করলো তার আদরের প্রেমিকাটি ঘোড়া বেঁধে হাতি খুঁজছে! মানে হলো ঐ মেয়ে আমার বন্ধুকে যে আশা দিয়েছে তার এক প্রবাসী ফুপাতো ভাইকেও একই আশা দিয়েছে। অগত্যা কী আর করা? সবাই ছ্যাঁকা খায় আর আমার সেই বন্ধুটি নিজেই ছ্যাঁকা নিল। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে- বন্ধুর সেই প্রেমিকাটি বাসা থেকে পালিয়ে সেই ফুপাতো ভাইয়ের হাত ধরে একেবারে কাতার পাড়ি জমিয়েছে! বলাবাহুল্য আমার দার্শনিক বন্ধু ঐ মেয়ের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ব্যাপক দুরদর্শীতার প্রমান দিয়েছিল। কিন্তু ভুল ছিল অন্যখানে। প্রথম প্রেমকে প্রবাসী এক পাবলিকের হাতে জলাঞ্জলী দেয়ার পর আমার বন্ধু ঐ মেয়েরই সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর দিকে নজর দিল। বলা বাহুল্য ফোনে গ্যাজানোর মাত্র পনের দিনের মাথায় ঐ মেয়েকেও পটিয়ে ফেলতে সমর্থ হয়েছিল আমার সেই বন্ধুটি। বন্ধুর মেয়ে পটানোর অমায়িক ক্যারিশমা দেখে আগের প্রেমিকাও ফিরে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু ততক্ষণে বন্ধুটি তার নতুন প্রেমিকার প্রেমে মজে গিয়েছিল। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে তাহলে লাইফ ইজ সিগারেট হলো কী করে? হবে না? আগামী সপ্তাহেই যে বন্ধুর দ্বিতীয় প্রেমিকার বিয়ে!
বন্ধুটি অবশ্য এখন ভালোবাসার প্রকৃত দর্শন আবিষ্কারের দাবি করছে। অবশ্য তার এবারের দর্শনটি আমারও ভালো লেগেছে। আমিও সদ্য ছ্যাঁকা নিলাম কিনা! সেদিকে নাইবা গেলাম। নতুন দর্শনটি হলো- 'পৃথিবীতে ভালোবাসা বলতে কিছু নেই। ভালোবাসা নামে যা কিছু আছে তার সবই আসলে মোহ। প্রকৃত অর্থে সব ধরনের ভালোবাসাই কোন না কোন প্রকার মোহাবদ্ধতা।' এই মতের সাথে কারো দ্বিমত থাকতে পারে। তবে এর ব্যাখ্যাটি কিন্তু মোটেও অগ্রহনযোগ্য নয়। ভালোবাসা মানে মোহ। কিন্তু কিসের মোহ? একেক জনের একেক রকম মোহ। কারো টাকার মোহ- কারো শারিরীক মোহ-কারো টাইম পাস করার মোহ- কারো বিয়ের মোহ... এরকম মোহের কী আর শেষ আছে? কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে বাবা-মা, ভাই-বোনের প্রতি ভালোবাসা সেটা কী? সেটাও মোহ। সেই মোহটা হলো রক্তের মোহ। তাই ভালোবাসা আসলে মোহাবদ্ধতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর ভালোবাসার মোহাবদ্ধতা পোড়ায় বটে কিন্তু টিকে থাকে খুব কমই। আর সিগারেটের মোহাবদ্ধতা যেমন পোড়ায়, তেমনি পোড়ানোর তৃপ্তিও দেয়। একারনেই কেউ কেউ বলে সিগারেট হচ্ছে দেশ ও জাতির শত্রূ তাই একে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দিচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো সিগারেট কাউকে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার আগে কখনোই ছাড়ে না!
রি পোস্ট-দার্শনিক ভালোবাসাঃ লাইফ ইজ সিগারেট
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া
১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।