বারান্দার যেতাম প্রথমে। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ছোট ছোট মেয়েগুলো গোলাপি আর নীল জামা পরে রাস্তায় বের হয়ে যেতো খুব সকাল সকাল। কি যে আনন্দ চোখে মুখে। প্রায় সবার সাথেই থাকে একটা ছোট ভ্যানিটি ব্যাগ। সম্ভবত, সেলামির টাকা যত্নে রাখার জন্য। ওদের দেখে মনটা আকাশ সমান ভালো আনন্দ পেতো।
এরপর, ঘড়ে হালকা রয়ে যাওয়া এলোমেলোটা গুছিয়ে ফেলতাম। অনেক বড় হওয়া পর্যন্ত ঈদের দিন সকালে গোসল করতাম।
এর পরপরই প্রথম আমাদের বাসার প্রথম গেষ্টদের স্বাগতম জানাতাম। এরা হচ্ছেন বুয়ার ছেলে বা মেয়েরা যাদের মা রা বিভিন্ন সময়ে আমাদের বাসায় ছিলেন বা কাজ করেছেন। কোনো এক আজব কারনে আমাদের বাসার প্রত্যেকটা বুয়া এবং তাদের ছেলেমেয়ে আমার প্রচন্ড ভক্ত ছিলো। এ নিয়ে অনেকে হাসা হসিও করে মাঝে মাঝে। কি যে মজা লাগতো দেখতে পিচ্চি গুলোকে ঈদের দিনে।। নেল পলিশ, লিপিস্টিক, রুজ কি নেই? এসেই পায়ে পরে যেতো । সেলামী-টেলামি নিয়ে সেমাই-পায়েস খেয়ে আধেক লজ্জা, আধেক খুশি চোখে চলে যেতো। যাওয়ার সময় ধুপ করে আরেকবার সালাম করতে পরে যেতো। আবার বিকেলের দাওয়াত দিয়ে বিদায় জানাতাম। কি যে ভালো লাগতো।
মা গুলো আসতো পরে। ডোরভিওয়ার দিয়ে দেখে বাড়ির লোকজন বলতো "যাও, তোমার গেস্ট আসছে" ।
বুয়ারা এসে নানা রকম খোজ নিতো।
"আপা, মাথায় শ্যাম্পু লাগাইবেন আজকা? তেল দিয়া দেই তাইলে?"
যখন দেখতো গোসল সারা। আফসোস করে বলতো, "আরেকটু আগে আইলাম না কেন! ইত্যাদি ইত্যাদি...ব হু কিছু."
টেবিলে বসে একসাথে খেতাম। এদিক ওদিক থেকে এ ও খুব মজা পেতো।
মনে পড়ছে আমার স্পেশাল গেস্টদের।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০০৭ রাত ১২:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




