somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

করিডোরে রাত

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেকটা ঝোঁকের মাথায় হয়ত চলে এসেছিলাম শাহবাগ। প্রকৃতপক্ষে মনের যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অবস্থা হয়ত ছিলনা তখন। অথবা প্রকৃতি নিজে নিখুঁত পরিকল্পনা করে আমাকে ডেকে এনেছিল। কে জানে! এতো ভণিতা করার অর্থ এই নয় যে আমি এখানে নতুন আসলাম। এটা আমার বিগত পাঁচ বছরের নিবাস। ঈদের আগের দিন পুরো শহরের মতো শাহবাগের ভিড় ও কিছুটা পাতলা হয়ে এসেছিল, যদিও সম্পূর্ণ শূন্য বা ফাঁকা বলতে যা বোঝায় তা নয়। অনেকগুলো বড় বড় হাসপাতাল এখানে। হাসপাতাল এলাকা কখনোই ফাঁকা হয়না। তবে আমার ব্লক ফাঁকা হয়ে যায়। আমি পৌছালাম আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে। এরমধ্যে ঝড়ো বাতাস আর একপশলা বৃষ্টি এসে ঢাকার রেকর্ড পরিমাণ তাপমাত্রাকে কিছুটা কমাল। সন্ধ্যার দিকে আলো যখন প্রায় নিভু নিভু ইলেকট্রিসিটি হঠাৎ করেই চলে গেলো কয়েক ঘন্টার জন্য। আমি প্রথমবারের মতো এক ধরনের শূন্যতা টের পেলাম৷ শুধু মানসিক শূন্যতা নয় সাথে একধরনের বস্তুজগতের শূন্যতাও। যখন কোন জনাকীর্ণ ভবন হুট করে ফাঁকা হয়ে যায় তখন যে শূন্যতা তৈরি হয় তার ভার অনেক। শূন্যের ও অসহনীয় ভার থাকতে পারে। চেনা পৃথিবী অচেনা হয়ে যাওয়ার বোধ নিজের অস্তিত্বকে সংকটে ফেলতে পারে। ফ্রেডরিক নীটশে বলেছিলেন- "If you look enough into the void, the void begins to look back through you"। উনি কি অর্থে বলেছিলেন জানিনা। তবে শূন্যতা যে সত্যিই ফিরে তাকাতে পারে এবং সত্তাকে ছিন্নভিন্ন করতে পারে তা টের পেলাম আজকে। ভিতরের শূন্যতা বাহিরের শূন্যতার সাথে একত্রে Symphony of void এর মতোন বাজতে লাগল।
ইলেক্ট্রিসিটি এতো দেরি করেনা আসতে সাধারণত। এরই মধ্যে অন্ধকার গুটিগুটি পায়ে গ্রাস করে নিল পুরো ব্লক। যখন কোথাও কোন মানুষ থাকেনা সেখানে হয়ত আস্তে আস্তে জেগে উঠে জড় পৃথিবী। দেয়ালের দীর্ঘ ছায়া থেকে শুরু করে পর্দার মৃদু কম্পন সবাই জীবন্ত হয়ে যেন শূন্যতাকে পূরণ করতে চায়। এই অভিজ্ঞতা নতুন নয়। বহুদূর থেকে এম্বুলেন্সের বাঁশি বাজল। আমি অন্ধকার হাতড়ে ট্রাউজার পড়ে ঘর থেকে বের হলাম। ওই দরকারি সময়ে মোবাইলের চার্জ শেষ। দীর্ঘদিনের চেনা গলিপথ সিড়ি আমাকে বিভ্রান্ত করলনা। মিনিট দুয়েকের মধ্যে হাজির হলাম শাহবাগ মোড়ে। আহা, কি শান্তি! এ ব্লকের ভিতরে থাকা চাপ ধরা ভাবটা আর নেই। আমাদের দালানে বিড়ালের রাজত্ব। ঈদের ছুটিতে ওরা অনাহারে থাকবে এইভেবে কয়েক পিস চিকেন কিনলাম ওদের জন্য। এর মধ্যে বাহির থেকেই টের পেলাম আমাদের দালানে ইলেকট্রিসিটি চলে এসেছে।

আমার রুম ছয় তলায়। পাঁচ তলায় আসাদুল্লাহ খান থাকে। আমি ওকে মির্জা গালিব নামে ডাকি। পাঁচ তলার দুইটা বিড়ালকে দেখলাম ছয় তলার সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে অদ্ভুতভাবে উঁকিঝুকি মারছে। ওদের এলাকা ভাগ করা আছে। এক এলাকার বিড়াল আরেক এলাকায় ঢুকলে সংঘাত অনিবার্য। ওদের কিছু খাবার দিয়ে প্রত্যেক ফ্লোরে উঁকি দিলাম, মানুষ ও ছিলনা, বিড়াল ও ছিলনা। সব সুনসান। বিড়ালেরা চালাক প্রাণি। যেদিকে খাবার পাওয়া যাচ্ছে সেদিকে গিয়েছে সম্ভবত। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর হাল ছেড়ে দিয়ে রুমে চলে আসলাম। আমার রুম নাম্বার ৬১৩। শিক্ষাজীবনের সাথে এই সংখ্যার কাকতালীয় মিল রয়েছে। ক্লাস ফোরে রোল ছয়, ফাইভে এক আবার সিক্সে তিন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্রমিক নং পেয়েছিলাম তেরো। সংখ্যা এবং নামের পাজল আমার সাথে চিরকাল হয়। তাতে মজাই পাই অবশ্য। মন ভালো ছিলনা, ভাবলাম ঘুমিয়ে পড়ি, কিন্তু ঘুম ও আসছিলনা। একবার ভাবলাম সিডেটিভ নিয়ে চেষ্টা করি মন টানলনা। টেবিল থেকে একটা না পড়া বই টেনে নিলাম, নাম- "An introduction to the psychology of dreaming"। বাইবেলে ড্রিমে নিয়ে কি ঘটনা লিখা আছে সেটার বর্ণনা সবে পড়া শুরু করেছি, হঠাৎ করিডোরে পায়ের শব্দ। ত্রস্ত পদক্ষেপে কে যেন হেঁটে গেলো! আমাদের ফ্লোরটা লম্বাটে, এক মাথায় সিঁড়ির মুখে কিছুটা প্রশস্ত জায়গা। পাকিস্তান আমলের মোজাইক করা সিড়ি অজগরেরে মতো পেঁচিয়ে উঠেছে। এখানে বাহির থেকে অনেকেই আসে। ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবেই নিলাম। কিছুক্ষণ পরও পায়ের শব্দ কমছেনা। মনে হয় কেউ যেন একটানা হেঁটেই যাচ্ছিল। এবারে কৌতূহল বাড়ল, আমি সন্তর্পণে দরোজা খুলে উঁকি দিলাম। যেহেতু একাই আছি হোস্টেলে বাকি সবাই ঈদের ছুটিতে, চোর আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না। নাহ! কেউ নাই কোথাও! এমনো হতে পারে বিড়াল যাওয়া আসা করছে। ব্যাপারটা গায়ে মাখালাম না। দরোজা বন্ধ করে ফিরে আসতেই আবার হাঁটাচলা শুরু! এবার আগের চেয়েও বেশি মাত্রায়। সাথে ফিসফাস শব্দ। কখনো মনে হচ্ছিল আমার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয় একদল ফিসফিস করছে। তারা হাঁটতে হাঁটতে আমার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এবার অনেক বেশি সতর্ক হয়ে দরোজা খুললাম। কোথাও কিছু চোখে পড়লো না। ফ্লোরের সবগুলো আলো জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য সুইচ অন করলাম। আলো জ্বলল না। অবাক হলাম না কারণ ছুটির সময় এসব হাওয়া হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা এখানে। দরোজা লক করে বিড়ালদের জন্য কেনা খাবার হাতে নিয়ে পাঁচতলার সিড়ির দিকে আগালাম।

করিডোরের একমাত্র অক্ষত আলোর উৎসের নীচ দিয়ে সিড়িটা নেমে গিয়েছে। এই ফ্লোরের বিড়ালটা ওখানে গুটিসুটি মেরে উঁকি দিচ্ছে। অথচ ফ্লোরে ওর জন্য খাবার রেখেছিলাম সেগুলোতে মুখ ও দেয়নি। আমি ওকে খাবারটা দেখালাম। ও তবুও ছয়তলায় উঠলো না। এতোক্ষণে ওর আচরণে কেমন যেন খটকা লাগল। এই হোস্টেলের বিড়ালগুলি সব মানুষঘেঁষা, খাবারের গন্ধ পেলেই রুমের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। সিড়িতে গিয়ে ফ্রাইটা দিতেই মুখে নিয়ে পাঁচতলার দিকে ছুটে পালালো সে। আমি পুরোটা করিডোর বেশ কয়েকবার হাঁটলাম, শব্দের কোন উৎস পেলাম না। তবে ফ্লোরের বাতাসে কেমন যেন গুমোট ভাব, আর অনেকদিনের পুরানো কাপড় ট্রাংক বা আলমারি থেকে বের করলে যেমন একটা গন্ধ থাকে এরকম লাগছিল। শ্বাস নিতে গিয়ে বুকটা কিছুটা ভার লাগছিল, আমার মাথা ধরে গেলো। ভাবলাম বাহিরে ঝড় হয়েছে কিছুক্ষণ আগে কিন্তু করিডোরে গরম হাওয়া আটকে আছে তাই হয়ত এমন লাগছিল! করিডোরের মাথায় সিঁড়ির সামনে ওই গুমোট ভাবটা ছিলনা। সত্যি কথা বলতে ওখানে দাঁড়ালে একটা স্বোয়াস্তিও কাজ করছিল। ব্যাপারটা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার করিডোরের পুরোটা দৈর্ঘ্য হেঁটে আসলাম। প্রতিবারই একইরকম অনুভূতি হলো। মনে হচ্ছিল বাকি করিডোর থেকে ওইটুকুন জায়গা আলাদা। একটা আপাত ব্যাখ্যা দাড় করালাম যে ওখানে একমাত্র একটি বৈদ্যুতিক বাল্বের আলো ছিল আর সামনের বড় প্রশস্ত খোলা জায়গা দিয়ে বাতাসের প্রবাহ হচ্ছিল। তাই হয়ত গুমোট ভাবটা ছিলোনা। কার্ল সাগান লিখেছিলেন- “The candle flame gutters. Its little pool of light trembles. Darkness gathers. The demons begin to stir।“। কথাগুলো মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকল। তিনি অজ্ঞানতার কথা বলেছিলেন হয়ত। ভাবলাম অজ্ঞানতার জন্ম কি এরকম অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে হয়? বিপদসংকুল পৃথিবীতে ভয়াবহ অন্ধকারের মধ্যে নিঃসঙ্গ আমাদের পূর্বপুরুষদের ও কি এমন অভিজ্ঞতা হতো!

আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে রুমে ফিরলাম। আবার মনে হলো হাঁটা চলা শুরু হলো করিডোরে। আমার দরোজার খুব কাছেই যেন শব্দগুলো এগিয়ে আসছিল। আমি এইবার কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। ভাবলাম বোকামি হলো কিনা এই ফ্লোরে থাকাটা। মনের মধ্যে মিসির আলি উঁকি দিলেন যেন। পৃথিবীর সমস্ত অদ্ভুত ঘটনাবলীর জন্ম আসলে মনোস্তাত্ত্বিক! এটা ভাবতে ভাবতে দরোজায় নক! আমার এক সহকর্মী কিভাবে যেন খবর পেয়েছে আমি ছুটির মধ্যে এখানে এসেছি, তাই দেখা করতে এসেছে। আনুমানিক দশটার দিকে ওর সাথে নীচে নেমে চা খেতে খেতে ভাবছিলাম কি হতে পারে এই ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা! হতে পারে বাতাসের চাপের তারতম্যের কারণে হওয়া শব্দ আমার মন এভাবে ব্যাখ্যা করেছে। যেহেতু বিকালে ঝড় হয়েছিল আর ভিতরের বাতাসের প্রবাহের সুযোগ কম তারতম্য হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আবার এমনো হতে পারে ব্যস্ত শাহবাগ মোড় থেকে শব্দ করিডোরে প্রতিধ্বনিত হয়ত কোনভাবে আমার রুমে পৌছাচ্ছে। এটাও হতে পারে কিছুই আসলে নয় পুরোটা ইমাজারি তৈরি হচ্ছে আমার মনের ভিতর। যেহেতু আশেপাশে মানুষ নেই সেই কল্পনা রিয়েলিটি দিয়ে ডিসকনফার্মড হচ্ছেনা। সহকর্মী কিছুক্ষণ গল্প করল, আমিও আনমনে হু হা করে রুমের দিকে রওনা দিলাম।
পথিমধ্যে মির্জা গালিবের সাথে দেখা। সেও আমার সাথে আমার রুমের দিকে হাঁটা দিল। কোরিডোরে ঢোকার মুখে ইলেক্ট্রিসিটির মেইন সুইচের লোহার বাক্সটা হা করে খুলে আছে। আমি যখন বের হলাম তখন এরকম দেখিনি। গালিব লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো। ও চলে গেলে আমি হাত মুখ ধুয়ে রুমে আসতে গিয়ে দেখি বাক্সটার দরোজা খোলা ঠিক আগের মতোই। বাক্সটা বেশ বড়ো সাইজের লোহার তৈরি। আমি গিয়ে দরোজাটা নাড়াচাড়া করে দেখলাম। একবার বন্ধ করলে খোলাটা বেশ কঠিন। জ্যাম হয়ে থাকে এতো জোরে যে শক্ত বাতাসেও খোলার কথা নয়, উপরন্তু তখন একটুও বাতাস ছিলনা। মনের মধ্যে হিমু ও মিসির আলি যেন একসাথে দাঁড়িয়ে গেলেন, আমি মাঝখানে কিছুক্ষণ হতভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে শেষমেশ মিসির আলির পক্ষই নিলাম। মনকে বোঝালাম মেকানিকাল চাপের কারণেই খুলে যাচ্ছে বারবার।
রাত সাড়ে এগারোটার দিকে প্রথমে খুব আস্তে আস্তে পরে বেশ জোরেই নুপূর পড়া পায়ের হাটার শব্দ পাওয়া গেল। সাথে যেন রেশমি পোশাকের খসখসে শব্দ। খুব দ্রুত কারা যেন হেঁটে যাচ্ছিল। হালকা মেয়েলি কন্ঠও শুনতে পাচ্ছিলাম মনে হয়। আমার কল্পনা কিনা জানিনা! দুই একবার যেন ভারি বুটের শব্দও পাওয়া গেলো। মেটালিক কিছুর ঝনঝনানি শব্দ হয়েই থেমে গেলো! আমার বাস্তবতা বোধ বা রিয়েলিটি যেন ধাক্কা খেল প্রচন্ড! আচ্ছা ষাটের দশকের হোটেল শাহবাগ কি জেগে উঠল অথবা নবাবী আমলের ইশরাত মঞ্জিল! মিসির আলি বাস্তবের চরিত্র হয়ে এখানে উপস্থিত থাকলে দরোজা খুলে নিশ্চিত হতেন যা হচ্ছে তা কি হ্যালুসিনেশন নাকি স্রেফ কল্পনা! আমার এখন একটু ভয় ভয় লাগছে৷ মনে হচ্ছে দেয়ালের ওপারেই বয়ে চলা আরেক রিয়েলিটিকে বিরক্ত করাটা হয়ত বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা। কোথায় যেন পড়েছিলাম - There is a thin silver line between sanity and insanity, এখানে ব্যাপারটা কি এমন হচ্ছিল? নাকি একইসাথে বহু প্যারালাল ওয়ার্ল্ড বা রিয়েলিটি প্রবাহমান, দুই বাস্তবতার মধ্যে ফারাক এখন কেবল আমার রুমের দেয়ালটা। নুপূরের শব্দের সাথে আরো অনেক পায়ের শব্দ বাড়ছে, অনেকটা জোর কদমে চলা মিছিলের মতোন! কেন জানি মনে হচ্ছে পায়ের শব্দগুলি আমার রুমের সামনে এসে জড়ো হচ্ছে।

সত্যি বলতে আমার ভয় হচ্ছে। হাত পা কিছুটা অবশ লাগছে। কি হবে যদি শব্দগুলি আটকানো দরোজার এইপাশে চলে আসে! মিসির আলি থাকলে নির্বিকার চিত্তে চায়ে চুমুক দিয়ে বলতেন- "শুনুন মিস্টার, আপনি আগে থেকেই এখানের কিছু ইতিহাস জানতেন। আপনার জানা ছিল এটার আগের নাম ইশরাত মঞ্জিল, এখানে নাচতে আসতেন পিয়ারী বাঈ, আবেদী বাঈ। সেগুলো আপনার আনকনসাশ মাইন্ডে ছিল। তার সাথে কল্পনাকে মিশিয়ে শক্তিশালী একটা ইমাজারি বা কল্পজগৎ তৈরি করে ফেলেছিলেন। আপনার সম্প্রতি মন ভালো ছিলনা বা চাপে ছিলেন, তাই আনকনসাশ মাইন্ড একটা প্যারালাল রিয়েলিটি তৈরি করার চেষ্টা করেছে হয়ত। সাথে এই জনমানবশূন্য হোস্টেল ও নিজস্ব স্ট্রেস আপনাকে ডিসোসিয়েশনে ফেলে দিয়েছিল হয়ত!" আমি জানি উনি এটাই বলতেন।
যাই হোক ওইরকম শব্দের মিছিল ঘনীভূত হতে শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে মনে হলো দরোজায় তীব্র জোরে একটা আঘাত হয়ে একটা অদ্ভুত বাতাসের প্রবাহ যেন কাঁচের ভাঙা জানালায় ঝনঝনাত শব্দে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো! একই সাথে নীচের রাস্তায় সারিবদ্ধ ভাবে পার হয়ে গেলো একসারি মালবাহী লরি। এরকম লরির সারি রস্তার পিচ ঘষে পার হলে ভুমিকম্পের মতো কাঁপে এই পুরানো দালান! হতে পারে অদ্ভুত মানসিক অবস্থায় এই বাস্তব ঘটনাকে অবাস্তব লাগছিল! কাকতালীয় ভাবে তখন সেই মধ্যরাতে বাসা থেকে ফোন আসল আর দরোজায় নক করলো মির্জা গালিব। ভাই আছেন? ভাই ঘুমান? তার উপস্থিতির সাথে যেন সব উধাও! কে বলবে এতো অদ্ভুত মিছিল হচ্ছিল একটু আগেও। যাই হোক, দরোজা খুলতেই সে জিজ্ঞাসা করল- "ভাই বারবার মেইন সুইচের বাক্স খুলছে কে এই করিডোরে? চোর নাতো? সাবধানে থাকেন।'
আমি হালকা গলায় উত্তর দিলাম- "হতে পারে! তাও হতে পারে!"
(ঘটনাঃ কল্পিত)


ছবিঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×