somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন‌্যরকম জন্মদিন !!

০৬ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বি‌য়ের পর এটা ছিল আমার প্রথম জন্মদিন। তাই সুখ এবং দুঃখ দুএর ১টা মিশ্র অনুভূতি ছিল। বাবা-মা, ভাই-বোন থেকে দূরে প্রথম জন্মদিন করলাম(। ৫ ভাই-বোনের সবার ছোট আমি, তাই বরাবর ই আবদারটা বেশী ছিলো আমার। রাত ১২টা বাজার আগেই শুরু হয়ে যেত ওদের আয়োজন, তাও আবার আমায় লুকিয়ে করতে চেষ্টা করতো,কিন্তু আমি ঠিক ই টের পেয়ে যেতাম। বড় ভাবী গান জানতো,তার সুরেলা কন্ঠের সাথে যুক্ত হতো অনেকগুলো বেসুরো গলা :D। সবচেয়ে বেশী মজা লাগতো ভাই এর ২ বিচ্ছুর সাথে যুদ্ধ করতে। ওদের সাথে জিত্তে না পেরে প্রতিবার ই কেক কাটতে হতো ওদের সাথে নিয়ে। না না ভুল বল্ লাম ওরাই কাটতো, আমি কেবল পাশে থাকতাম। পোকা ধরা সব কটা দাত বের করে এমন ভাবে ছবি তুলতো দেখে মনে হতো আমিই ঐখানে অবান্চিত:-*। ভাইয়ারা,আপুরা,ভাবী এটা সেটা অনেক গিফ্ট দিতো। আব্বা থেকে টাকা আদায় করতাম বন্ধুদের খাওয়াবো বলে। পরের দিন আম্মা পোলাও -মুরগী রান্না করতো, সবাই মিলে মজা করতাম।

আর এবার !!?? বাসার সবাই ফোন দিলো .... ছোটো আপু ১টা sms দিলো "..... 1st birthday without me.. " পড়ে মনটা অসম্ভব খারাপ হয়েছিলো, মনে হয়েছিলো মানুষ কেন বড় হয় ?? মনের অজান্তেই দুচোখের পাতা ভিজে আসছিলো। :((

জন্মদিনের আগের রাতে একটা বিয়ের দাওয়াত ছিলো, তো রেডী হচ্ছি বিয়েতে যাওয়ার জন্য, বাইরে অনেক রৃষ্টি হচ্ছে এর মাঝেই দেখি ওর কোন বন্ধু ফোন দিলো - আমায় বললো আসছি। এই আসি বলে সাহেবের আর খবর নাই , মা এসে বললেন কোথায় গেলো ? মনে মনে তাকে অনেক ঝাড়ি দিলাম - আমার জন্মদিনের কথা মনে থাকেনা বন্ধুদের নিয়ে আদিখ্যেতা!! এর মাঝেই কাকভেজা হয়ে এলো ,বেছে বেছে এই সময় ই কারেন্ট ও চলে গেল। যাই হোক অন্ধকারে কোনোরকমে বের হলাম আমরা। অনেক কাহিনী করে অবশেষে বিয়ে খেয়ে বাসায় এলাম। আর ভাবছিলাম হায়রে সাহেব কোথাকার কোন আত্মীয়ের বিয়ে তে গেলা এতো কাহিনী করে আর নিজের বৌয়ের জন্মদিনের কথা মনে থাকে না X((?যাক অবশেষে বাসায় এলাম। এ বাড়ির কেউ আমার জন্মদিনের কথা জানবেনা বলে ঈদের দিন আমার ছোট বোনটিকে বলেছিলাম জানো আমার জন্মদিন না এই সামনেই, সেও মনে রাখলোনা। হায়রে দুঃখ।

রুমে এসে দেখি অনেক গুলো লাল গোলাপ:D


গুনে গুনে আমার বয়স এর সমান !!?? কিন্তু সে জানলো কেমন করে আমার real age??

সাথে ১টা ম্যারুন ড্রেস। অভিমানের বরফ যখন শীতল পানি তখন ই দেখি দরজায় হালকা টোকা পড়লো। দরজা খুলতেই আপুনি বললো HAPPY BIRTHDAY !!! তারমানে হলো সেও মনে রেখেছে, টেনে নিয়ে গেল ডাইনিং রুমে..দেখি আমার নতুন বাবা-মা কেক এর সামনে হাসি-মুখে দাড়িয়ে আছেন। একসাথে কেক কাটলাম। ছোট আপুনি আমার মুখের অনেকটাই decorate করে দিলো কেক দিয়ে। এরই মাঝে বন্ধুদের ফোন, ছোট ভাইটির sms--আমায় ফেলে দারুন মজা হচ্ছে না? দেবরটির কথা মনে রাখেননি, আমি আসি তখন কিন্তু খাওয়াতে হবে আপুনি।.. সব মিলিয়ে ভালোই কাটলো। আমি ভাগ্যবতী, খুব ভালো পরিবার আল্লাহ আমায় দিয়েছেন।

পরদিন অফিসে বসে বিচ্ছু সর্দারের ফোন পেলাম- ফুপ্পি আমি ১২টা বাজতে বাজতে ঘুমিয়ে গেছি,এখন wish করলে কি হবে?? ইশ বিচ্ছুগুলোকে অনেক মিস করি। অফিস শেষে আমাদের বাসায় গেলাম, আম্মা-আব্বার সাথে দেখা হওয়ার পরই মনে হলো এইতো আমার আপন ভূবন। বড় ভাইয়া,ছোট ভাইয়া,ভাবী,ছোট ছোট ফড়িংদের সবাইকে দেখে মনটা ভরে গেল। আমার টুংকু-আব্বু টা আধো-বুলিতে আমায় wish করলো। সে প্রায় সময় তার ফুপ্পাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। জিগ্গেস করলে বলে - তোমরা জানোনাতো ও থাকলে ফুপ্পি চলে যাবে। যতখ্ন বাসায় থাকি আমার ১টা আংগুল ধরে রাখবে, চলে আসলে অনেক কান্না করে। ফেরার বেলায় মনে হল, আগামী জন্মদিনে আমি আমার আপন ভূবনে এভাবে আনন্দ করতে পারবোতো? ছোট ছোট ফড়িংদের আমার কথা মনে থাকবেতো , এই এত্তোটা ভালোবাসবেতো, ওদের short-memory তে আমার স্মৃতি থাকবেতো? আপন পিতৃলয়ে অতিথি হয়ে যাবনাতো? এই এত্তো ভালো যে বাসি তাদের তারা আমায় মনে রাখবেতো?? এখন বুঝি বিয়ের পরে ভাবী কেন এতো মনমরা হয়ে থাকতো। এরই নাম বোধহয় জীবান। আল্লাহ নারীদের অনেক শক্ত করে বানিয়েছেন, নাহলে এতো আপন আলয় ছেড়ে থাকা বড়ই কঠিন হতো।

কেমন যেন বিষন্ণ্যতার গান বেজে চলেছে মনে...বেজেই চলেছে... :|
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:১৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×