পশু-পাখির ভাষা জানা নেই আমাদের, ঠিকঠাক বুঝতেও পারি না তাদের মনের কথা; তবু, তাতানার এসব পোষা প্রাণীর কথা ভেবে কিংবা এগুলোর মতো করে কারো যদি মন খারাপ হয়ে যায়, যে বা যারা ওকে চেনেন ছোটবেলা থেকে, তাদের জন্য পৃথিবী জয়ের মহাসাফল্যের পর, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নির্বাচিত হওয়ার পরও তাতানা জানিয়েছেন_ তিনি তার সময়গুলো তার প্রিয় পোষা প্রাণী ও তার নিজ দেশের মানুষের কাছাকাছি থেকে কাটাতে চান।
তাতানার এ সাফল্য আসে শনিবার রাতে। এদিন পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশোতে বসেছিল মিস ওয়ার্ল্ড 2006-এর ফাইনাল। জাঁকঝমকপূর্ণ আয়োজনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিচারকদের পাশাপাশি দুই শতাধিক দেশের দর্শক টিভিতে সরাসরি ফাইনালে প্রতিযোগিদের পারফর্মেন্স দেখে ই-মেইল ও এসএমএসের মাধ্যমে ভোট দিতে পারায়। দর্শকদের ভোটের সঙ্গে বিচারক হিসেবে দায়িত্বপালন করা মিস ওয়ার্ল্ড আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও বিচারকদের প্রধান জুলিয়া মার্লি, 1989-এ হওয়া পোল্যান্ডের একমাত্র মিস ওয়ার্ল্ড আনিতা ক্রেগলিকা, প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও টিভি উপস্থাপক ডেনিস ভ্যান অটন, ভারতের চিত্র পরিচালক করন জোহর, মাল্টি অলিম্পিক স্বর্ণপদকজয়ী ব্রিটিশ অভিনেত্রী ডেম কেলি হোলমাস, মিস ওয়ার্ল্ড আয়োজক কমিটির আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রদূত ক্রিস নাইড়ু, আইরিশ কিংবদন্তি লুইস ওয়ালস, সঙ্গীত পরিচালক মাইক ডিঙ্ন এবং পোয়ের্তো রিকান মিস ওয়ার্ল্ড ও এবারের প্রতিযোগিদের বীচওয়ার ডিজাইনার ওইলনেলিয়া ফর্সিথ প্রদত্ত ভোটের গড় হিসেবে বিভিন্ন দেশের 103 জন সুন্দরীতমাকে হারিয়ে মিস ওয়ার্ল্ড 2006 হয়েছেন চেক রিপাবলিকান তাতানা কুচারোভা।
মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার পথে প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্যায়ে তাতানা পাড়ি দিয়েছেন নানা বন্ধুর পথ। মাঝে মধ্যে মেজাজ বিগড়ে গেলেও, কখনো-সখনো মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলেও ভেঙ্গে পড়েননি তিনি। মিস চেক রিপাবলিকান হওয়ার পরই তিনি নিজের মনের রাজত্বে নিজেকে বিশ্ব সুন্দরী হিসেবে বসিয়ে সারা পৃথিবী জয়ের স্বপ্ন লালন করে এসেছেন। ওয়াশোর কংগ্রেস হল থেকে সারা পৃথিবীর মানুষকে যখন জানানো হলো মিস ওয়ার্ল্ড হিসেবে তার নাম, এমন আবেগী মুহূর্তে আপ্লুত হলেও হতবাক হননি তিনি। লম্বা সাদা পোশাক আর আনন্দাশ্রুতে আবৃত হয়ে হলরুমের 2500 দর্শক আর টিভির সামনে বসা অগুনতি দর্শকের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দিয়েছেন হাওয়াই-চুমু।
18 বছর বয়সী তাতানা জন্মেছেন ত্রনাভায়। অপকনো শহরের আলো-হাওয়ায় বেড়ে উঠেছেন তিনি। এখন পড়াশোনা করছেন উচ্চ বিদ্যালয় পর্যায়ে। বিশ্ব সুন্দরী হওয়ার উচ্ছ্বাসে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে নারাজ তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি পাস করে তারপরই মডেলিং নিয়ে ভাববেন। ভবিষ্যতে সফল মডেল হওয়ার পাশাপাশি দাম্পত্য জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখতেও তার ভালো লাগে। সুযোগ পেলেই সুখি দাম্পত্যের স্বপ্নে বিভোর হন তিনি।
সবসময় আত্মবিশ্বাসী থাকাকে জীবনের প্রধান পাঠ হিসেবে মেনে নেওয়া তাতানা কুচারোভা ভীষণ খেলাধূলা পাগল একটা মেয়ে। টেনিস, ভলিবল, ঘোড়দৌড় আর আইস স্কেটিং হলে তো কথাই নেই, সম্ভব হলে ছুটে যান মাঠে, নতুবা বসে পড়েন টিভির সামনে। খাবার হিসেবে চিকেন পেলে লোভ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। তবে পোষা প্রাণীগুলো সঙ্গ ছাড়া কিছুতেই মন বসতে চায় না তার।
রুদ্র আরিফ : অক্টোবর 2006]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



