সুধী,
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। এর মধ্যে আপনাদেরকে একটা খবর দিতে চাই; যা মন্দ বা ভালো কোন ভাগেই পড়ে না বরং বিরক্তি উদ্রেককারী ভাগে পড়ে। আজ সকালে জানতে পারলাম যে জাতীয় পরিচয়পত্র এখন পিতৃ-মাতৃহীন হয়ে পড়েছে। কেন না, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল যে আইনের বা অধ্যাদেশের বলয়ে এটিকে লালিত-পালিত করা হয়েছে সেই অধ্যাদেশটি বর্তমান সরকার বাতিল করে দিয়েছে, তার মানে হল জাতীয় পরিচয়পত্র তার জাত হারিয়ে এখন সরকার ও জনগণ সকলের অচ্ছুত হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণ এখন আর এটাকে পকেটে রাখবে না আর স্বরাষ্ট্র মণ্ত্রণালয় এটাকে আর তার অধীনে রাখবত চাচ্ছে না। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রটি কার খালু?
যতটুকু মনে পড়ে, ২০০৮ সালের ১৩ মে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন ও বিতরণের জন্য জাতীয় নিবন্ধর কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা ও সংস্লিষ্ট বিষয়ে আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অধ্যাদেশ-২০০৮ করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি চিহ্নিত ও নির্মূলকরণ, অপরাধ দমনসহ আরও নানাবিধ কাজে ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন ছবিসহ ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। পরিচয়পত্র দেওয়ার একটি স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। তৎকালীন সময়ে মোট ৮ কোটি ১০ লক্ষ ভোটারের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। এজন্য তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কয়েকশ কোটি টাকা বরাদ্দ করে এবং ঘটা করে এই প্রজেক্ট শুরু করে। বর্তমান সরকার আইনি বৈধতা না দেওয়ায় অধ্যাদেশটি অকার্যকর হয়ে গেছে এবং এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের নতুন কোন উদ্যোগ ও নেই। তাহলে এই পরিচয়পত্রের বৈধতা কি? কেনই বা নিজের অতগুলো মূল্যবান সময় নষ্ট করলাম , কেনই বা কষ্ট সয়ে লাইনে দাঁড়ালাম এই তথাকথিত মহা মূল্যবান সম্পদ অর্জনের জন্য, কেনই বা আইনের সব ঘাট বিচার বিবেচনা না করে এই বোঝা তৈরি করা হলো কার স্বার্থে? আইর প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের মতে জাতীয় পরিচয়পত্র রাখা বাধ্যতামুলক নয় তবে নিরাপত্তার স্বার্থে এর ব্যবহার প্রয়োজন; তাহলে ব্যাংক হিসাব খোলা, পাসপোর্ট সংগ্রহ, বিভিন্ন দূতাবাসে ভিসার আবেদনকরাসহ এরকম ২২ টি বিভিন্ন কাজে এই বেআইনি পরিচয়পত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাই বা কি ? তবে কি এই পরিচয়পত্র যাদের নেই তারা অনিরাপদ? এখনো এই রকম কাজগুলোতে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার অলিখিতভাবে বাধ্যতামুলক হয়ে আছে। এ সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শুনেছি জাতীয় নির্বাচন কমিশান নাকি এখন এটিকে ভোটার পরিচয়পত্র হিসেবে তাদের আওতায় নেয়ার চেষ্টা করছে এবং সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র যাতে বাধ্যতামুলক না করা হয় সে জন্য তারা সরকারকে এরমধ্যে একটি চিঠিও দিয়েছে। যাক একদিকে অন্ততঃ রক্ষে যে যাদের এটি আছে তাদের আর নতুন করে ভোটার আইডি তৈরি করতে হবে না যদি সব কিছুই ঠিকঠাকমত চলে।
সবঠিক থাকুক, ঠিকমত চলুক সেই আশায় রইলাম....

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





