somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে~শেষভাগ ❑ রাজীব নুর

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পূর্বের...
বাংলা সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে❑রাজীব নুর


~ ৫১। 'উত্তর পুরুষ' লেখক- রিজিয়া রহমান। রিজিয়া রহমানের কোন বই পড়ি নাই আগে। আর মহিলা রাইটার বলে খুব একটা উৎসাহও ছিল না পড়ার। অসাধারণ বই এই "উত্তর পুরুষ"! আমাদের বাংলা সাহিত্যের প্রথম সারির এ্যাসেট। উপন্যাসের শুরুতেই বঙ্গোপসাগরকে যে উপমায় বাঁধেন লেখিকা তা পড়ে তার আঙুল ছুঁয়ে আসতে ইচ্ছে করে। সারাটা উপন্যাসে উপমার সার্থক ব্যবহার পাঠককে যেমন সম্মোহিত করে তেমনি উপন্যাসটিকে করে তুলে অনেক বেশি বাঙ্ময়।
.
৫২। 'কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ' লেখক- সুস্মিতা বন্দোপাধ্যায়। এ উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে আফগানিস্তানে তালেবানদের সাথে রাব্বানির যুদ্ধকালীন সময়ে ধর্মের নামে কায়েম হওয়া সন্ত্রাসের রাজত্ব, মেয়েদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে অন্ধাকারে পাঠিয়ে দেয়া, কোরআন শরীফের মনগড়া অপবেখ্যা, সংকীর্ণতা এবং সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে। বাস্তবতা হলো লেখিকা তাঁর ”কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ” উপন্যাসে নিজের জীবনের কাহিনী তুলে ধরেছেন। কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ” এর কাহিনীর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে, কলকাতার ব্রাক্ষ্মন পরিবারের একটি মেয়ে বিয়ে করে আফগাস্তানের কাবুলের গজনি এলাকার এক মুসলিম যুবককে। স্বামীর সাথেই পাড়ি জমান শ্বশুর বাড়ি আফগানিস্তান। সেখানে যাওয়ার পর ওই বাঙালি বউয়ের উপলব্দিতে হলো এরা শুধু ধর্মান্ধ নয়, এদের মানসিকতাও রুচিহীন। পরদেশী একজন বাঙালি নারীকে ছেলের বউ হিসাবে তারা কিভাবে গ্রহন করলো, তাদের দর্শন, তাদের দেশে নারীর মর্যাদা, পারিবারিক সম্পর্ক, দাম্পত্য জীবনসহ খুটিনাটি নানা বিষয় গল্পে গল্পে তুলে ধরা হয়েছে উপন্যাসে।
.
৫৩। 'পথের পাঁচালি' লেখক- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। উপন্যাসের গল্প এ রকম- "গ্রাম্য গরীব একটি পরিবারের সুখ দুঃখের মাঝে দুটি চঞ্চল শিশুর বেড়ে ওঠা । নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান অপু ও দূর্গা । বাবা হরিহর রায়, মা সর্বজয়া, আর অপু-দূর্গার বৃদ্ধা ফুফু ইন্দিরা ঠাকুরকে নিয়ে পরিবারটির সদস্য সংখ্যা পাঁচ । হরিহরের পেশা পুরোহীতগিরী করা । সামান্য আয় । কোন রকমে সংসার চলে । টানাটানির সংসারে বিধবা বোন ইন্দিরা ঠাকুর বাড়তি বোঝা । হরিহর কিছু না বললেও স্ত্রী সর্বজয়ার সাথে প্রায়ই ছোটখাট ঝগড়া হয়ে যায় । অপু বড় বোন দূর্গার সাথে বনে বাঁদাড়ে ঘুরে বেড়ায় । মিষ্টিওয়ালা, বায়োস্কোপ, আর ট্রেনের পিছনে ছুটতে ছুটতেই দিন কেটে যায় । সংসার, দারিদ্রতা কোন কিছুরই চিন্তা নেই ওদের । এদিকে অপু, দূর্গা খেলতে গিয়ে হঠাৎ একদিন বনের মধ্যে বৃদ্ধা ইন্দিরা ঠাকুরকে মৃত আবিস্কার করে। মর্মান্তিক দৃশ্য । বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরে আক্রান্ত হয় দূর্গা । চিকিৎসার অভাবে বাড়তে থাকে জ্বর। গভীর রাত । বাইরে প্রচন্ড ঝড়-বাতাস । ঘরদোর উড়িয়ে নেয়ার পালা । সেই রাতেই দূর্গা মারা যায় । হরিহর ফিরে আসে তারও কিছুদিন পর । সবার জন্য অনেক কিছু কিনে এনেছে । শাড়ি হাতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সর্বজয়া ।বুঝতে বাকি থাকে না হরিহরের । পাথরের মত নিশ্চল হয়ে যায় । ছবির সবচেয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য অবলোকন করে দর্শক । এত কষ্ট! এত সংগ্রাম! তবু পিছু ছাড়ে না দারিদ্র । সব ছেড়েছুড়ে হরিহর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গরুর গাড়িতে চড়ে অজানার উদ্দেশ্যে ........।
.
৫৪। 'আমি বীরাঙ্গনা বলছি' লেখক- নীলিমা ইব্রাহীম। খুব সহজ ভাষায় সাতটি মেয়ের বীরত্বের কাহিনী এতে লেখা আছে। একশো ষাট পৃষ্ঠার এই বইটি পড়তে খুব বেশী সময় লাগার কথা নয়। জীবন যুদ্ধে যারা শত কষ্টের মাঝেও হেরে যায় নি শুধু তাদের গল্প দিয়েই বইটি সাজিয়েছেন লেখিকা। আমরা যারা সহজে হতাশ হই, হাল ছেড়ে দেই, নৈরাশ্যের অন্ধকারে হারিয়ে যেয়ে মুক্তি খুঁজি তারা যেনো যুদ্ধ করার, লড়ার মনোবল রাখি।
.
৫৫। 'পুত্র পিতাকে' লেখক- চানক্য সেন। 'পুত্র পিতাকে' উপন্যাসে পুত্র পিতাকে লিখে, 'তোমরা আমাদের সরিয়ে দাও, দূরে রেখে দাও, তোমাদের বড়দের দুনিয়ার বাইরে, কেননা সে নিষিদ্ধ দুনিয়া মিথ্যা, অর্থ-মিথ্যা, চাতুরি-চালাকি, পারস্পরিক প্রবঞ্চনা প্রতারণার ধনদৌলত ভরা তোমাদের দুনিয়া আমদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে তোমরা কী চেষ্টাই না করো। অথচ, বাবা, তোমরা জান না যে আমরা তোমাদের অনেক কিছুই জেনে ফেলি, দেখে ফেলি, শুনে ফেলি। আমাদের হিসাব গোড়া থেকেই গোলমাল হয়ে যায়' (পৃষ্ঠা-১২, সপ্তম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন প্রকাশনী, কলকাতা)
.
৫৬। 'দোজখনামা' লেখক-রবিশংকর বল। রবিশংকর এর জন্ম ১৯৬২। বিজ্ঞানের স্নাতক। একটা বাংলা দৈনিকের সাংবাদিক। বাংলা ভাষার প্রথম সারির কথা সাহিত্যিক। ২০১১ সালে "দোজখনামা" উপন্যাসের জন্য বঙ্কিম স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন।
.
৫৭। 'যদ্যপি আমার গুরু' লেখক- আহমদ ছফা। যদ্যপি আমার গুরু গ্রন্থটি আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে সব্যসাচী লেখক অহমদ ছফার একটি গভীর ও সরস রচনা। দীর্ঘদিনের সান্নিধ্যের কারণে ব্যক্তিগত দূর্বলতা থেকে অধ্যাপক রাজ্জাক হয়তো লেখকের বিশেষ কিছু অনুভূতি দখল করেছেন তবে তাঁর প্রতি দেশ ও বিদেশের অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তির শ্রদ্ধার বর্হিপ্রকাশই প্রমান করে, তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থেই একজন কি;বদন্তী। অধ্যাপক রাজ্জাককে নিয়ে রচিত এই গ্রন্থটিতে সেই সময়ের সমাজ, সমকালীন বিশ্ব ও রাজনীতির যে বিষয়গুলো উম্মোচিত হয়েছে তা এক কথায় অসাধারণ একটি সামাজিক দলিল। ইতিহাসের সহজ প্রকাশ।
.
৫৮। 'চতুষ্পাঠী' লেখক-স্বপ্নময় চক্রবর্তী। প্রথম উপন্যাস 'চতুষ্পাঠী' প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পূজা সংখ্যায় (১৯৯২) । প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশিষ্ট লেখকররূপে চিন্হিত হয়েছিলেন।
.
৫৯। 'নামগন্ধ' লেখক- মলয় রায়চৌধুরী। ঠাস বুনন, অভিনব বর্ণনা এবং নানা জনের অজানা হরেক তথ্যা ভরা নামগন্ধ নামের নাতবৃহৎ উপন্যাসটি স্রেফ ভিন্ন নয়, বিশিষ্ট মেজাজের, যা সদ্য-অতীত জটিল সময়ের এক বিচিত্র অভিলেখ। 'নামগন্ধ' সাহিত্যের বাজারি বিপণনে বিমোহিত বহু পাঠাকের কাছেও সুপাঠ্য এক অনন্য উপহার।
.
৬০। 'বিষাদবৃক্ষ' লেখক- মিহির সেনগুপ্ত। উপন্যাসটিতে হিন্দু মুসলিম সমস্যাটাই শুধু আসেনি, এসেছে দেশ ভাগ, তার ইতিহাস, তৎকালীন রাজনৈতিক সামাজিক মনস্তত্ব, জীবনসংগ্রাম, পাশাপাশি স্বপ্ন দ্রষ্টা কিছূ মানুষের উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা, মোট কথা, একটি ভুখন্ডের ইতিহাস।
.

~ ৬১। 'অলৌকিক নয়,লৌকিক' লেখক- প্রবীর ঘোষ। আপনাদের অনুরোধ করবো- আপনারা অবশ্যই- অলৌকিক নয় লৌকিক ১ম-৫ম খন্ড পড়বেন ।আমি জোর দিয়ে বলতে পারি বইগুলো পড়ে আপনি যা পাবেন তা হয়ত সারা জীবনেও পাবেননা এবং আমার কথা সারা জীবন মনে রাখা লাগবে । বইগুলো পড়লে ৯৯% অলৌকিক বিশ্বাস দূর হয়ে যাবে ।
.
৬২। জীবনানন্দ দাশের কবিতা সমগ্র। সাহিত্যের আলোচনায়, অথবা যে-কোনো শিল্পের ক্ষেত্রে শিল্পীর জীবনী জানবার প্রয়োজন আছে কি না তাই নিয়ে গত শতকে তর্ক তুলেছিলেন প্রকরণবাদী সাহিত্য-ভাবুকেরা। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, কবিতা সমগ্র পড়ার আগে- জীবনানন্দ দাশ এর জীবনী ভাল করে পরে নিবেন।
.
৬৩। 'চরবিনাশকাল'- আবু বকর সিদ্দিকের ছোটগল্প। অথবা এটা ভাল না লাগলে রশীদ কবিমের ' মায়ের কাছে যাচ্ছি'' পড়ে দেখতে পারেন।
.
৬৪। 'গল্পমালা' লেখক- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। গ্রহ-নক্ষত্রের কথা, পশুপাখি ও গাছপালার কথা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা, রামায়ণ-মহাভারত ও পুরাণের গল্প, দেশ-বিদেশের নতুন ও পুরোনো কাহিনি, ইতিহাস ও ভূগোল, ছড়া-কবিতা-গান ইত্যাদি রচনা করেছেন। নিজের বইয়ের ছবি নিজেই আঁকতেন। স্কুলজীবনেই ছবি আঁকায় দক্ষতা অর্জন করেন। কলেজে পড়াকালে শেখেন ফটোগ্রাফি। গান-বাজনায়ও আগ্রহ ছিল।
.
৬৫। 'নিমন্ত্রন' লেখক- তসলিমা নাসরিন। নিমন্ত্রন পড়ে তো আমি হতবাক!!! মেয়েরা সুদর্শন ছেলে দেখে প্রেমে পড়ে এবং সেই ছেলের দ্বারা প্রতারিত হয়ে তার বন্ধু-বান্ধব‘দের দ্বারা ধর্ষিত হয়। এই লেখিকার বই পড়ার আগে তার জীবনী ভাল করে পরে নিবেন। তসলিমা নাসরিন নিজেই নিজের সম্পর্কে সহজ সরল ভাষায় লিখেছেন। খুবই সাহসী মহিলা। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। আমার ক্ষমতা থাকলে আমি তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনতাম।
.
৬৬। 'প্রথম প্রতিশ্রুত', 'সুবর্নলতা' ও 'বকুল কথা' লেখক- আশাপূর্না দেবী। প্রথম প্রতিশ্রুতি বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর একটি বিখ্যাত উপন্যাস। এই উপন্যাসের জন্য তিনি ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন । পরবর্তী কালে এই উপন্যাসটি অবলম্বনে একটি বাংলা সিনেমাও তৈরি হয় । এটি একটি উপন্যাস ত্রয়ীর প্রথম উপন্যাস । পরবর্তী দুটি উপন্যাসের নাম হল সুবর্ণলতা এবং বকুলকথা।
সত্যবতী - সুবর্ণলতা - বকুল : তিন প্রজন্ম। সত্যবতীর অগ্নিসম বিদ্রোহিনী রূপ থেকে যাত্রা শুরু করে সুবর্ণলতার চাপা আকাঙ্ক্ষার পথ ধরে বকুলের সময়ে সনাতনী যুগের অবসান প্রাঙ্গনে এসে সমাপ্ত আশাপূর্ণা দেবীর এই ট্রিলজি উপন্যাস। এত অপূর্ব লেখা, শেষ হওয়ার পরেও কিছুক্ষণ বইটা হাতে নিয়ে বসে ছিলাম। শেষ হয়েও শেষ না হওয়ার এক অবর্ণনীয় অনুভূতি রেখে গেলো।
.
৬৭। 'ফেলুদা সমগ্র' লেখক- সত্যজিৎ রায়। ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প "ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি" প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ফেলুদার প্রধান সহকারী তাঁর খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি (ছদ্মনাম জটায়ু)।
.
৬৮। 'কুবের সাধু খাঁর বিষয় আশয়' লেখক- শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়। 'এ হাউস ফর মি. বিশ্বাস' এবং 'কুবেরের বিষয় আশয়' উপন্যাস দুটির কাঠামোও প্রায় একই রকম। উপন্যাস দুটির ঘটনা একটানা বর্ণিত হয়নি। বরং দুটি উপন্যাসেই চরিত্রগুলো, নায়ককে সামনে রেখে নানা পর্ববিভক্ত হয়ে মূল কাহিনীকে টেনে নিয়ে গেছে।
.
৬৯। 'বসুধারা' লেখক-তিলোত্তমা মজুমদার। লেখক ‘বসুধারা’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। এই উপন্যাসে পশ্চিমবঙ্গে নকশাল আন্দোলনের পরবর্তী সময়ের ছবি দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, পাঠকের মননকে সমৃদ্ধি দান করবে এই বই।
.
৭০। 'দুচাকায় দুনিয়া' লেখক- বিমল মুখার্জী। ভূ-পর্যটক বিমল মুখার্জীর সাইকেলে চড়ে বিশ্ব-ভ্রমণের অমর আখ্যান। ২৩ বছরের ভারতীয় এক তরুন ১৯২৬ সালে একটা সাইকেল আর সামান্য কিছু টাকা নিয়ে পৃথিবী ভ্রমণে বেড়িয়ে পরেন। পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করে ভারত ফিরে আসেন ১৯৩৭ সালে। পথে কত রহস্য কত রোমাঞ্চ, এমনকি তরুন হিটলারের সাথে দেখা পর্যন্ত। সে সব শুনুন তারই বয়ানে।
.

~ ৭১। 'কলকাতার কাছেই', 'পৌষ ফাগুনের পালা' এবং 'উপকন্ঠ' লেখক- গজেন্দ্র কুমার মিত্র। এই তিনটি খন্ড আমার অনেক বেশি প্রিয়। আসলে এটি ত্রিপিটক উপন্যাস, খাস ইংরেজিতে যাকে বলে 'ট্রিলজি'। একটা কিনলে বা পড়লে পরবর্তী বাকী দু'টির জন্য হাঁসফাস করবেন! একেকটি বই যেন একেকটি নেশা। পৌষ ফাগুনের পালা শেষেরটি পড়ার পরেও দুঃখ হয় তারপর কি ...।
কথাসাহিত্যিক গজেন্দ্র কুমার মিত্রের সর্বোত্তম সাহিত্যসৃষ্টি। উনবিংশ শতাবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর শুরু -এই রকম সময়ের পটভূমিতে এই ট্রিলজি কাহিনীর সূত্রপাত। কুলীন ব্রাহ্মণের বিধবা পত্নী রাসমণি ও তার তিনি কন্যার জীবন নিয়ে এই উপন্যাস-ত্রয়ীর কাহিনী শুরু। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মধ্যমা শ্যামাকে কেন্দ্র করে কাহিনী আবর্তিত হয়েছে, তবু রাসমণির তিন কন্যার ক্রমবর্ধমান পরিবারের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার নরনারী বিভিন্ন ঘটনাসূত্রে কাহিনীতে অসাধারণ বৈচিত্রের সৃষ্টি করেছে এবং শেষ পর্যন্ত কাহিনীর অখন্ডতা লাভ করেছে। সংস্কারে সংস্কৃতিতে উন্নত অথবা নিদারুণ দারিদ্র ক্লিষ্ট মধ্যবিত্ত সমাজের এই সব মানুষের ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থ-সংকীর্ণতা, আশা-নিরাশা, ছোট বড়, সুখ দুঃখ. বিপদ আপদ সবকিছুর মধ্যদিয়েও তাদের অপরাজেয় জীবনাকোঙ্ক্ষার এবং জীবনযুদ্ধের এক নিটোল অনবদ্য কাহিনী শুনিয়েছেন লেখক যা আমরা আগে শুনিনি, আজকাল শোনা যায় না, অদূর ভবিষ্যতে শুনব কিনা সন্দেহ।
অনেকেই হয়তো গজেন্দ্র মিত্রকে সেভাবে জানেন না। পড়ুন এবং তারপর জানবেন।
.
৭২। 'আমার প্রিয় ভৌতিক গল্প'- হুমায়ূন আহমেদ সম্পাদিত। মোট চব্বিশটি গল্প আছে। দারুন সব গল্প, ভূতের গল্প। জনপ্রিয় সব লেখকদের- চমৎকার সব গল্প। পড়ুন। আমার বিশ্বাস আপনাদের অনেক ভাল লাগবে।
.
৭৩। 'অসাধু সিদ্ধার্থ' লেখক- জগদীশ গুপ্ত। উপন্যাসের নটবর দলছুট চরিত্র। সে 'লঘু-গুরুর' বিশ্বম্ভর কিংবা পরিতোষের মতো 'স্বভাবসিদ্ধ ইতর' বা 'কোমরবাঁধা শয়তান' নয়; শয়তানিতে তার দক্ষতা প্রশ্নাতীত, কিন্তু উপন্যাসের আখ্যানে এটি অতীত, তার মানুষ আর প্রেমিক হয়ে ওঠার সাধনাটুকুই তার সপ্রাণ বর্তমান। এই বর্তমানটুকু মনে রাখলে তার বাইরের এবং ভেতরের মানুষটিকে চেনা যায় সহজেই। তার পরিণতির বেদনাটুকুও বোঝা যায়।
জগদীশ গুপ্তের উপন্যাসে সব সময়ই দ্রুত ঘটে যায় সব ঘটনা।
.
৭৪। 'সেয়ানা' লেখক- সত্যেন সেন। সত্যেন সেন জেল প্রকোষ্ঠে বসেও তিনি লিখেছেন নিরন্তর। এক সময় জেলখানায় পত্রিকা দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে বাইরের খবর তিনি জানতেই পারতেন না। তখন সময় কাটবে কি করে ? এটা ব্রিটিশ যুগের কথা। ও সময় অবশ্য পত্রিকা বন্ধ করে বাইবেল দেয়া শুরু হলো। তাতেই সন্তুষ্ট হলেন সত্যেন সেন। তিনি বইবেলের কাহিনী নিয়ে লিখলেন দু”খানা উপন্যাস- অভিশপ্ত নগরী ও পাপের সন্তান।
সেয়ানা নামের উপন্যাসটির নায়ক জেল খানারই হয়তো কেউ। তিনি লিখতেন একদম ভেতর থেকে। তাই তার লেখা মানুষকে স্পর্শ না করে পারে না। সত্যেন দা” জেলে বসেও উবু হয়ে নিরন্তর লিখে চলতেন। জেলখানায় তো চেয়ার টেবিল ছিলো না, তাতে সত্যেনদার কিছু যেত আসতো না। সিমেন্টের ফ্লোরে দিনের পর দিন উবু হয়ে বসে লিখতে লিখতে তার কনুইয়ের চমড়া ইস্পাতের মতো হয়ে গিয়েছিলো।
.
৭৫। কাশবনের কন্যা' লেখক- শামসুদ্দীন আবুল কালাম। শামসুদ্দীন আবুল কালামের দু’টি উপন্যাস সম্পর্কে হাসান আজিজুল হকের মন্তব্য। তিনি লিখেছেন, “... শামসুদ্দীন আবুল কালামের ‘কাশবনের কন্যা’ এবং ‘কাঞ্চনমালা’য় সমসাময়িক রাজনীতির কোনো ছাপ নেই... সময়ের কোনো বোধ নেই... ‘কাশবনের কন্যা’ ও ‘কাঞ্চনমালা’য় নরনারীর প্রেমই তো আসল বিষয়। তবু বলতে হয়, শামসুদ্দীন আবুল কালাম একটি স্থূল ও পুরুষ্টু কাহিনী ছাড়া আর কিছুই আমাদের দেন না। বরিশাল অঞ্চলের গ্রামজীবনকে কেন্দ্র করে ‘কাশবনের কন্যা’ উপন্যাসটি যেভাবে এগিয়ে চলে তা পাঁচশো বছর আগেকার গ্রাম হতে পারতো এবং যে-কোনো গ্রাম্য পুঁথির বিবরণ হলে তাতে কোনো বাধা ছিলো না। আধুনিক বাংলা উপন্যাসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে উপন্যাস দুটি যে কাহিনী আমাদের উপহার দেয়, তার মধ্যে চিরায়ত বাংলাদেশের কোনো সত্যও ধরা পড়ে না। শ্লথ গদ্যে লেখা এই কাহিনী দুটিতে এক ধরনের আন্তরিকতা ছাড়া আর কিছু তেমন ধরা পড়ে না।...”
.
৭৬। 'জলরাক্ষস' লেখক- আবুবকর সিদ্দিক। লেখক আবু বকর সিদ্দিকীর ”জলরাক্ষস” বইটি প্রকাশিত হবার পর এরশাদের সামরিক-শাহী লেখকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। লেখককে সংক্ষিপ্ত বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তার প্রায় বিশ বছর পর এই লেখকেরই কন্যা বিদিশা সেই বিশ্ববেহায়ার অঙ্কশায়িনী হয়েছে। চেতনা বোধহয় প্রজন্মান্তরে বাধাহীনভাবে প্রবাহিত হয় না। নয়ত পিতাকে নির্যাতন আর অপমানকারীকে আলিঙ্গন করতে কন্যার বাধে না কেন?
আবুবকর সিদ্দিক কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রে কট্টর বস্তুবাদী, সমাজনিষ্ঠ শিল্পী। আর বামপন্থী রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে জীবনকে সমীক্ষা করার একটা স্বতঃস্ফূর্ত প্রবণতা এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়। জীবনের একটা প্রধান সময় তাঁর অতিবাহিত হয়েছে বাম চিন্তাদর্শের ঘনিষ্ঠ সানি্নধ্যে। সেখান থেকে যে গভীর অভিজ্ঞতা ও প্রেরণার শাঁস তুলে এনেছেন তা যেমন বাস্তববাদী, তেমনি অকৃত্রিম।
৭৭। 'বিলোরিস' লেখক- অঞ্জলি লাহিড়ী। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন কমিউনিষ্ট বিপ্লবী। তেভাগা আন্দোলনের সক্রীয় কর্মী। বাংলা দেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়েও অসম মেঘালয়ে সক্রীয় স্বেচ্ছাসেবী, জীবনের পঞ্চাশ বছর পার করে লিখতে শুরু করেন অঞ্জলি লাহিড়ি। ক্রমেই অসমের বাংলা সাহিত্যের অভিবাবক স্বরূপা হয়ে উঠেন। নিজে অবিভক্ত কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য ছিলেন যখন বিয়ে করেছিলেন তখনকার আর সি পি আই দলের আরেক কর্মী প্রয়াত নিরেন লাহিড়িকে।
.
৭৮। 'বাওয়ালী উপাখ্যান' লেখক- হুমায়ূন রহমান। নাম কি তোমার?
করিম বাওয়ালী।- ভয়ার্তকন্ঠ বাওয়ালীর
কুঠির খাতায় নাম লিখিয়েছিলে?-সক্রোধ দৃষ্টি রেনী সাহেবের।
না হুজুর!
আর কোন প্রশ্ন করার প্রয়োজন মনে করলো না রেনী সাহেব, শপাং শপাং চাবুকের আঘাতে ককিয়ে উঠলেন করিম বাওয়ালি, মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন তিনি।
বাবার এই অবস্থা দেখে গোলপাতার আড়ালে আর লুকিয়ে থাকতে পারলোনা কিশোরী কমল। সুন্দরবনের বাঘের হাত থেকে বাঁচার জন্য যে বর্শাটা সে সাথে রাখতো সবসময়ে, সেটাই সর্বশক্তি দিয়ে আকড়ে ধরে লাফিয়ে এসে পরলো রেনীর সামনে। এই আতর্কিত হামলার জন্য রেনী প্রস্তুত ছিল না, কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই কমল বর্শাটা ছুড়ে দিল রেনীর বুকের দিকে লক্ষ করে। তবে রেনী ভাগ্যভাল যে সেটা বুকে না লেগে বাহুতে লাগলো, যন্ত্রনায় চিৎকার করে উঠলো সে।
অতো কিছু খেয়াল করার সময় নেই কমলের; সে তার বাবা দুজনে মিলে রেনীর চাবুকটা দিয়েই পেচিয়ে তাকে বেধে রেখে তার ঘোড়ায় করে গহীন অরন্যের দিকে হারিয়ে গেলেন।
তারপর? ... বইটা পড়ুন। পুরান বইয়ের দোকানে গিয়ে দেখুন বইটা খুঁজে পান কিনা।
.
৭৯। 'মোহিনীর থান' লেখক- নাসিমা আনিস। কবি ও সাহিত্যিকদের কলমে আরেক উপেক্ষিত হচ্ছে হিজড়া সম্প্রদায়। তাদের সুখ-দুঃখ নিয়ে কেউ মাথা ঘামাননি; ব্যতিক্রম নাসিমা আনিসের সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘মোহিনীর থান’।
.
৮০। 'কুহেলিকা' ও 'মুত্যুক্ষুধা' লেখক- কাজী নজরুল ইসলাম। "কুহেলিকা" নজরুলের শ্রেষ্ট একটি সৃষ্টি। এই উপন্যাস পাঠকদের মন ছুঁয়ে যাবে। কুহেলিকা'র মূল চরিত্র "জাহাঙ্গির" পার্শ্ব চরিত্র আরো আছে। তবে আমাকে ভবিয়েছে জাহাঙ্গিরের জন্ম সংক্রান্ত বিদ্রোহের বর্ণনা। বন্ধু হারুণের সাথে হারুণের বাড়ীর দিকে যাত্রা। হারুণের পাগলী মায়ের অদ্ভুত আচরণ। তাঁর অন্ধ পিতা, খোন্দকার সাহেব সহ তাঁর দুই বোনের চরিত্র, সাথে উপন্যাসের সংলাপ গুলো গভীর মনস্তাত্বি ভাব বহন করে।
মৃত্যুক্ষুধা প্রথম মহাযুদ্ধ পরবর্তীকালের রচনা। এ উপন্যাসের ভাষা একান্তই নজরুলীয় বৈশিষ্ট্যসমৃদ্ধ। তিনি চরিত্রের স্বাভাবিকতার স্বার্থে যার যার মুখে যে সংলাপ প্রযোজ্য তাই রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। উপন্যাসের প্রথমাংশ কৃষ্ণনগরে এবং শেষাংশ কলকাতায় রচিত। কৃষ্ণনগরে অবস্থানকালে নিদারুণ দুঃখ-কষ্ট এবং দুঃসাধ্য কৃচ্ছ্রসাধন ছিল নজরুলের নিত্য জীবনযাত্রার অঙ্গ। তাই দারিদ্রের চিত্র, সাম্য ও বিপ্লবীচেতনা এ উপন্যাসের রূপকল্পের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।
.

~ ৮১। 'কারাগারে রাত দিন' লেখক- জয়নাব আল গাজালী। একটি ইসলামী আন্দোলন কি পরিমান জুলুম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ধৈর্য্য ও বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় সেই অবিস্মরণীয় সত্য ঘটনা জানতে বইটি পড়ুন।
.
৮২। মন প্রকৌশল স্বপ্ন অনুপ্রেরণা আর জীবন গড়ার ফরমুলা - রাগিব হাসান । বইটা পড়ে এক ধরনের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। এতে স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে, ঘুরে দাঁড়ানো মানুষদের কথা বলা হয়েছে। অসংখ্য উদাহরণ দেয়া হয়েছে, অসংখ্য গল্প বলা হয়েছে।
আমাদের তরুণদের কিছু বাঁধাধরা সমস্যা আছে সেই সমস্যাগুলোর কথা বলা আছে। হতাশ হয়ে যাওয়া সেই তরুণদের কেউ না কেউ নিশ্চয়ই এই বইটা পড়ে এক ধরনের শক্তি পাবে, এক ধরনের সাহস পাবে, নিজের ভেতর অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবে।
.
৮৩। আরজ আলি মাতুব্বর এর রচনাসমগ্র- প্রথাবিরোধী ধর্মদর্শনের প্রাচীন ধারাবাহিকতার বাংলাদেশী রূপকার হলেন আরজ আলি মাতুব্বর। তিনি মনে করতেন পশু যেমন সামান্য জ্ঞান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে ধর্মবাদী ব্যক্তিগণও তেমনি সামান্য জ্ঞান নিয়েই জীবন কাটিয়ে দেয়। মেধার বিকাশ, মুক্তচিন্তা, মুক্তজ্ঞান, বিজ্ঞান চেতনা ইত্যাদি মুক্তবৌদ্ধিক মনোভঙ্গির বিপক্ষে ধর্মপ্রবণ ব্যক্তিগণ দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে। তাই ধর্ম অনেকাংশেই মানুষের মানবিক বিকাশকে সমর্থন করে না; মুক্তবুদ্ধি, জ্ঞানচর্চা, উদারতা, সহানুভূতিশীলতা, মানবিকতা প্রভৃতির প্রসার-প্রচারকে অনেকাংশেই সীমিত করে তোলে। তিনি জানেন সমাজের যথার্থ মুক্তি ঘটে একমাত্র বস্তুবাদী দর্শনের চর্চাতেই। নিজের প্রান্তিক জীবনের সাধারণ কয়েকটি ঘটনাতেই তিনি বুঝে নিয়েছেন তার ও তার সমাজের আচরিত ধর্মের স্বরূপ। ক্রমাগত গ্রন্থ পাঠে বুঝে নিয়েছেন এর কারণাবলী। এই অন্ধকারাচ্ছন্নতার বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল সুস্পষ্ট। তাই তিনি অনবরত প্রশ্নবাণে দগ্ধ করেছেন তথাকথিত সমাজপিতা ও তাদের আচরিত-প্রচারিত ধর্ম ও দর্শনকে।
.
৮৪। 'বিবর্তনের পথ ধরে' লেখক- বন্যা আহমেদ। বিবর্তন নিয়ে বাংলা ভাষায় এখন পর্যন্ত রচিত নিঃসন্দেহে সবচেয়ে শক্তিশালী বই এটি। না পড়লে চোখ বুজে বলে দেয়া যায় আপনি ঠকলেন।
.
৮৫। 'যে গল্পের শেষ নেই' লেখক- দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। "যে গল্পের শেষ নেই" বইটি ১৯৫১ সালে প্রকাশিত হয়। প্রাক মানুষ, মানুষ, পরিবার, সমজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব রাজনীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তর মোটা মোটা বই লেখা হয়েছে, রয়েছে অতি মূল্যবান রেফারেন্স বই কিংবা এনসাইক্লোপেডিয়া। কিন্তু এই বইটিতে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে তুলে ধরা হয়েছে শুন্য থেকে শুরু করে মানুষের উদ্ভব এবং আজকের সমাজ ব্যবস্থা পর্যন্তসকল বৈশিষ্টকে। এই বইটিতে দ্বান্দ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশকে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। একেবারে গল্পের মত করে শুধুই মানুষের কথা বইটির প্রতিটি পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হোক না তা বহু বছরের আগের কথা, কথাগুলো তো আজও সত্য।
.
৮৬। 'ভোলগা থেকে গঙ্গা' লেখক- রাহুল সাংকৃত্যায়ন। 'ভোল্গা সে গঙ্গা' গ্রন্থখানি ২০টি ছোটো গল্পের সমাহার। এই ছোটো ছোটো গল্প বা কাহিনীগুলো নিছক কল্পনা প্রসূত নয়, সমাজবিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ের দিকে লক্ষ্য রেখে গল্পগুলো ধারাবাহিক ভাবে রচিত হয়েছে। ইতিহাস আর সমাজবিজ্ঞান এর মূলতত্ত্বকে সর্বত্রই মেনে চলা হয়েছে। প্রায় ৬০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে ভোলগা নদীর তীরে যে মানবগোষ্ঠী পরিবার স্থাপন করেছিলো, তাদেরই আবাস ও জীবন নিয়ে রচিত হয়েছে প্রথম গল্পটির দৃশ্যপট। ক্রমে সেই মানুষ মধ্য ভলগাতটে অগ্রসর হয়ে মধ্য এশিয়া অতিক্রম করেছিলো। উত্তর কুরু, তাজিকিস্তান পেরিয়ে একসময় সমগ্র গান্ধার এলাকা জুড়ে বসতি স্থাপন করেছিলো এই আর্যরা। ইতিহাসের এই ধারায় বিংশ শতাব্দীতে পৌছে সমাপ্ত হয়েছে গ্রন্থটির আখ্যান। এই ধারাবাহিকতা নিয়েই রচিত হয়েছে প্রতিটি গল্পের দৃশ্যপট।
.
৮৭। 'নারী, সৃষ্টি ও বিজ্ঞান' লেখক- পূরবী বসু। পূরবী বসুর দুটি পরিচয়- কথাশিল্পী এবং পুষ্টিবিজ্ঞানী। উভয়ক্ষেত্রে তাঁর পরিচিতের পরিধি সুবিস্তৃত। বিজ্ঞানজগতে পূরবী বসু একটি সম্মানিত নাম, বাংলাসাহিত্যে তাঁর কলমের খ্যাতি সর্বত্র। তাঁর প্রতিভার এই দ্বিমুখী ধারা এই গ্রন্থটির মধ্যে এক অপূর্ব মোহনায় মিশেছে- বইটি পড়ে এই মনে হয়েছে আমার।
.
৮৮। 'ঈশ্বরের বাগান' লেখক-অতীন বন্দোপাধ্যায়। অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তার জন্ম ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশের ঢাকায়। ‘ঈশ্বরের বাগান’ উপন্যাসটিতে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বাস্তু পরিবার, তাদের দৈনন্দিন যন্ত্রণা, চারিত্রিক বৈপরীত্য ও দ্বন্দ্বময় সংঘাতের ছবি এঁকেছেন। লেখকের জাদুকরী কলমের টানে উপন্যাসটি অনন্যতার দাবি রাখে। বিদগ্ধ পাঠকমণ্ডলীর সংগ্রহশালায় এ উপন্যাস অপরিহার্য।
.
৮৯। 'আয়না' লেখক- আবুল মনসুর আহমদ। আয়না গল্পগ্রন্থের প্রথম গল্প 'হুজুর কেবলা'র শুরুটি এরকম_ এমদাদ তার সবগুলি বিলাতি ফিনফিনে ধূতি, সিল্কের জামা পোড়াইয়া ফেলিল; ফ্লেক্সের ব্রাউন রঙের পাম্পশুগুলি বাবুর্চিখানার বঁটি দিয়া কোপাইয়া ইলশা-কাটা করিল। চশমা ও রিস্টওয়াচ মাটিতে আছড়াইয়া ভাঙ্গিয়া ফেলিল; ক্ষুর স্ট্রপ, শেভিংস্টিক ও ব্রাশ অনেকখানি রাস্তা হাঁটিয়া নদীতে ফেলিয়া দিয়া আসিল; বিলাসিতার মস্তকে কঠোর পদাঘাত করিয়া পাথর বসানো সোনার আংটিটা এক অন্ধ ভিক্ষুককে দান করিয়া এবং টুথক্রীম ও টুথব্রাশ পায়খানার টবের মধ্যে ফেলিয়া দিয়া দাঁত ঘষিতে লাগিল।
.
৯০। 'ত্রিপিটক' –গৌতমবুদ্ধ। ত্রিপিটক বৌদ্ধ ধর্মীয় পালি গ্রন্থের নাম। বুদ্বের দর্শন এবং উপদেশের সংকলন। বুদ্ধের দর্শনের প্রধান অংশ হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়। বাসনা সর্ব দুঃখের মূল। বৌদ্ধমতে সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। এটাকে নির্বাণ বলা হয়।
.

~ ৯১। 'আয়না' লেখক- আবুল মনসুর আহমেদ। তৎকালীন সমাজের কিংবা জাতীয জীবনে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে যেসব অসঙ্গিত লেখককে পীড়া দিয়েছে তাই তিনি তির্যক বাণীভঙ্গিতে লিপিবদ্ধ করেছেন তাঁর কালজয়ী সৃষ্টি আয়না নামক গল্পগ্রন্থে। আবুল মনসুর আহমেদের প্রথম ব্যঙ্গ গল্প সংকলন আয়না। গল্পগুলোর রচনাকাল ১৯২২ সাল থেকে ১৯২৯ সাল অর্থাৎ বিশ শতকের বিশের দশক। গল্পগুলো প্রথম সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। আয়নার উৎসর্গপত্রে আবুল কালাম শামসুদ্দীন-এর প্রতিটি উদ্ধৃতিটি ছিল এরকম: “বন্ধুরা বলেছেন, এই বইয়ে আমি সবাইকে খুব হাসিয়েছি। কিন্তু এ্ই হাসির পেছনে যে কতটা কান্না লুকানো আছে, তা তুমি যেমন জান, তেমন আর কেউ জানে না।”
.
৯২। 'মুক্তচিন্তা' লেখক- রতনতনু ঘোষ একজন প্রাবন্ধিক ও গবেষক। মুক্তমনারা বইটি খুবই পছন্দ করবেন আশা করি।
.
৯৩। 'তিস্তাপারের বৃত্তান্ত' লেখক– দেবেশ রায়। তিস্তাপারের বৃত্তান্ত সমাজবাস্তবতা নির্ভর এক প্রকল্পায়ণ কথাসাহিত্য, যা পরিত্রাণহীন সত্যের দর্শন থেকে নেতিদেশ ও দৈশিকতার দর্শণয়িত পথ অভিসারী। এপিকধর্মী এই উপন্যাসের ক্রমপুষ্টিকরণ যে নির্দিষ্ট টাইম এবং স্পেস থেকে উৎসারিত, তা এক আকাশের হাঁ-মুখ থেকে নেমে আসা নদীবিস্তৃতিকে পুরায়ত জনপদের ঐকান্তিক ইতিহাস বলে দায়ী করে।
.
৯৪। 'উদ্ধারণপুরের ঘাট' লেখক– অবধূত। অবধূত ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক ও তন্ত্রসাধক। তাঁর প্রকৃতনাম দুলালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। জন্ম কলকাতার ভবানীপুরে। পুত্র অমল মুখোপাধ্যায়ের জন্মের পর প্রথমা স্ত্রীর মৃত্যু হলে উজ্জ্বয়িনীর মহাকাল মন্দিরে সন্ন্যাস (অবধূত) গ্রহণ করেন। অবধূত ছদ্মনামে তিনি একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।
.
৯৫। 'বারো ঘর এক উঠোন' লেখক– জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে মনে হয় বারো রকমের গল্পকে তিনি যেন বর্ণিত আখ্যানের মধ্যে অদৃশ্য সুতো দিয়ে জুড়ে দিয়েছেন। মনে হয় উপন্যাসের বর্ণিত আখ্যানের সর্বত্রই, তলে অবতলে গভীরে, ক্রমশই গল্পের সম্মোহনী ছায়া-প্রচ্ছয়া ঘনীভূত হচ্ছে। উপন্যাসের মধ্যে বারবার গল্পশিল্পের অতিরিক্ত এই সংক্রমণ, তার প্রভাব, তার আধিক্য, উপন্যাস রচনার কারুকৃতিকে অনেকাংশেই কিন্তু নষ্ট করে দিয়েছে।
.
৯৬। 'সাদা খাম' লেখক– মতি নন্দী। এই গ্রন্থে ধরা পড়েছে প্রতারণা ও স্বীকারোক্তির এক আশ্চর্য সংঘাত, আর্তনাদের ভেতর রূপান্তরিত মানুষের সংবেদ; যা সংশয় ও ফলশ্রুতির ভেতরে চিরকালীন জিজ্ঞাসা ফেলে রেখে, পাঠককে অনুসন্ধানী করে তোলে।
.
৯৭। 'নুন চা' লেখক– বিমল লামা। বইয়ের ফ্লাপ থেকেঃ ভৌগোলিক তরঙ্গ জমে ছিল পাহাড় হয়ে। তারই খাঁজে খাঁজে নিস্তরঙ্গ জীবনের নুনকথা। টয় ট্রেনর মতো ধারাবাঁধা নিসর্গের ভেতর দিয়ে ওঠা নামা। অপরূপ কিন্তু জীর্ণ। নিরাপদ কিন্তু অস্বাধীন। একথা বুঝতে সময় লাগেনা উরগোনের যখন লাল পতাকার পাশ দিয়ে উঠে এলো সবুজ নিশান। লাল সবুজের দ্বৈরথে তৈরি হল হলুদ শিখা। পুড়তে লাগল ঘরবাড়ি। ক্ষেত গোয়াল। স্মৃতি আর স্বপ্ন। নিসর্গের দাউ দাউ চিতা।
তবু লুকিয়ে ভালো বাসতে ছাড়ে না জুনি। জীবন বাজি রেখে ভালো বাসতে চায় উরগেনকে। জ্বলন্ত চিতার ফাঁকেই খুঁজে নিতে চায় কোনো স্নিগ্ধ কোণ। নিভৃতে শুধু ভালোবাসবে বলে। কিন্তু যেই নিভৃতের খোঁজ মেলার আগেই বুনো মোষের মতো তেড়ে আসে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলে জুনিকে। তার যোনির ভেতর ঢেলে দেয় তপ্ত গরল।
কিন্তু জুনি যেন নিজেকে অভিযোজিত করতে চায় ভালোবাসার সংশ্লেষকের মতো। ভালোবাসতে চায় বহিরাগ গরলকেও। আর সেখানেই শুরু হয় তার সমান্তরাল এক লড়াই। সবার হয়ে কিন্তু একা একা।
রাজনীতির নিশানে যখন আকাশ ঢাকে, জুনি পড়ে থাকে মাটি কামড়ে, পৃথিবীর দিকে পিঠ করে, এগোতে চায় আর এক পৃথিবীর দিকে। পৃথিবীটাকে অবাক করে, হতবাক করে।
.
৯৮। 'গড় শ্রীখন্ড', ও 'রাজনগর' লেখক– অমিয়ভূষণ মজুমদার। অমিয়ভূষণ মজুমদারের প্রথম প্রকাশিত রচনা হল একটি নাটক। প্রথম উপন্যাস গড় শ্রীখণ্ড – ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় সঞ্জয় ভট্টাচার্য সম্পাদিত পূর্বাশা পত্রিকায় ১৩৬০ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ সংখ্যা থেকে। গড় শ্রীখণ্ড আবহমান বাংলার উপন্যাস। ভারত স্বাধীনতার আগে-পরের সময়কালে পদ্মাপাড়ে স্থাপিত এ উপন্যাসের কাহিনী।
.
রাজনগর-এর কাহিনী শেষ ১৮৮৩-তে। নয়নতারাতে নয়নতারাও রাজচন্দ্রের মুহূর্তিক শারিরীক সম্পর্কের ফসল যুবক কুমারনারায়ণকে দিয়ে উপন্যাসটি শেষ করা হয়েছে। মানবমন ও সমাজের বিচিত্র অনালোকিত জগতই তাঁর আরোধ্য। বিশ্বসাহিত্যে সিরিয়াস ধারার একজন বুভুক্ষু পাঠক অমিয়ভূষণ মজুদার তাঁর মনন ও শৈলী দিয়ে সে সকল জগতকেই চিত্রায়িত করেছেন। গত পঞ্চাশ বছরের বাংলা উপন্যাসে তাঁর অমোঘ উপস্থিতি আমাদেরকে নিরন্তর প্রাগ্রসর করেছে।
.
৯৯। 'ক্রান্তিকাল' ও 'কেয়াপাতার নৌকা' লেখক– প্রফুল্ল রায়। ‘"ক্রান্তিকাল" বইটি পড়লে বোঝা যাবে ভারতীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের স্বাধীনতার আকুতি। এই উপন্যাসটি অবলম্বনে ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক শেখর দাস "ক্রান্তিকাল" নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন। যেখানে রূপা গাঙ্গুলী, সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়সহ অনেক বাঘা বাঘা অভিনেতা-অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন।
কেয়াপাতার নৌকো’র পরবর্তী খণ্ড ‘শতধারায় বয়ে যায়’ এবং তারও পরবর্তী খণ্ড ‘উত্তাল সময়ের ইতিকথা’। তিনটি উপন্যাসই আকারে মহাকাব্যিক। অসামান্য ক্ষমতাসম্পন্ন এইঔপন্যাসিক সারা জীবন জুড়ে পুরস্কারও পেয়েছেন প্রচুর।
.
এই লেখকের আরেকটি বইয়ের কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না। তারই রচিত আরো একটি বই ঈশ্বরপুত্র। এই বইটির ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হয়েছে মাইকেল সমরেশ দত্ত নামের এক বিপত্নীক মানুষকে ঘিরে। মাইকেল সমরেশ দত্ত আদর্শহীন মানুষদের মধ্যে বিরলতম চরিত্র। বহুজন হিতায় নিজেকে সপে দিয়েছে সে। বহু দুঃস্থ, সম্বলহীনের পরম আশ্রয় সে। নারী পাচার চক্রের কবল থেকে একটি সরল গ্রাম্য যুবতীকে বাচাতে গিয়ে কোন মূল্য দিতে হয় তাকে তাই নিয়ে এই আশ্চর্য আখ্যান ঈশ্বরপুত্র।
.
১০০। 'মহাস্থবির জাতক' লেখক– প্রেমাঙ্কুর আতর্থী। প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর জন্ম ১৮৯০ সালে। 'মহাস্থবির জাতক'-এর প্রথম খণ্ডের ভূমিকায় 'মহাস্থবির' (প্রেমাঙ্কুর আতর্থী) লিখেছিলেন: "মানুষের জীবনের কাহিনীই সব-চাইতে বিচিত্র উপন্যাস - উপন্যাসের ঘটনা ও চরিত্রের জন্য আশা করি কারও কাছে কোনও জবাবাদিহিতে পড়তে হবে না"। চার-খণ্ডের সম্পূর্ণ বইটি লিখে ও বলে শেষ করতে ওঁর লেগেছিল কুড়ি বছর। চতুর্থ খণ্ড প্রকাশিত হয় প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর মৃত্যুর পরে। এই খণ্ডটি লেখার সময়ে তিনি প্রায় দশ বছর শয্যাশায়ী ছিলেন। কবি উমা দেবীকে মুখে মুখে বলতেন, আর তিনি সেগুলো লিপিবদ্ধ করতেন। চতুর্থ পর্ব-এর নিবেদনে উমা দেবী লিখেছিলেন: "মহাস্থবির জাতকের প্রথম পর্ব যখন লেখা হচ্ছিল, তখন একদিন কথা প্রসঙ্গে (প্রেমাঙ্কুর আতর্থী) বলেছিলেন, যে, পঁচিশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়ের কথাই তিনি লিপিবদ্ধ করবেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই তিনি সে ইচ্ছে ত্যাগ করেন।"
'বাংলা সাহিত্যের যে ১০০টি বই আপনাকে পড়তেই হবে' শেষ হয়ে গেল। মনটা অসম্ভব খারাপ হয়ে গেল। এখন বেশ কিছু ভাল বই এই তালকায় দিতে পারিনি।
চারিদিকে এত্ত এত্ত বইয়ের ছড়াছড়ি যেন বইয়ের মেলা । এত বই কি এক জীবনে পড়া করা সম্ভব ? সম্ভব নয় । এক্ষেত্রে একটি কাজ করা যেতে পারে , প্রখ্যাত লেখকদের সেরা উপন্যাসগুলো পড়া যেতে পারে । আমি এভাবেই পড়ার চেষ্টা করি । আমি এরকম একটি লিস্ট তৈরী করেছি , আমার মতে এগুলি বাংলাসাহিত্যের অবশ্যপাঠ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে পড়বে । অনেক উপন্যাস বাদ পড়তে পারে , আবার অনেক লেখক বাদ পড়তেও পারেন , সেক্ষেত্রে সেটি আমার অজ্ঞতা ধরে নেবেন । একজন লেখকের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস কোনটি এটা নিয়ে মতানৈক্য থাকতে পারে।
.
আশা করি, সত্যিকার পড়ুয়ারা এই বই গুলো পড়েছেন, সব গুলো না পড়া হলেও কিছু কিছু যে পড়েছেন তা আমি জানি। আর যারা পড়েননি তারা আজ থেকেই বই গুলো সংগ্রহ করে পড়তে শুরু করে দেন। ১০০ টা বই শেষ করতে দুই-তিন বছরের মত সময় লাগবে। সবাই ভাল থাকুন।
.
আগামীকাল থেকে, 'ইংরেজি সাহিত্যের যে ১০০টি বই আপনাকে পড়তেই হবে' শুরু করবো। সাথেই থাকুন।

♣বই: একটি সমগ্র পোস্ট♣-আরজু পনি

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (এক)-রাজীব নুর

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (দুই)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (তিন)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (চার)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (পাঁচ)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (ছয়)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (সাত)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (আট)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (নয়)

ইংরেজি সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে (দশ)


♣ অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪'তে সামহোয়্যার ইন ব্লগারদের বই ♣-আরজু পনি

♣ শততম পোস্ট ! !:#P অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫'তে সামহোয়্যার ইন ব্লগারদের বই ♣

♣অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬'তে সামহোয়্যার ইন ব্লগারদের বই ♣

♠অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭: সামহোয়্যারইন ব্লগারদের বই♠

♣ব্লগারদের বই "অপর বাস্তব" (২০০৭ থেকে ২০১২)♣

অমর একুশে বইমেলা ২০১৮ ব্লগারদের প্রকাশিত বইসমূহ -মাহবুবুল আজাদ

প্রিয় বই- নির্বাসন- হুমায়ুন আহমেদ ( প্রিয় লেখকের জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা)- আমি ময়ূরাক্ষী
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১০
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×