somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাপানিজ অ্যানিমেটেড মুভি রিভিউঃ নিনজা স্ক্রল

২৫ শে জুন, ২০১৮ ভোর ৬:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিনজা।
অন্ধকারে লুকায়িত এক সৈন্য সমাজ। রহস্যময় আর মারাত্মক সব প্রাণঘাতী কৌশলে এই আততায়ীরা প্রায় যেকোনো অসম্ভব কাজ করতে পারদর্শী ছিল। নানা রকম অদ্ভুত সব অস্ত্রচালন, সম্মোহন, শরীর পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষমতার পাশাপাশি ছিল তাদের আরো অনেক আশ্চর্যকর অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা। হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস আর রহস্যের আড়ালে চিরদিনের জন্য আত্মগোপন করা এই নিনজাদের সম্পর্কে অনেক অনেক গল্প, লোকগাথা রয়েছে। দস্যু কিংবা মিত্র, যেই ভূমিকাতেই দেখা যায় না কেন, কল্পনার নিনজারা যেন বারংবার ভয়ংকর আর শক্তিধর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমনই নিনজা অধ্যুষিত এক কাল্পনিক মধ্যযুগীয় জাপানকে ঘিরে নিনজা স্ক্রল অ্যানিমের রোমহর্ষক কাহিনী।


জুবেই কিবাগামি, একজন ভবঘুরে দলহীন ভাড়াটে নিনজা। একদিন এক ঝড়ের কবলে পড়ে ক্লান্ত হয়ে জঙ্গলের ভেতরকার এক কুড়ে ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিল। তখন সে দেখলে পেল তার সামনে পাহাড়ের মত বিশাল দেহের অধিকারি এক লোক এসে একটা প্রায় অজ্ঞান একটা মেয়েকে এনে ধর্ষণ করতে যাচ্ছে।
মেয়েটা কাগেরো। সেও একজন নিনজা। তার নিনজা দলের শেষ কুনোইচি। মেয়েটির মিশন ছিল পাশের এক প্লেগে জরাজীর্ণ গ্রামে রোগের আসল উৎস খুঁজে বের করা। কিন্তু কোত্থেকে সেই বিশালকায় মানুষটি এসে তার দলের সবাইকে এক নিমেষে হত্যা করেছে। লোকটার আছে অদ্ভুত এক ক্ষমতা, তার শরীরের চামড়া পাথরের মত শক্ত।


লোকটা এক দস্যু নিনজা দলের সদস্য। ডেভিলস অফ কিমোনো। সেই দলের এক এক জন অমানবিক কিছু ক্ষমতার অধিকারি, যেমন একজনের শরীর থেকে সাপ বেরিয়ে আসে, একজনের আছে শরীরের সাথে বিস্ফোরক মিশিয়ে দেবার ক্ষমতা, আরেকজন মৃত মানুষের দেহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে... এরা সবাই মিলে জাপানের এক সমুদ্রতীরের গ্রামে আক্রমণ করেছে। কেন এবং কি তাদের উদ্দেশ্য- কে জানে…


ভবঘুরে জুবেই কিবাগামির এদের কর্মকাণ্ডে নাক গলানোর একদমই কোনো কারণ থাকার কথা না। কিন্তু তাহলে তো গল্পের শুরুই হবে না। দেখা যাবে না উদ্ভট আর ভয়ংকর সব মারামারি-অ্যাকশন, চমৎকার অ্যানিমেশন ও এমন এক কাহিনী যা কিনা মডার্ন নিনজা গল্পগুলির পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।


প্রায় দুই দশক ধরে অ্যানিমের জগতে নিনজা হিসেবে দেখা গেছে যেই নারুতোকে, নিনজা স্ক্রল অ্যানিমেটি বের না হলে হয়তো সেই নারুতোও এত জনপ্রিয় হয়ে উঠতো না। জাপানি লাইভ অ্যাকশন মুভিগুলোতে নিনজা আর স্যামুরাই যতটা ম্যাচিউর আর গুরুগম্ভীর ভঙ্গিতে ফুটে উঠেছে, নব্বইয়ের আগে অ্যানিমে জগতে ততটা ধরা পরেনি। নিনজা হাত্তরির মত শিশুসুলভ গল্পে অথবা অন্য কোনো গল্পের সাইড ক্যারেকটার হিসেবে নিনজাদের মত কিছু চরিত্রের দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু পুরোপুরি হাইলাইট শিনোবিদের ভাগ্যে তেমনটি জোটে নি।
১৯৯৩ সালে ডাইরেকটর ইয়োশিয়াকি কাওয়াজিরি যদি নিজের সেই নিনজা ফ্যানটাসির স্বাদ পূরণ করার জন্য অ্যাকশন, বডি হরর ও ডার্ক ফ্যান্টাসি মুভি - নিনজা স্ক্রল না নির্মান করতেন, তাহলে মনে হয় জাপানিজ নিনজাকে মেইনস্ট্রিম করতে আরো কয়েকযুগ অপেক্ষা করতে হত।


পশ্চিমে নিনজা টার্টেল আর অ্যাসাসিনদের গল্পে যে জিনিষটার অভাব পরেছিল সেই জিনিষটার ঘাটতি কমিয়ে দিল নিনজা স্ক্রল। যেখানে ডিমন নিনজাদের ওভার দা টপ পাওয়ার আর একটানা অ্যাকশন তো আছেই, আছে হিউমার আর ম্যাচিউর থিম, যা কিনা পরবর্তী সময়ে অনেক হলিউড মুভির অনুপ্রারনা হয়ে থাকবে।

নিনজা স্ক্রল অ্যানিমে নিয়ে বলতে গেলে বলতে হয় এটা - নট ইয়োর মামা’স অ্যানিমে। কিন্তু এটাই অ্যানিমেটির একটি বড় সমস্যা। ইয়ে মানে, এই গল্পে একসাথে এত্তগুলি অ্যাডাল্ট ম্যাটারিয়াল নিয়ে আসা হয়েছে যে অনেকের কাছে বড় ধরণের ধাক্কা লাগবে। নুডিটি, ধর্ষণ ও সমকামিতার প্রতি ইঙ্গিত থাকায় এটা সবার উপভোগ করার মত অ্যানিমে না নিশ্চয়ই। কিছু দৃশ্যে গা গুলিয়ে আসবে। এগুলিই যে অ্যানিমেটাকে হরর জনরায় ফেলে দিয়েছে, বলাই বাহুল্য। কিন্তু তাই বলে এমন ইনফ্লুয়েনশাল একটি ক্লাসিক অ্যানিমে উপভোগ করা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন, তা কি করে হয়।

অ্যানিমেঃ Ninja Scoll
অন্য নামঃ Juubee Ninpuuchou, Wind Ninja Chronicles
টাইপঃ মুভি (R rated)
জনরাঃ অ্যাকশন, হরর, হিস্টোরিকাল, ফ্যান্টাসি, সুপারন্যাচারাল
দৈর্ঘ্যঃ ১ ঘন্টা ৩৪ মিনিট
সময়কালঃ ১৯৯৩
স্টুডিওঃ ম্যাডহাউজ



সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ৭:২৪
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×