জম্ম, শৈশব, পুরান ঢাকায়।
শহীদ স্মৃতি স্কুল হতে এস এ সি, সেন্ট্রাল উমেন্সে এইচ এ সি, এখন একটি বেসরকারী বিশ্ব বিদ্যালয়ে অনার্স করছি অর্থনিতিতে।
আমার দুই ভাই দু বোন ছিলাম, সবার বড় বোনটা কিছু দিন আগে সুইসাউড করেছে অনেক অভিমান নিয়ে, কি অভিমান ছিল ও বুকের ভিতর তা কোন দিন জানতে পারিনি আর পারবোওনা।
ছোটা ভাইটা এবার ঢাবিতে ভর্তী করেছি, এ ছাড়া মা বাবা বেচে থেকে ও আমার কাছে মৃত। কেননা আমি তাদের সাথে আমার কোন যোগাযেগ নেই। শুধু ছোট ভাইটা প্রতিদিন আমার বাসায় এসে দেখা করে।
আমার শৈশব কেটেছে দারুন আনন্দে, কখনো যদি জানতাম সেই আনন্দ আমার জীবনের সকল আনন্দের অস্তিত্ব তাহলে আমি খানিক টা রেখে দিতাম আমার একাকিত্বেও জন্য।
এস এ সি পরিক্ষার পর অনেক দিন ছুটি থাকে তাইনা। এক দিন আমি আমার এক বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলাম ঘুরতে ফিরতে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল, ভয়ে ভয়ে বাসা ফিরে আসি। বাসায় আসার পর আমার মায়ে শাসনের যাতাকলে পড়তে হয়। অমায় তিনি অনেক বকা যকা করতে থাকেন যা আমাকে দারুন আঘাত করে মানসিক ভাবে। তার পরেও আমি নিজেকে সান্তনা দেই এই ভেবে তিনি আমার মা আমার মঙ্গল চান। বাসায় ভাইটা ছাড়া আর কেহ আমার সাথে কথা বলেনা। মা শুধু বলে ভাল মেয়েরা এত রাতে বাইরে থাকেনা সাথে আপ্ওু, বাইওে যদি থাকতে এত ভাল লাগে তাহলে বাসায় ফেরার দরকার কি। অনেক ক্ষমা চেয়েছি মা ভুল হয়েছে আর হবে না এমনটা আর। কে শুনে কার কথা তিনি এক পর্যায় বলে ফেললেন এমন মেয়ের আমার প্রয়োজন নেই, তিনি আমার মুখ দেখতে চান না এবং বাড়ী থেকে বের হয়ে যেতে বললেন।
বাবা তো দেশে থাকেন না তাই তাকে ফেনে করে জানালাম সব তিনি নিশ্চুপ। নিজের উপর নিজের প্রচন্ড অভিমান হল, নিজের জমানো ২৭০০ টাকা আর কিছু কাপড় নিয়ে সেই বান্ধবীর বাড়ীতে গিয়ে উঠলাম ---- বান্ধবীর মা সব কিছু জেনে রাতে আমাকে থাকতে দিলেন না, বললেন বাড়ী ফিওে যাও। নিজের প্রতি অভিমান আরো এক ধাপ বেড়ে গেল, নারিন্দা আমাদেও এক আত্বিয়ের বাসা আছে সেখানে গেলাম রাত ৯টার দিকে --- তার আমাকে দেখে খুশি হল বললাম কদিন বেড়াবো, ভাবছিলাম মা হয়তো খুজে নিয়ে যাবে।
আমার সেই ধারণা ছিল ভুল, আমার বোন আমাকে খুজতে এসেছিল কথা হয়েছিল ওর সাথে ও বলেছিল ইচ্ছা হলে তুই আমার সাথে চল, আমি বলেছিলাম ইচ্ছা হলে কেন আপু তুমি কি আমায় নিয়ে যেতে আসনি ও কোন কথা বলেনি।
বাসায় আর ফিরে যাবো না কথা জানিয়ে দিলাম আপু কে, ও শুধু কেঁদেছিল বলেছিল তাহলে কোথায় থাকবি, বলেছিলাম কোথাও না কোথাও জায়গা হয়ে যাবে ----
ঐ বাসায় থেকে টিউশনি করতে শুরু করলাম, এর মাঝে আমার রেজাল্ট বের হল শহীদ স্মৃতি স্কুল হতে ৪.৮৮ নিয়ে আমি এস এ সি পাশ করলাম। এর মাঝে কেউ কোন দিন আমার খোজ নেয়নি শুধু আমার ছোট ভাইটা ছাড়া। আমার রেজাল্টের খবরটা ও নিয়ে এসেছিল।
ভর্তী হলাম সেন্ট্রাল উমেন্সে এইচ এ সি তে , সম্পুন্য নিজের উপাজিত অর্থে । ছোট ভাইটা সব সময় কানতো বলতো আপু তুই বাসায় চলে আয়- -- আমি শুধু বলতাম আমার নিজের একটা বাড়ী হবে সে দিন তোকে আমার কাছে নিয়ে আসবো। ও আরো জোরে কান্না করতো--- ও চলে যাবার পর আমিও কাঁদতাম মার কথা ভেবে, মা কত আদর করতো আমায় কখনো ভুলতে পারবো না আমি মায়ের কথা। তবে মা আমার সাথে এমন কেন করলো --- মার কি আমার জন্য খারাপ লাগেনা।
২০০৩সনে বাবার কাছে জানতে পেরেছিলাম আমি আসলে তাদেও সন্তান না, আমাকে যখন সন্তান হিসেবে তারা নেই তখন তাদের একটি সন্তান এসেছিল এই পৃথিবীতে মৃত তার জায়গা পুরণ করতে আমাকে কোলে তুলে নিয়েছিল তারা। এটা আমার মা জানতে পারার পর থেকে আমার প্রতি তার মায়া হারিয়ে ফেলে ---
আমি যে বাসায় থাকতাম কিছু কিছু কারণে সে বাসায় থাকা আর সম্ভব হয়ে উঠছিলনা, বাধ্য হয়ে সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। এর আগে মানিক নগরে এক মেয়েরে সথে শেয়ারে থাকার ব্যবস্থা হল।---- সেই থেকেই আমার অন্ধকার জীবনের সুচনা।
আমি আসলে জানতাম না মেয়েটা------------------

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




