আমি আগেই বলেছি আমি আমার চলমান জীবনটাকে তুলে রাখছি ব্লগে ডাইরি ভেবে, কেই আমাকে করুনা করুক তা আমি চাই না।
হু চলাম পথে অনেক গুণিজনের কথা শুনতে হয় যদিও যাপিত জীবনে তার প্রভাব ফেলা বড্ড কঠিন যদি সেই জীবনটা ছিটকে থাকে সামাজিক জীবনের লক্ষ্য থেকে----------------------------
মানিক নগরে যার সাথে বাসা নিলাম সে আমার সিনিয়র ছিলেন আমাদের কলেজে, সেই সুবাদেই তার সাথে পরিচয়। এইচ এ সি পাশ করে বেসরকারী একটি বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তী হয়েছেন।
ভাল কাটছিল আমার এই একাকিত্বেও জীবন, ছোট ভাইটা মাঝে মাঝে আসতো। আমি ওকে তেমন সময় দিতে পারতাম না, কেননা আমি টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম, যদিও ওর সাথে আমার রক্তের কোন বাধন ছিলনা, ছিল হৃদয়ের বাধন যে বাধন আসলেই ছিড়া যায়না।
আমার এইচ এ সি ঘনিয়ে আসায় টিউশনি কমিয়ে দিলাম এতে করে আমি দারুন আর্থিক সমস্যায় পতিত হলাম। বাসা ভাড়া খাওয়া খরচ বাদই দিলাম আমার ফরমফিলাপের টাকার সমস্যা দেখা দিল। কার কাছে চাইবো ভাবছিলাম, মনি আপাকে বললাম তিনি আমার কথা শুনে হাসলো বললো ঠিক আছে ---- কবে লাগবে। মনি নিজে গিয়ে আমার ফরমফিলাপ করে আসলেন।
পরিক্ষা শেষ হল ----
ভাবছিলাম বুটিকের কাজ শিখবো, বললাম মনিকে। ও বললো এসব বাজে কাজ শিখে সময় এবং পয়সা অপচয় করে কোন লাভ নেই। তাই আমিও আর চেষ্টা করলাম না। আগের চেয়ে টিউশনি আরো বাড়িয়ে দিলাম প্রায় এগার হাজার টাকা দেনা। জীবন বয়ে নিয়ে চলতে লাগলাম নিজের মত করে---- এর মাঝে কোন দিন আর কেউ আমার খোজ নেয়নি। এস এ সি রেজাল্টের পর বাসায় গিয়েছিলাম মা সালাম করতে তিনি আমার সালাম নেয়নি। এর পর আর কোন দিন ঔ বাসায় যাইনি মন বেশী খারাপ হলে বাসার সামনে রাস্তায় গিয়ে মাকে দেখে আসি।
বাবাও আর কোন খোজ নেয়নি আমার, রাজন বলেছে আপু নাকি আমার কথা বলে কাদে----
আপ্ওু কোন দিন দেখতে আসেনি আমায় কেন ওরা আমাকে এমন শাস্তি দিল এর চেয়ে তো আমায় মেরে ফেলা আরো ভাল হতনা।
বেশ ক দিন যাবৎ রাজন আসছিল না তাই মনটা বেশ খারাপ করে বসে আছি, মনিদি বললো কিরে মন খারাপ বলল হু, কেন ?
বললাম রাজন আসছেনা আজ কদিন ধরে আমিও যেতে পারছিনা ব্যস্ত থাকার কারণে। ঐদিন বিকালে রাজন এলো ভাইকে দেখে আমার কি যে আনন্দ লেগেছিল তা বলে বোঝাতে পারবোনা। ওকে জড়িয়ে ধরলাম পরম মমতায় চোখ থেকে অশ্র“ ঝরে পড়লো নিজের অজান্তেই --- ভাই আমার অবাক হয়ে দেখলো ---
বললাম চল তোকে নিয়ে আজ পুরো ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াবো --- জানতেই চাইনি ও কেন আসেনি এ কদিন।
টাকার সমস্যা থাকার পরও ভাইকে নিয়ে অনেক ঘুরলাম ---- কর্ণফুলি র্গাডেন সিটিতে নিয়ে গিয়ে ওর জন্য কিছু টি শাট কিনলাম, এ জন্য ওকে খানিকটা আনন্দ দিতে চাইলাম ও যেনো বুঝতে না পারে আমি তদের জন্য কষ্ট পাই--- তার পরেও ভাই কি আর না বুঝে।
কিছুদিন পর ছিল ওর টেষ্ট পরিক্ষা --- বললাম তোর কাছে আমি কিছু চাইনা, শুধু একটা জিনিস চাই আমি জানি তুই একটু চেষ্টা করলেই পারবি।
রাজন বলেছিল আমি আমার জীবনটা মার জন্য যেমন তার পায়ে লুটাতে পারি তেমনি তোর পায়ে ও লুটাতে পারি।
আমি বলেছিলাম ধুর বোকা --- আমি চাই জিপিএ ৫ ও বলেছিল আপু তুই দোয়া করিস। বাসায় ওকে নামিয়ে দিয়ে আমি আমার নীড়ে ফিরলাম। দেখি মনিদি ঘরে ও ঘরে থাকেনা এ সময় বললাম আপু শরীর খারাপ করেছে নাকি ?
বলল না, আমরা কজন মিলে ক্্রসবাজার যাচ্ছি সাথে তোকেও নিতে কি বলিস যাবি, মাত্র ৪/৫দিন থাকবো। বললাম আমার টিউশনি আছে তা ছাড়া সামনে বাচ্চদের পরিক্ষা এ সময় যাওয়া ঠিক হবে না, ত ছাড়া আমার হাতে তেমন টাকাও নেই। টাকার কোন সমস্যা না আমি দেব পরে আমাকে দিয়ে দিস--- এমন করে ধরলো যে আর না করতে পারলাম না। আমার আপত্তি ছিল রাজনকে সাথে নেবার মনিদি রাজি হলে রাজন বাসায় মাকে রাজি করতে পারে নি।
আমি আমার জীবনে সব কিছু এই সমুদ্রের বুকেই হারিয়েছি ----- যার বুক এত বিশাল সে কেন অন্যের সব কিছু কেড়ে নেয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




