আমরা এখানে যারা লিখি, কেনো লিখি আমরা? উদ্দেশ্যটা কি আমাদের? একটা মন্তব্যের জন্য, নিজের লেখা ছাপার অক্ষরে দেখতে পাবার আকাড়খা, নাকি নিজের মনের ভেতরে এলোমেলো ভাবে এদিক ওদিক ঢুঁ মারতে থাকা কিছু বিক্ষিপ্ত ভাবনার অবিরত তাড়নার ফলে!
মনেপড়ে সেই কবে প্রথম লেখা শুরু করেছিলাম। মাসের হিসেবে তো বেশ অনেকগুলো মাস হয়েই গেলো। প্রথম আলো দৈনিকের কল্যানে জানলাম সামহোয়্যার বলে একটা সাইট বাংলায় ব্লগিং করার সুযোগ এনে দিচ্ছে। নিতান্তই আগ্রহের বশে, অনেকটা খাপছাড়া ভাবেই নিতান্ত অলসতায় ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট সামহোয়্যার ইন ব্লগ ডট নেট টাইপ করলাম। চোখের সামনের এলসিডি স্ক্রীনে ভেসে উঠলো আগাগোড়া ঝকঝকে বাংলা হরফে ভরা ওয়েবসাইট টা। ব্যস্ততার কারণে তেমন কিছুই করা হয়ে উঠেনি আর। সাথে সাথেই উইন্ডোটা বন্ধ করে দিয়ে আবার কাজে মনোনিবেশ!
তখনো ভাবিনি এই সাইটটা আমাকে এতদূর নিয়ে আসবে, সব মিলিয়ে নিজের পোসট হবে দেড়শতাধিক (কিছু অবশ্য ডিলিটেড)। খুব কাছ থেকে কিছু মানুষকে অনুভব করতে শেখাবে। যাদেরকে জীবনে দেখিনি, যাদের কথা কোনদিন শুনিনি তাদের সাথে হয়ে যাবে আত্মীয়তা, একেবারে হার্ট টু হার্ট। কার নাম বলবো? কার নাম বাদ দেবো? এমন কী কেউ আছে যার নামটা কখনো সামহোয়্যারের পাতায় দেখে মনে হয়েছে আমার "আরে একেতো আমি চিনি না"! পেছনের এতোগুলো দিন পার করে এসে মনে হচ্ছে সবাই ই যেন এক অদৃশ্য সূতায় গাঁথা হয়ে আছি। কতো বাক-বিতন্ডা, কতো ঝগড়া, কতো চিৎকার চেঁচামেচির পরেও কারো জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে কেউ ভুল করে না, ভুল করেনা কোনো অনুপ্রেরণামূলক পোসটে নিজের মন্তব্য দিতেও।
আমার কেনো যেনো মনেহয় মূলত সেই অদৃশ্য সূতার টানের কারনেই আমরা ফিরে ফিরে আসি এই ব্লগের পাতায়। ভাগাভাগি করে নেই প্রতিদিনের টুকিটাকি জিনিষের সাথে খুব গুরু-গম্ভীর কিছু তত্ত্ব। যার তাড়নাতে আমাদের মাথায় চেপে বসে লেখার "সিন্দাবাদের ভূত", আঙুল চলে কী-বোর্ডে, সামহোয়্যারের পাতা ভরে যায় পোসটের পর পোসটে!
প্রথম যখন ভার্চুয়াল আত্মীয়তার খাতিরে সবার সাথে আমার পরিচিত, খুব কাছ থেকে দেখা উত্তরাধুনিক একজন লেখকের বই শেয়ার করলাম সেদিনও বুঝে উঠতে পারিনি আসলে কেনো লিখি আমরা। উপলব্ধিটা এসেছে ধীরে ধীরে। দিনের পর দিন সবাইকে একটু একটু করে জানার পর। অনেকেই যখন আমার সেই পোসটে নিজেদের অংশগ্রহন করলেন, নিজের উপস্থিতি জানান দিলেন, অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, একজন লেখকের কী শক্তি! আমি যাদেরকে আমার ভার্চুয়াল আত্মীয় বলে জানি, তারা অনেকেই আমার ভিজু্যয়াল আত্মীয়কে চেনেন। লেখার কারনেই একজন মানুষ কেবল একটি এনটিটি হয়ে দেশ-কাল-সীমানার গন্ডি পেরিয়ে সবার মাঝে এক মেলবন্ধন রচনা করতে পারেন। এই বন্ধনকে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করতেই কিনা লিখে যাই আমরা।
এই লেখার তাড়নায়ই মাসকাওয়াথ আহসানের লেখা গুলো নিয়ে অনলাইন আর্কাইভ করার কথা ভাবি। ভাবনা থেকে প্রস্তাব এবং তারপর উৎসাহ এবং সহযোগিতা। আমাকে সর্বান্তকরণে পিঠ চাপড়ে গেছেন আমার ভার্চুয়াল এবং রিয়েল টাইমের আত্মীয়রা। আর্কাইভকে তুলে ধরার জন্য দাঁড়িয়ে গেলো একটা ওয়েব সাইট। ওয়েব সাইটটি শেষ করার পর, নিজের অসুস্থাবস্থায় বসে বসে ভাবছিলাম, আমরা কেনো লিখি, বিশেষ করে আমি কেনো লিখি...।
ব্লগের আমার ভার্চুয়াল আত্মীয়দের পাশাপাশি যে মানুষটি নীরবে অবদান রেখে চলেছেন, আমার অজান্তে আমার ব্লগে ঢুঁ মেরেছেন, আমার লেখার ভুল গুলো ধরে দিয়েছেন, বাকী অনেকের লেখার কথা তুলে এনেছেন আলাপে, তার অবদান মোটেও কম না। আমাকে লেখার হাতেখড়ি যদি সামহোয়্যার এবং সামহোয়্যারের আমার ভার্চুয়াল আত্মীয়রা দিয়ে থাকেন তাহলে সেই হাতেখড়িকে আলো দেখিয়ে পথ দেখিয়ে চলেছেন gvmKvIqv_ Avnmvb। ব্লগের কারো অবদান আমি আলাদা করে দেখতে পারিনা মাসকাওয়াথ আহসানের চেয়ে। একজন চোখের সামনে, আর অন্যরা চোখের আড়ালে থেকে আমাকে হাত ধরে এগিয়ে দিচ্ছেন লেখার ভুবনের সামনের দিকে।
আমি এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে সবার উচ্ছ্বাসকে সযতনে সাথে করে! উচ্ছ্বাস থেকেই উচ্ছ্বলতার বশবর্তী হয়ে আমার করা [link|http://maskwaithahsan.googlepages.com/editorial| I

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



