somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভিসার (অভিসার)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্বের লিঙ্ক Click This Link
সেপ্টেম্বরের ১৯ তারিখ। একবছর পর মধু'র সাথে তূর্য'র দেখা হবে। মধু বাড়ি আছে। কুমিল্লায়। তূর্য আসবে ময়মনসিংহ থেকে। একটা চাকরির সাক্ষাৎকার আছে। সাক্ষাৎকার শেষে মধু'র সাথে দেখা করবে।

সাক্ষাৎকার বনানীতে। সাক্ষাৎকার শেষে মালিবাগ আসতে হলো। কারণ, কর্মস্থল এখানেই। তূর্য'র চাকরি টা হয়ে গেছে। অতিসত্বর যোগদান করতে হবে।

দিন প্রায় শেষ। বিকেল গড়িয়ে গেছে। মালিবাগ থেকে শাহবাগ যেতে হবে। ইতোমধ্যে মধু কলেজে চলে এসেছে। সারাদিন ধরে অপেক্ষায় আছে কখন তূর্য'র সাথে দেখা হবে।

গাড়িতে উঠল তূর্য। গাড়ি চলতেই আছে। পথ যেন শেষ হয় না। এদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। মধু'র হলের গেট সন্ধ্যে ৭ টায় বন্ধ হয়ে যাবে। ৭ টার আগে পৌঁছাতে না পারলে দেখা হবে না।

চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠল তূর্য। হঠাৎ গাড়ি থেমে গেল। জানা গেল গাড়ির গন্তব্য এখানেই। তূর্য বুঝতে পারল সে ভুল গাড়িতে উঠেছিল।

একজনকে জিগ্যেস করল শাহবাগ যাবে কেমনে। লোকটা বলল, রাস্তার ওপাশে গেলে লেগুনা আছে। ১০ টাকায় সামনের একটা বাজারে নামিয়ে দেবে। সেখান থেকে গুলিস্তান। গুলিস্তান থেকে শাহবাগ কাছেই।

গুলিস্তান পৌঁছাতে ৩০ মিনিট লেগে গেল। যানজট ছিল। কী করবে তূর্য? ৩০ মিনিটে কি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে?
মধুকে বলে রেখেছিল দুজন একসাথে লাঞ্চ করবে। সুযোগ হবে বলে মনে হয় না।

শাহবাগ এসে বেলিফুল খুঁজতে লাগল তূর্য। এটা মধু'র পছন্দ। বনানীতেও খুঁজেছিল কিন্তু পায় নি। পাবে কেমনে? এখন তো বেলিফুলের ঋতু না।
একটা গাজরা ফুলের মালা চোখে পড়ল। এটাই নেওয়া যায়। সুন্দর আছে।

২০ মিনিট সময় হাতে। রিকশাওয়ালাকে জিগ্যেস করল, বদরুন্নেসা সরকারি কলেজে যাবে কি না।
"বকশীবাজার না?" রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল।

তূর্য সেটা জানে না। জানতে ফোন দিল মধুকে। বেচারি অপেক্ষায় থাকতে থাকতে এতক্ষণে অস্থির হয়ে গেছে।

রিকশা চলতে শুরু করল। বুক ধড়ফড় করছে তূর্য'র। সে কি মধু'র সাথে দেখা করতে পারবে? এতদিনের অপেক্ষার কি অবসান হবে?
দুশ্চিন্তায় ঘামতে শুরু করেছে সে। একসঙ্গে লাঞ্চ করতে না পারলেও দেখা টা হলে ভালো হতো। গাজরা ফুলের মালা টা মধু'র খোঁপায় মানাবে না? এসব ভাবতে ভাবতে বদরুন্নেসা কলেজের সামনে এসে গেল রিকশা।
মধুকে ফোন দিল তূর্য।

মধু হয়ত ভেবেছিল তূর্য সময় মতো পৌঁছাতে পারবে না। তাই আগেভাগে বের হয় নি।

৫ মিনিট পর সে গেটে হাজির হলো। এপাশ-ওপাশ করল। তূ্র্য দাঁড়িয়েছিল পশ্চিমদিকে। ইশারায় ডাক দিল তূর্য।

দুজনেরই প্রথম প্রেম এবং প্রথম অভিসার। কে কী করবে বুঝতে পারছিল না। সময় তো নেই যে এক জায়গায় বসে স্বাভাবিক হবে।

উপহারগুলো মধু'র হাতে দিল তূর্য। গাজরা ফুলের মালা, একটা হেডফোন, মোবাইলের কভার, ব্রেসলেট (নওগাঁ থেকে এনেছিল) এবং অনেকগুলো চকলেট। মধু তার উপহার তূর্য'র হাতে দিল। দামি একটা পারফিউম।

হঠাৎ একটা রিকশা সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। রিকশায় চড়ে বসল দুজন। সামনে এগিয়ে একটু ফাঁকা জায়গায় দাঁড়াল দুজন। সারাদিনের ক্লান্তিতে তূর্য অবসন্ন। মধুও নিশ্চয়ই তার অপেক্ষায় থেকে কিছু খায় নি। কী খাওয়া যায়?

দুটো আইসক্রিম কিনল। তেষ্টা পেয়েছিলো। গলাটা ভেজানো দরকার।
একটা নিজে নিল, অন্য টা মধুকে দিল। তারপর দুজন একসাথে আইসক্রিম খেল। হঠাৎ তূর্য'র মনে হলো একটা আইসক্রিম দুজন খেলে মজা হতো।

৭ টা বাজতে ৫ মিনিট বাকি। হাঁটতে হাঁটতে দুজন কলেজের গেটের কাছে। ব্যাংকের একটা বুথের সামনে দাঁড়াল। খুশির কথা এটা যে বুথএ কেউ ছিল না।

"একটু চুমাচুমি করা দরকার ছিল।" দুষ্টামির ছলে বলে বসল তূর্য। কিন্তু সে সুযোগ কই? রাস্তা দিয়ে লোকজন যাচ্ছে। গাড়ি যাচ্ছে।

একটু ফাঁকা পেয়ে মধু'র ঠোঁটের দিকে মুখ বাড়িয়ে দিল তূর্য। মধু তা লুফে নিল।
কারও কাছে মনেই হবে না এটা তাদের প্রথম সাক্ষাৎ। অবশ্য এটা প্রথম সাক্ষাৎ হলেও তাদের মনের মিল অনেক আগেই হয়ে গেছে।

১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
মালিবাগ, ঢাকা।


সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:১১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইরান ইসরাইলের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ আর আমাদের সুন্নী-শিয়া মুমিন, অ-মুমিন কড়চা।

লিখেছেন আফলাতুন হায়দার চৌধুরী, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

(ছবি: © আল জাযীরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক)

শ্রদ্ধেয় ব্লগার সামিউল ইসলাম বাবু'র স্বাগতম ইরান পোষ্টটিতে কয়েকটি কমেন্ট দেখে এই পোষ্ট টি লিখতে বাধ্য হলাম।
আমি গরীব মানুষ, লেখতে পারিনা। তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯




আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতী যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য, নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দিয়েছি। এখানে মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান চাকমা মারমা তথা উপজাতীরা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপমহাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×