
আগের পর্বের লিংক Click This Link
খেয়াল
“আমার খুব কষ্ট হয়েছিল তুমি আসোনি বলে।” তূর্য বলল।
“প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। বাবাকে বললাম, বইমেলায় যাব। ওনি মানা করলেন। ভাইও মানা করল।”
“পরীক্ষার পর বাহাদুর শাহ্ পার্কে গিয়ে বসলাম। এত অসহায় লাগছিল যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না।”
পরীক্ষা শেষে শরীরটা খারাপ হয়ে যায় তূর্য’র। কিছুক্ষণ পার্কে বসেছিল। মধু’র না আসাটা তার মনে রেখাপাত করেছিল। ভেবেছিল একসঙ্গে বইমেলায় যাবে। তার শরীর- মন দুটোই খারাপ হয়ে যাওয়ায় প্রোগ্রাম বাতিল করেছিল। তাছাড়া শরীরটা খারাপ হয়ে যাওয়ায় চলার মতো অবস্থাও ছিল না। তাই কোনোমতে গাজীপুরের বাস ধরে। উদ্দেশ্য আপাতত এক সহকর্মীর ওখানে থাকা।
মোবাইলের ওপাশে দীর্ঘশ্বাস। বোঝা যাচ্ছে মধু’র খুব মন খারাপ হয়েছে।
“আবার কবে আসবেন?” মধু জিগ্যেস করল।
“তোমার যখন সুবিধে হয়।” তূর্য বলল।
“এত কষ্ট করে আসবেন?” মধু বলল।
তূর্য’র মেজাজ খিঁচড়ে গেল। বলল, “ঠিক আছে আসব না।” অথচ ও ঠিক করে রেখেছিল শীঘ্রই একদিন দেখা করবে। ১৯ মার্চ মধু দেখা করেনি বলে ও মনঃক্ষুণ্ন ছিল। যদিও মধু’র কিছু করার ছিল না।
মেজাজ খিঁচড়ে যাওয়ার পেছনে অন্য কারণও আছে। দেখা করার প্রসঙ্গ তুললে মধু তালবাহানা শুরু করে। যদিও বহুবার বলেছে ইচ্ছে করেই এমন করে।
তূর্য জয়পুরহাট চলে গেল। সেখানে এক বড়ো ভাই চাকরি করেন। তূর্য সিদ্ধান্ত নিল কয়েকদিন ওখানে থাকবে। মধুকে একটা শিক্ষা দেওয়াও দরকার। যখন ঘনিষ্ঠ কোনো প্রসঙ্গ উঠে সে তূর্যকে ক্ষেপানোর চেষ্টা করে। তূর্য’র সাথে কয়েকজনের কথাবার্তা হয়। সে সরল-বিশ্বাসে মধু’র সাথে শেয়ার করে। অথচ মধু সময়ে-অসময়ে খোঁচা দেয়। নিজের অনেককিছুই গোপন করে। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।
এগারো দিন কোনো প্রকার যোগাযোগ হলো না।
কল্পনা
মধুকে কি চমকে দেওয়া যায়? মনে মনে ভাবল তূর্য। কিন্তু সেটা কীভাবে? ১২ সেপ্টেম্বর কলেজ খোলা। ও নিশ্চয়ই ঢাকায় চলে আসবে। ওর কলেজ গেটে গিয়ে হঠাৎ ফোন দিলে কেমন হবে? কিন্তু যদি ফোন না ধরে বা মেসেজ দিলে যদি রিপ্লাই না দেয়? অথবা টিএসসিতে গিয়ে একটা ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিলে কেমন হয়? মধু তো ফেসবুকে যুক্ত আছেই। নিশ্চয়ই ছবিটা তার চোখে পড়বে?
তূর্য ভেবে পেল না কী করা যায়। সঙ্কোচ হচ্ছে তার। যদি কোনো কারণে না আসে!
একটু অভিমানও হলো। ভাবল, দাড়োয়ানকে দিয়ে উপহারগুলো ভেতরে পাঠিয়ে দিলে ভালো হবে? ভয়ও হলো। দারোয়ান যদি জিগ্যেস করে সে কে? তাহলে কী উত্তর দেবে?
সাতপাঁচ ভেবে ফেসবুকে স্টেটাস দিল ‘Now or never’. স্টেটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মেসেজ দিল মধু। তূর্য রিপ্লাই দিল। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ কথা বলে জানা গেল মধু’র হল খুলবে ১৯ তারিখ। এর আগে সে ঢাকায় আসতে পারবে না। চাইলে অবশ্য চাচার বাসায় থাকতে পারে। তার এক চাচা ঢাকায়ই থাকেন। সেটা বোধহয় উচিত হবে না।
তূর্য তার কল্পনা বাস্তবায়ন করার তোড়জোড় করছিল। অথচ এখন সে সব মাঠে মারা গেল। এসে যদি মধুকে না পেত মনকে কী বলে সান্ত্বনা দিত?
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





