মহাখালী ওভারব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে আছি অনেকক্ষণ। কোনো গাড়ি নেই। হাঁটতে হাঁটতে বাসটার্মিনালের দিকে এগোলাম।
গাড়ি কম। অন্য সময় হলে গাড়িতে টার্মিনাল পূর্ণ থাকত। গাড়ি নেই কেন জিগ্যেস করায় একজন বলল, "গাড়ি যানজটের কারণে আসতে পারছে না"।
সৌখিন একটা বাসের হেল্পারকে জিগ্যেস করলাম, "ময়মনসিংহ যাবেন"?
"একদাম ৯০০"।
মহাখালী থেকে ময়মনসিংহে যেতে এনা ছাড়া অন্য গাড়িতে যেতে সাকুল্যে ১৫০ টাকা লাগে (এনায় ২৬০)। ভালুকায় নামলে ১০০ দিই। অথচ এরা এখন দাবি করছে কয়েকগুণ।
ময়মনসিংহ রোডে এসে দাঁড়িয়ে আছি। বাড়ি যাব কী যাব না ভাবছি। এত টাকা খরচ করে গিয়ে কী হবে? কয়েকদিন পর তো চলেই আসব। এই খরচের টাকাটা বাড়িতে দিয়ে দিলেও ভালো হতো। নানা কথা ভাবছি।
পকেটে মাত্র ৯ হাজার টাকা। খরচ করতে কষ্ট হচ্ছে। বাড়ি থেকে ঢাকায় এসে চলব কেমনে সেটাও ভাবছি। নিজের চলতেই কমপক্ষে ৭-৮ হাজার টাকা লাগে।
সারা মাস খাটিয়ে কোচিং থেকে মাত্র ৩ হাজার টাকা দিয়েছে।
লোকাল একটা বাসে যাত্রী তুলছে ৬০০ টাকা করে (গত ইদে ৩০০ টাকায় গেছিলাম। আরও দুদিন আগে হলে কম টাকায় আসা যেত হয়ত। কোচিং এর টাকার আশায় দেরি হলো)। পুলিশ এসে বলে গেল কেউ যেন বাড়তি টাকা না দেয়। উঠলাম গাড়িতে।
গাড়িতে উঠার পর ভাড়া ৬০০ করেই নিল। বাড়তি ভাড়া না দিলে ওরা গাড়ি ছাড়বে না। দুয়েকজন মৃদু প্রতিবাদ করল কিন্তু কাজ হলো না। এই গাড়িওয়ালারাও যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান্দা করে বুঝতে বেগ পেতে হয় না।।
এলাকায় যেতে অটো, সিএনজিও দ্বিগুণ ভাড়া নিল।
২
মা-বাবার সাথে কাটালাম ইদের কয়েকটা দিন। বোনেরাও এল। বন্ধুদের দুয়েকজনের সাথে দেখা করলাম। ফরহাদ নামে এক কলেজ ফ্রেন্ডের সাথে কমপক্ষে ৫ বছর পর দেখা। চুল লম্বা রেখে ফকির বনে গেছে। ওর সাথে কত স্মৃতি আমার। দুজনেরই একসময় সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছে ছিল। হওয়া হয় নি। ও পুরোদস্তুর গৃহী। আর আমি জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছি।
এক বন্ধুর বিয়ে হলো ঘাটাইল। বিয়েতে গেলাম। কোনো বিয়েতে কখনোই এত গুরুত্ব পাই নি। এমনকি নিজের বোন, ভাগ্নির বিয়েতেও। বস্তুতঃ আসর জমাতে পারি না। তবে এ বিয়েতে যথাযথ আনন্দ পেলাম। উপভোগ করলাম।
মহামারীর শুরুতে এলাকায় অবস্থানকালে কলেজের কিছু শিক্ষার্থীকে পড়াতাম। তাদের সাথে দেখা হলো, আলাপ-আলোচনা হলো।
৩
ময়মনসিংহ সদরে দরকার ছিল। বন্ধু রিফাতের সাথে দেখা হলো। ছোটন স্যারের সাথে হলো না। ওনি গ্রামের বাড়ি গেছেন।
ব্রিজ থেকে ঢাকায় আসব কিন্তু ঢাকার সরাসরি গাড়ি নেই। সব চৌরাস্তা পর্যন্ত। কয়েকটা বস্তা হাতে নিয়ে বাসস্টপেজের এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরলাম। শেষে ৪০০ টাকা ভাড়া দিয়ে চৌরাস্তার গাড়িতে উঠলাম।
চৌরাস্তা থেকে বলাকায় মালিবাগ। ভাড়া ১০০।
লোকজন যে যেভাবে পারে, যাকে তাকে ঠকাচ্ছে। এমন ব্যবসায়ী মনোভাব আর কোনো জাতির আছে কি না জানি নে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩১