somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবার অঙ্ক মেলে কিন্তু আমার অঙ্ক মেলে না

০৫ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শাহবাগে একজনের সাথে দেখা করে মালিবাগ এসেছি। একটা কাজ করে ভাবছি কোচিং এ যাব কী যাব না। ভাবতে ভাবতে দুই ঘন্টা পার।
হঠাৎ ফেসবুক গ্রুপে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন মেসেজ করলেন, "রূপক স্যার, আপনি কোথায়?"
কোচিং কাছেই ছিল। দ্রুত চলে গেলাম।

ক্লাস করতে করতে মেজোবোন ফোন দিল। সে সচরাচর এমন সময় ফোন দেয় না। জানে আমি বাইরে থাকি।
কথা বলে জানলাম মা অনেক অসুস্থ। হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। একসপ্তাহ ধরে না কি শ্বাসকষ্ট।
বুক ফেটে কান্না এল আমার। কিন্তু ঢাকা শহরে কান্না করার জায়গা কই?
অসুস্থ এজন্য না শুধু, তার জন্য কিছু করতে পারছি না এজন্য মন ভারি হলো।

আমার বাবা বছরের পর বছর অসুস্থ। ওনার সেবা-শুশ্রূষা করতে করতে মা কাহিল। আলাদাভাবে ওনার চিকিৎসা করা হয়নি। মাঝেমধ্যে ফার্মেসি থেকে অল্পবিস্তর ওষুধ আনা হয় কিন্তু বড়ো ডাক্তার কখনো দেখানো হয়নি।


রাতে মেজোবোন আবার ফোন দিল। বোনজামাই একটা বিপদে পড়েছেন। ওনি পল্লি চিকিৎসক। এক মেয়ের চিকিৎসা করাতে গেছিলেন। খায় না ঠিকমতো। খাওয়ার স্যালাইন দিয়ে চলে এলেন। পরদিন দেখা গেল মেয়েটা মারা গিয়েছে।

মেয়েটাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কোনো ঝামেলা ছিল বোধহয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন একদিন পরে নিয়ে যেতে বলল। পরদিন যে লাশ যাবে কে জানত। আমরা ধারণা করছি মেয়েটাকে হত্যা করা হয়েছে।

মেয়েটা খুব দুঃখী ছিল। বাবা দুর্ঘটনায় মারা গেছে। মা অন্য লোকের সাথে ভেগে গেছে। ভাইদের অভাবের সংসার। সে ভাইদের বিপদে ফেলতে চায় নি, তাই হয়ত কষ্ট করে রয়ে গেছিল। বিয়ে হয়েছে মাত্র ৩ মাস।

হত্যা মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বোনজামাইয়ের কাছে ফোন আসে পুলিশের। ৪-৫ বার দেখাও করেছে। তদন্তের খাতিরে আসতেই পারে। কিন্তু ইদানীং মনে হচ্ছে পুলিশ টাকা খেতে চায়।

বেচারা মেয়ে বিয়ে দিয়ে সর্বস্বান্ত। এখন টাকা পাবে কই। মেজোবোন আমাকে বলে মেয়ের ভাইকে কিছু বলতে। সে আমার সহপাঠী ছিল। সহমর্মিতা জানাব না কি বোনজামাই বিপদে যেন না পড়ে সেজন্য অনুরোধ করব ভেবে পাই না। মেজোবোন ফোন নাম্বার নেয়। কথা বলে। সহপাঠী জানায় ওনার কোনো সমস্যা হবে না। সমস্যা হবে না কিন্তু তবুও পুলিশ দেখা করতে বলে। বোন জামাই আতঙ্কে থাকে। আমি ফোন দেই সহপাঠীকে। সে ফোন ধরে না।


টিউশনিতে যাব কিন্তু ফোন দিয়ে জানায় বাচ্চা অসুস্থ। যাই না। পরদিন গিয়ে দেখি বাচ্চার মাও অসুস্থ। আলাপ করে চলে আসি, বুদ্ধি পরামর্শ দেই। এদিকে নিজেও অসুস্থ। প্রেশার লো হয়ে যায়। চলতে পারি না।
পরদিন আবার পড়াতে যাই। অল্প পড়াই। বাচ্চা অসুস্থ তো। তারপর অভিভাবকের সাথে গল্পসল্প করে চলে আসি।

এদিকে কোচিং এ যাওয়ার ইচ্ছে হয় না। অল্প টাকা কিন্তু ৬ ঘন্টা কথার ওপরই থাকতে হয়। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি নেই।

একটা চাকরির কথা। গিয়ে কথা বলি। অনলাইন বেজড চাকরি। কতটুকু পারব সেটা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এদিকে অন্য একটা চাকরির কথা। সেটাও অনলাইন বেজড। বাসায় ওয়াইফাই নেওয়ার চিন্তা করতে করতে সময় যায়। বাসায় মালিকের চেয়ার টেবিল আছে। চাইলেই কম্পিউটার বসিয়ে ব্যবহার করতে পারি। ভাবতে ভাবতে অন্যদের দখলে চলে যায়।

গত ৫-৬ বছরে কী করলাম, জীবনের হিসেব কষি। শুয়ে-বসে চিন্তা করা ছাড়া তেমন অর্জন দেখি না। যা উপার্জন করি, বাড়িতে পাঠিয়েও সে টাকায় কোনোমতে চলা যায় কিন্তু আমার চলে না। কেন চলে না সেটাও মেলাতে পারি না। সবার অঙ্ক মেলে আমার অঙ্ক মেলে না। এমন না যে প্রচুর খরচ করি। বা কোনো নেশার বদভ্যাস আছে।

বিভিন্ন জায়গায় সিভি পাঠাই কিন্তু সুখবর আসে না। টেনশনে দিনদিন মেজাজ খিটখিটে হতে থাকে। নিজেকে পাগল পাগল মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০৬
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×