হুমায়ুন আহমেদ যে শুধু নামকরা কথাসাহিত্যিক ছিলেন তা নয়, তিনি বরেণ্য একজন নির্মাতাও ছিলেন। তার নাটক-সিনেমা এখনও জনপ্রিয়। হাসির ছলে নির্মল বিনোদন দেওয়া তার এমন কিছু কাজ আছে, যা দেখলে বিষণ্ন মনও পুলকিত হয়। ভাঁড়ামো ছাড়াও যে লোক হাসানো যায়, হুমায়ুন আহমেদ তা চমৎকারভাবে দেখিয়েছেন।
কিছু কিছু অভিনেতাকে তিনি আবিস্কার করেছিলেন, যাদেরকে হুমায়ুন আহমেদ ছাড়া কারও পক্ষে যথাযথভাবে কাজে লাগানো সম্ভব না। আসাদুজ্জামান নূর, চ্যালেঞ্জার, ডা. এজাজ, ফারুক আহাম্মেদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, স্বাধীন খসরু, জাহিদ হাসান, মাহফুজ, তানিয়া আহমেদ, শামীমা নাজনীনসহ আরও অনেকে।
সাংবাদিক থেকে হুমায়ুন আহমেদের হাত ধরে অভিনেতা বনে যাওয়া মাহফুজ একসময় হুমায়ুনের সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জাহিদ হাসানের সঙ্গেও তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কেন এমন হয়েছিল; এই প্রশ্নটা অনেকের মনে। যেহেতু আমরা জানি মাহফুজ হুমায়ুনের স্নেহভাজন ছিলেন।
মাহফুজ নিজেই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ঘটনাটি জানিয়েছেন।
মাহফুজ বলেছেন, হুমায়ুন আহমেদের ‘আমার আছে জল’ সিনেমায় জাহিদ হাসান যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সেটা তার করার কথা ছিল। পাকা কথাও হয়েছিল। অথচ সেই চরিত্রের জন্য একটা পর্যায়ে তাকে নেওয়া হয়নি।
মাহফুজ জানাচ্ছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় তার স্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন। দেশে এসে শুনেন ওই চরিত্রটা উনি করছেন না। সিনেমায় ফেরদৌস যে চরিত্রটা করেছেন; তাকে সে চরিত্রটা দেওয়া হয়। এ বিষয়টা জেনে তিনি হুমায়ুন আহমেদকে না করে দেন।
হুমায়ুন আহমেদ হয়তো কখনও ভাবতেও পারেননি মাহফুজ না বলবেন।
এরপর মাহফুজ শুনেন জাহিদ হাসান এই চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে খাসি জবাই করে খাইয়েছেন। এবং বলেছেন, এটা নাকি তার স্বপ্নের চরিত্র।
জাহিদ নিজে যদি বিষয়টা নিয়ে কথা বলত তাহলে তিনি খুশি হতেন, বলেছেন মাহফুজ। তিনি বলেন, জাহিদ যদি আমাকে বলত, মাহফুজ, আমি এই চরিত্রটা করতে চাই। তুই ওটা কর। আমি খুবই খুশি হতাম। কিন্তু জাহিদ বা হুমায়ুন আহমেদ কিছু জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি।
এরপর থেকে আর কখনও হুমায়ুন আহমেদের সঙ্গে কাজ করা হয়নি মাহফুজের। জাহিদ হাসানের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয়েছিল।
যদিও পরবর্তীতে ওই অনুষ্ঠানে জাহিদ হাসানকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মাহফুজ। তিনি বলেন, ওভাবে বলাটা ঠিক হয়নি। জাহিদ হাসান অবশ্য এ ব্যাপার নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
ছবি ও তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট