ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করেছি অনেকদিন হলো। আগে ব্যক্তিগত সংযোগ ছিলো না। তখন সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে ইন্টারনেটে বসতাম। ২০ টাকায় ১ ঘন্টা। আসলে তেমন কোন কাজ না থাকলে যেতাম না। আর কোন কাজ থাকলেও দেখা যেত যে, তা দশ মিনিটে শেষ হয়ে যেত। বাকি সময়ে এটা সেটা করে কাটিয়ে দিতাম। তখন বুঝতে পারতাম না যে, ইন্টারনেটে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষ কী করে!
ফেসবুকের নামও তখন শুনিনি। ফেসবুকের নাম শুনেছি এক বছর হবে হয়তো। ভার্সিটির হলে ইন্টারনেট এর সংযোগ আসার পর থেকে। হলে যাদের কম্পিউটার আছে এবং যাদের নেই তাদের সবারই আর কিছু থাক বা না থাক ফেসবুকে একটা অ্যাকাউন্ট আছে!! সত্যি কথা বলতে গেলে আমার নিজেরও আছে। না থাকার কোন কারণও নেই। মজার ব্যাপার হলো, যারা ফেসবুক ব্যবহার করে তাদের ফ্রেণ্ড লিস্টে বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েকে পাওয়া যায়।

“এটা কে?” জিজ্ঞাসা করলে বলে “দোস্ত আমার ফ্রেন্ড কিন্তু চিনি না।”

তারপরও তাদের লিস্টে মেয়েদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তেই থাকে।

বর্তমানে ফেসবুক জিনিসটা আমাদের সমাজে একটা ব্যধির মত হয়ে গেছে।

ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুকে বসে থাকতে থাকতে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা মনে হয় একসময় আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। (যদিও আমি ফেসবুক ব্যবহার কম করি তবুও মনে হয় এক সময় আমিও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবো না। কারন, আমি সারাদিন সামুতে বসে থাকি!!

) তারপরও সামুতে অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়, তর্ক বিতর্ক হয়। একে একপ্রকার সুস্থ বিনোদন বলা যায়। কিন্তু ফেসবুকে আসলে কী হয়? সেটা আমি এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। আজকে শুনলাম, ইদানিং নাকি মনোবিজ্ঞানীরা ‘ফেসবুক অ্যাডিকশন ডিজঅর্ডার’ নামে একটা রোগ পর্যন্ত বের করে ফেলেছে। জানিনা আমাকে ব্লক করা হবে কিনা, তারপরও একটা কথা না বলে পারছিনা। হতে পারে কোন একসময় মনোবিজ্ঞানীরা হয়তো ‘সামু অ্যাডিকশন ডিজঅর্ডার’ নামে কোন রোগ বের করে ফেলবে!!

ফেসবুকে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করে তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া না পেয়েও নতুন ধরনের কোন ‘সাড়া না পাওয়া ডিজঅর্ডার’ রোগ আসলেও অবাক হবার কিছুই নেই।

ফেসবুকে আমার ফ্রেন্ডের সংখ্যা একশর কিছু বেশি। তার মাঝে নব্বই ভাগই আমার ভার্সিটির। তাদের সবার সাথে যোগাযোগ রাখাই আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেখানে ফেসবুকে একটা মেয়ে নিক যার ফ্রেন্ড সংখ্যা হাজারের উপরে তার পক্ষে কি করে এতগুলো মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হবে? তাই আগে থেকেই বলে রাখলাম এ রকম কোন রোগ আসতেও পারে।
কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে।