সেনাপ্রধানের সরকারি পদে তো কেউ সারাজীবন থাকতে পারে না। তাহলে এমনিতেই জিয়ার সময়ে নিত্য অভ্যুত্থান ঘটতে থাকা সেনাবাহিনিতে তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে আরো বেশী অসন্তোষ তৈরী হবে। জিয়াকে তাই সায়েমের কাছ থেকে ৭৭ এ কেড়ে নেয়া ক্ষমতা (বিস্তারিত আগের লেখায় ) ধরে রাখতে প্রয়োজন হল ‘রাজনীতি’ আর ‘নির্বাচন’। তিনি ঘোষনা করলেন, ‘আমি, আমার সরকার পুরোপুরি গনতন্ত্রে বিশ্বাস বিশ্বাসী। উপযুক্ত সময়ে জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠনে অামরা দৃঢপ্রতিজ্ঞ।‘
৭৭ সালে অনুষ্ঠিত হল গনভোট। ৮৮.৫% ভোট কাস্টিং আর তার মধ্যে ৯৯% হ্যা ভোট (!!!)-বিশ্ব গনতন্ত্রের ইতিহাসে সর্বকালের রেকর্ড।
কিন্তু সংসদ নির্বাচন করতে হলে তো তার একটা দল চাই ! আইয়ুব খানের মৌলিক গনতন্ত্রের মতোন তাই তিনি প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করবেন, তারপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, সব শেষে সংসদ। উদ্দেশ্য স্থানীয় সরকারের এই নির্দলীয় নিবাচনের জয়ীদের প্রলুব্ধ করে, রাস্ট্র ক্ষমতার দিয়ে প্রভাবিত করে রাতারাতি তৃনমূলে সংগঠন গড়ে তোলা!
জিয়া তখনো ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন। আড়াল থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট সাত্তারকে নির্দেশ দিলেন নতুন দল গঠন করতে। এভাবে ৭৮ এর ফেব্রুয়ারীতে জন্ম হয় জা.গ. দলের। জিয়া নিজে এই দলের সদস্য হলেন না, তবে তার মন্ত্রিসভার প্রায় সবাই সদস্য হলেন। তারপড় গড়লেন নতুন ফ্রন্ট- জা.গ.দল ছাড়া তাতে ছিল- ন্যাপ (পিকিং), মুসলিম লীগ, ইস্ট বেংগল কমিউনিস্ট পার্টি আর সাম্যবাদী দল ইত্যাদী। ৭০ আর ৭৩ এর নির্বাচনে আওয়ামিলীগ এই সব দলের পায়ের নিচের মাটি কেড়ে নিয়েছিল। তো এই জোটের প্রাথী হিসাবে ৭৮ সালের জুন মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাড়ান জিয়া।
আজকে মিডিয়ায় সারাক্ষন শোনানো হচ্ছে বিএনপির মতো দলকে ছাড়া নির্বাচন করলে সরকার ভুল করবে, সরকারের দায়িত্ব বিএনপি যা চাবে তাই দিয়ে হলেও নির্বাচনে আনার সব দায়িত্ব সরকারের। অথচ ৭৮এর নির্বাচনে তখনকার একমাত্র প্রতিষ্ঠত দল আওয়ামিলীগকে আনার কোন উদ্যোগই জিয়া নেন নি, মিডিয়া টু শব্দ টি করেনি। জিয়ার প্রতিদন্দী তাই ছিলেন জনতা দলের (!) প্রার্থী ওসমানি।
ভোট কেমন হল ? এক কপি ভোটার তালিকার দাম শুনলেই বুঝবেন- মাত্র ৬০ হাজার ডলার !! জেনারেল (অব
এবার সংসদ নির্বাচন, ৩০০ প্রাথী তো দরকার ! জিয়া তাই ফ্রন্ট ভেংগে দিলেন, তাদের নিয়েই ৭৮ এর সেপ্টম্বরে গড়লেন বিএনপি ! জিয়া হলেন চেয়ারম্যান। কাগজে কলমে এসময়ে তিনি সম্পূর্ন বেসামরিক ব্যক্তি। কিন্তু কাকে বানাবেন নতুন সেনা প্রধান। অনেক ভেবে নিয়োগ দিলেন পাকিস্তান ফেরত এরশাদ কে ! এরশাদ কি যোগ্যতার নিরিখে নিয়োগ পেয়েছিলেন ? তার চরিত্র আর যোগ্যতার দৌড় আজ অন্তত আমাদের জানা !
৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচন হল, সামরিক আইন কিন্তু উঠানো হয় নি ! বিরোধী দলগুলোর আপত্তি কেউ কানেই তোলে নি ! মিডিয়া আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় না থাকলে যেমন চুপ থাকে তেমন চুপ !
সবশেষে জাতির ভিবেক সাংঘাতিক ভাইদের কাছে প্রশ্ন, জিয়া যখন সেইসময়কার ১ মাত্র প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আওয়ামিলীগকে বাদ দিয়ে প্রসিডেন্ট নির্বাচন করল, তখন আপনাদের বিবেক কোন দেশী সুতার টানে বাধা ছিল ? ১ লাইনো কি কোথাও কেউ লিখেছিল ?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




