somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সালভাদর দালি- আমি তাকে স্বপ্নে পেতে চাই

১১ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ পর্যন্ত দালির নারীয়াল আবেদন আমাকে মুগ্ধ করে। দেখে থাকবেন দালির নগ্নমুখরতা। দালিকে আমার ভালো লাগে। আপনার ভালো লাগে। আপনার মেয়ের ভালো লাগে। আপনার শাশুড়ি এবং কাজিনেরও ভালো লাগে। আপনার যেই ছেলেটা ক্রিকেটে যায়, যেই ছেলেটা মিউজিকে- আপনি দালির কথা বলেন। বলেই দেখেন, মিউজিশিয়ান ছেলেটা ড্রাম বাজাতে গিয়ে ছবি আঁকার স্বপ্ন বাঁধবে। ক্রিকেটের মাঠেও তাকে ঘিরে ধরতে পারে স্বপ্নব্যগ্রতা। দালিকে মনে করলে ছেলেমেয়েরাও বড় হতে চায়। এবং দালিরা ছোট নয়



আমার স্পেন যেতে মন চায়। কাতালান শহর। গাছপালা থেকে থাকবে। চওড়া সড়ক, এবং লাল কালার গাড়িও পাওয়া যাবে। স্পেন যেতে মন চায়। অথচ বাসে উঠলে গুলিস্তান এসে নামি। আরেকদিন আমাকে মতিঝিল নামিয়ে দিয়েছে। কাতালানের মাটি খেয়েছেন দালি। মাঝে মাঝে বাতাস খেতেন। দালির আম্মা তার জন্য স্পেনের দুর্দান্ত শরাব বানাতেন। দালি যেদিন জন্মেছিলেন, ছোট ছিলেন না। বড় ছিলেন। হাসতেন এবং কাঁদতেন। পিতা সেইদিন থেকে পরিচয় দিয়ে গেলেন, আমার সন্তান, সালভাদর দালি। আমি, আপনি, আপনার স্বামী মৃদু হাসির মতো করলাম।

দালির বাসায় লোকেরা ভিড় করতে পারেনি। অতোটা পারেনি। দালি হাসতে হাসতে চলে গেছে দূর। বাড়ি থেকে দূর। গোফ করেছে, প্রেম করেছে। দালির স্বপ্নালুতা আমাকে আটকে ফেলেছে। বড় অদ্ভুত! দালিও বহিষ্কৃত। একাডেমী থেকে। এই সংবাদ আমাকে আনন্দ দিয়েছে। আমরা কাশতে কাশতে বলেছি- দ্য গ্রেট সালভাদর দালি। দালি তুখোড় ছিলেন। আপনি খুব কষ্ট পেতে পারেন, আপনি দালির প্রেমে পড়তে পারেন নি। দালিকে অবশ্যই গালা দখল করে নিয়েছে।
দালি একটা প্রতিষ্ঠানের একাডেমী অব ফাইন আর্টসে যোগ দিলেন। বন্ধু-টন্ধু করে গেলেন। দালি তো জন্মেছিলেন উনিশশো চার সালে। উনিশশো পঁচিশে দালির একক চিত্র প্রদর্শনী হলো। দালি হাঁটা নিলেন। দালি তো থামেন নি। কেউ কেউ থামেনা, অবশ্যই আপনার দালিকে ভালোবাসতে মন চায়। দালির সাথে শুইতে মন চায়



গালার সাথে তো সম্পর্ক হলো। বন্ধুত্ব ছিলো অনেক লোকের সাথে। গার্সিয়া লোরকাকে তো চেনেন।
বিশেষ নাট্যকার, ছোটমাত্রার সমকামী। লুই বুনুয়েল। একে চেনার কথা না। ফিল্মমেকার। কথা হলো, দালি শুধু আঁকলেন না। ব্যাপক শিল্পক্ষুধা! জীবনে অনেক করেছেন। গালাকে বিয়ে করলেন। গালা একজন মহিলা মানুষ। দালির থেকে তো অবশ্যই বড়। এবং পত্রিকার ভাষায় অবশ্যই আবেদনময়ী। গালাকে দালি নগ্ন করে এঁকেছিলেন। অনেকবার এঁকেছিলেন। সেইসব সব ছবি দেখে শান্তি পাই। দালি এইভাবে বেঁচে রইলেন। একদিন দালিকে স্বপ্ন পাওয়ার ইচ্ছা আছে। দালি গালাকে আঁকছে। আমি সেই ঘরে। আপনি আমার সঙ্গে যেতে পারেন।

দালি তো অনেক ইজম করে গেছেন। শিল্পোবোদ্ধারা আলোচনাও কপচেছেন। স্যুরিয়ালিজম, দাদাইজম, ক্যাপিটালিজম। আমাকে মজা দিলো কি জানেন? ক্যান্ডাওলিজম। দালি অনেকবার গালাকে আরেক পুরুষের কাছে পাঠিয়েছেন। দূর থেকে বসে হেসেছেন। আমিও যেমন দালিকে দেখে হাসছি। আপনি কি কনফিউশনে পড়ে গেলেন? আমি সত্য বলছি কিনা? দালি একটা ষোল মিনিটের শর্ট ফিল্ম বানিয়ে একশো বছর ধরে পৃথবীকে কনফিউজড করে রেখেছে।

শিল্পক্ষুধা আর নগ্নতায় নিমগ্নতা। দালি এমনটাই চেয়েছেন, এভাবেই হেঁটেছেন। আপনার বাসার কাজের মেয়ে বাজারে গেলে যেরকম সাজতে চায়, দালিও সেজেছিলেন, গোঁফে, কাপড়ে- প্রেমময়তায়, এবং কবিতায়। দালি একটা আত্মজীবনী লিখেছিলেন। সাইত্রিশ বছর বয়সেই। লোরকা যখন দালিকে সমকামিতার ঘরে আবেদন করেছিলো, দালি নাকচ করেছেন, এবং বিপুল কষ্ট থেকে লোরকার চিত্র এঁকেছেন। লোরকাও তো দালিকে নিয়ে কবিতা গুছিয়েছেন। আপনি পুরুষ হলে সেই কবিতা আমি আপনাকে পড়ে শোনাতাম। আপনি যেমন মুগ্ধ হতেন, দালিও মুগ্ধ হয়েছিলো। ওই যে গালাকে বিভিন্ন পুরুষের কাছে পাঠালেন, দালি মূলত এইখানে কষ্টের খরিদ্দার। কষ্ট ছিটিয়ে ছবি এঁকেছেন। উদ্ভট কল্পনাপ্রসূত- আপনি আপনার তলপেটে রক্তের কালার দিয়ে লিখুন- সালভাদর দালিরা কালে নয়, মহাকালে একবারই বিল্ডআপ হয়। বলুন- দালির জন্য মায়া হয়।



কয়েকটা মুভির সাথে মিশেছিলেন। একটা উপন্যাস লিখেছেন। পোশাকেরও ফ্যাশন করেছেন। দালির নামে আমেরিকায় এবং স্পেনে দুইটি মিউজিয়াম আছে। যেদিন গুলিস্তান এবং মতিঝিলের পাট চুকে যাবে, আমি আর আপনি সেগুলোতে যাবো। সকল চিত্রকর্ম দেখার পরে স্যুভেনির শপ এবং কফি পার্লার হয়ে যখন বের হয়ে আসবো, সালভাদর দালি আঁকা থাকবে গায়ে। টি-শার্টে। আপনি আপনার মূল্যবান অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো দালিকে উৎসর্গ করবেন। করে দিবেন।

যাই করেন জীবদ্দশায় দালি, মারা গেছেন গালার আগে। বড় কষ্ট পেয়েছেন। আপনি মারা গেলে যেমন আমি কষ্ট পাবো। দালি বলেছেন, না গালা মরেনি, গালা তো মরার নয়। আমাদের চোখ টলটল করে উঠেছে। দালি উনিশশো উননব্বই পর্যন্ত ছিলেন। আমরা দালির জীবন থেকে চোখ নিয়ে তার সৃষ্টিতে মজতে চেয়েছি। যাই করে থাকেন তিনি, শেষ পর্যন্ত তিনি একজন চিত্রকার। লিজেন্ড। দালি বলেছেন, একজন চিত্রশিল্পী তুলি আর রঙ দিয়ে গরীব মানুষকেও ধনী করে দিতে পারেন। দালি অনেকবার করেছেন। দেখিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন। দালির অনেক আর্ট আমি আপনাকে খুঁটিয়ে দেখে নিতে বলছি। আমি অল্প কইটাই পেয়েছি। দ্য পার্সিসটেন্স অফ মেমোরি আমাকে ভাবিয়েছে। দ্য ফেস অফ ওয়ার দেখে চমকে উঠেছি। কিন্তু ভালো লাগার মন্ত্রটা যেখানে, আচ্ছা আপনাকে আমার ভালো লাগে কেনো? দালি যেই স্কুলবালিকার ছবিটা এঁকেছেন। আমি সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেছি। আমারও ভাবতে ইচ্ছে করে, আপনে একদিন কোন স্কুলের বালিকা ছিলেন। আপনি ঘরের জানালা থেকে নদী দেখতে চাচ্ছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×