হাসপাতালে স্বামী কমল দাসের হাত ধরে বসে আছেন স্ত্রী মীনা রানী। সঙ্গে শিশুসন্তান। কমল দাস এই হাত দিয়ে গত ২৬ বছর খাদ্য অফিসের আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন। কর্তাব্যক্তিদের মনের আবর্জনা তো তাতে পরিষ্কার হয়নি। আত্মহত্যা করে যেন সেই আবর্জনা ঝাড়লেন তিনি
ছবি: প্রথম আলো
এটা একটা কপি পেষ্ট পোষ্ট....
জীবন দিয়ে প্রতিবাদ!
কমল দাস পটুয়াখালী জেলা খাদ্য দপ্তরের একজন ঝাড়ুদার। ২৬ বছর ধরে তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে (মাস্টাররোল) কাজ করছেন। অনেক দেনদরবার করেছেন, কিন্তু চাকরি স্থায়ী হয়নি। সম্প্রতি বাউফল খাদ্যগুদামে ঝাড়ুদারের পদ খালি হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও হয়েছে। সেখানে স্থায়ী নিয়োগের আশ্বাসও পেয়েছেন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। তার জন্য গাছ-গরু বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছেন। কিন্তু ওই পদে নিয়োগ পেয়েছেন অন্য একজন। শেষমেশ কমল দাস গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের অফিসে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
পটুয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে অফিসে এসে পানি টেনে আনছিলেন। বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে পটুয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কক্ষের সামনে গিয়ে ঢলে পড়লেন তিনি। অফিসের লোকজন তাঁকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কমল (৫২)।
হাসপাতালের চিকিৎসক (জুনিয়র কনসালট্যান্ট-মেডিসিন) আতিকুর রহমান জানান, বিষপানের ফলে কমল দাসের মৃত্যু হয়েছে।
সহকর্মীরা জানান, তাঁর জায়গায় অন্যজনের চাকরি হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন কমল। কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। চাকরিটা স্থায়ী করার জন্য এক সপ্তাহ ধরে কমল প্রকাশ্যে অফিসের কর্মকর্তাসহ অন্যদের অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। বলতেন, এটা না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কিন্তু একে সবাই কথার কথা হিসেবেই নিয়েছেন।
কমলের স্ত্রী মীনা রানী হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে চাকরি স্থায়ী হওয়ার আশ্বাস পেয়ে শেষ সম্বল বিক্রি ও ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়ায় কমল ভেঙে পড়েন। কিন্তু বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবেন, এমনটা তো ভাবিনি।’
কমলের জ্যাঠাতো ভাই মদন দাস জানান, বাড়ির পুকুর লিজ দেওয়ার পর অংশীদার হিসেবে কমল পাঁচ হাজার টাকা পান। এ ছাড়া তাঁর দুটি গরু ও তাঁর অংশের গাছ বিক্রি করে চাকরি স্থায়ী করার জন্য টাকা জোগাড় করেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান সিকদার কমলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম কমলকে বাউফলের খাদ্য গুদামে চাকরিটা দিয়ে স্থায়ী করতে। এ লক্ষ্যে নির্বাচনী পরীক্ষায় তাঁকে সর্বোচ্চ নম্বর পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থায়ী চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। এ ক্ষমতা মহাপরিচালকের।’ তিনি বলেন, ‘এখন আমরা চেষ্টা করব কমলের জায়গায় তাঁর স্ত্রীকে মাস্টাররোলের চাকরিটা দেওয়ার।’
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নরেশ চন্দ্র কর্মকার জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ হাসপাতালে গেছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্বামীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মীনা রানী। তিনি জানান, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি বাদ দিয়ে প্রতিদিন কমলের বেতন ছিল ৬৫ টাকা। এ দিয়ে খেয়ে-না খেয়ে তাঁদের সংসার চলত। এ অবস্থায় কয়েক বছর ধরে কমল তাঁর চাকরিটা স্থায়ীকরণের জন্য অফিসে ধরনা দিতে থাকেন। তাঁদের দুটি শিশুসন্তান অনুপ (৮) ও প্রান্তকে (৪) নিয়ে দিশেহারা মীনার আর্তনাদ, ‘সন্তানদের নিয়ে এখন কোথায় যাব, কার কাছে যাব।’
এইসব জারজ সন্তান দের কি কোনদিন বিচার হবে ন........
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ২:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




