নাম শুনে অবাক হচ্ছেন? আমি খুব একটা অবাক হইনি। কারণ আমি বাংলাদেশের এমন স্থান গুলোতে সব সময়ই হানা দেই। এমন জিন্দা গাজীদের টিলায় কি বন্দেগী হয় এসব দেখি। মজা পাই মানুষদের নানা রকম কর্মকান্ড দেখে। তবে এই বন্দেগী টিলায় বাৎসরিক কোন উরসের সময় যাওয়া হয়নি বলে ফাঁকা টিলাটাই দেখে আসতে হয় আমাকে। তবে টিলার প্রাকৃতিক পরিবেশ আমার পছন্দ হয়েছে খুব।
সিলেট বিভাগের বর্তমান হবিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক তরফ রাজ্য সিলেট ইতিহাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । গৌড়, লাউড় ও জয়ন্তীয়ার ন্যায় এটিও শ্রীহট্ট বা সিলেটের অন্যতম প্রচীন রাজ্য। মুসলিম বিজয়ের অনেক আগে থেকেই এটি ত্রিপুরার সামন্ত রাজ্য ছিল। এই রাজ্যের শেষ হিন্দু রাজার নাম ছিল আচাক নারায়ণ। শাহ জালাল কর্তৃক সিলেট বিজয়ের এক বছর পর (১৩০৪ খ্রিস্টাব্দ) শাহ জালালের সঙ্গী অনুসারী সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন ১২ জন সঙ্গী সাথীদের নিয়ে তরফ অভিযানে যান। সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে এটি বিজিত হয়ে, তরফ ও বার আউলিয়ার মুলুক নামে পরিচিত হয়।
তরফ রাজ্য বিজয়ী সৈয়দ নাসির উদ্দীনের সঙ্গী ১১ আউলিয়া ও দরবেশ কিছু দিন তরফে অবস্থান করার পর ইসলাম ধর্মের প্রচার কাজ অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নিজ নিজ আস্তানা গড়ে সেখানেই জীবনাতিবাহিত করেন। তার মধ্যে অন্যতম শাহ সুলেমান ফতেহ গাজী বাগদাদী। তার আস্তানা হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজারে। তার পাশেই রয়েছে একটা পাহাড়ি টিলা। শাহ আবু তৈয়ব চিশতী আরজুমন গাজী নামে জনৈক পীরের নামে এই টিলার নাম করা হয়েছে। আরজুমন গাজী ফতেহ গাজীর ভাতিজা বলে জানা যায়।
(২) টিলাতে উঠার জন্য রয়েছে এমন মাটির ধাপ কাটা এবং এই সাইনবোর্ড।
(৩) উপরে রয়েছে বিশাল বট অশথ্থের কয়েকটি গাছ, যা এই টিলার প্রধান আকর্ষণ।
(৪/৫) আশে পাশে দেখলাম ফুটে আছে কিছু শটি ফুল।
(৬) অশথ্থ ডালে উঁকিঝুকি মারছে একটা ছোট বসন্ত বাউড়ি পাখি।
(৭/৮) অশথথের ফল খাচ্ছে বুলবুলি পাখি ও কাঠবিড়ালী।
(৯) এক পাশে দেখলাম চালা দেওয়া একটা কুয়োর মতো।
(১০) ভেতরের গর্তটা ডানে বামে একটু প্রশস্ত করা আছে। উরসের সময় নাকি এর ভেতর থেকে ধুয়ো বের হয়। বুঝতেই তো পারছেন ব্যপারখানা কি।
(১১) চালার উপরে আবার বেশ কিছু বাণী লেখা।
(১২) আসর বসানোর জন্য রয়েছে এমন বেশ কিছু আসন।
(১৩) রয়েছে একটা ছাদ পেটানো ছোট দালান। কোন একটা উরসে গেলে বুঝা যাবে কোথায় কি হয়।
(১৪) টিলার শেষ প্রান্তে রয়েছে এমন কিছু বাড়ি ঘর।
(১৫) এখানকার প্রধান আকর্ষণ অবশ্যই এই জোড়া অশথ্থ, একটা গাছ অন্যটার ভেতর ঢুকে গেছে।
(১৬) টিলার উপর সম্ভবত পানির ব্যবস্থা নাই, দেখলাম নিচ থেকে পানি নিয়ে উপরে উঠছে।
(১৭) এখানে সব থেকে আমার ভালো লেগেছে প্রাকৃতিক পরিবেশে অনেক পাখি দেখে। আর রয়েছে এমন কিছু পাখির বাসাও।
(১৮) টিলা থাকে নামলেই মাঝখানে রেল পথ তার উপারে ফতেহ গাজীর মাঝার।
(১৯) ফতেহ গাজীর মাঝার।
(২০) মাঝার ছেড়ে সিলেটের পথে কয়েক কদম এগোলেই শাহজি বাজার রেল স্টেশন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৭:৫১