somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে..( ১৮)

২৯ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্ব (১৭)

মাস তিনেক হয়ে গেল রুমির সাথে আর যোগাযোগ রাখা হয়নি, তারপর একটা কাকতালিয় ব্যাপার ঘটল, ইমতিদা আমাকে একদিন দুষ্টামি করে বলল আজ অফিস শেষে আপনার হবু মামা শ্বশুর এর বাসায় যাব, যাবেন নাকি? তার মানে রিমিদের বাসায় যাবে, বললাম হুম যাব। ব্যাপার হল রিমি নতুন পিসি কিনেছে এবং ওটা কিনে দিয়েছে ইমতিদা, এখন ওখানে ইন্টারনেট সংযোগ এর আয়োজন করতে হবে, গননেট ডায়ালআপ সেটিং এর ব্যাপারে ইমতিদা নিজেই গিয়ে ঠিক করে দিয়ে আসবেন, সেই সূত্রে রিমিদের বাসায় যাওয়া। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম ইমতিদা আমার সাথে দুষ্টামি করছে, পরে দেখি সত্যি সত্যিই যাওয়া হচ্ছে।

অফিস শেষে সন্ধ্যার পর আমরা রিমিদের বাসায় গেলাম, কলিংব্যাল টিপতেই রিমি এসে দরজা খুলে দিল, ইমতিদাকে ভেতরে আসেন বলেই চোখে চোখ পড়ল আমার সাথে, হা করে কয়েক সেকেন্ড অবাক হয়ে তাকাল তারপর বলল শাকিল ভাই আপনি আসবেন কল্পনাও করিনি, ইমতিদাকে ইংগিত করে বলল আপনি এতো বড় মেহমান নিয়ে আসলেন একটু ইংগিত দেবেননা? বলে হাসতে হাসতে আমাদের ডাইনিং রুমে নিয়ে গেল, সোফায় বসলাম, রিমি তখনো হাসছে আমার দিকে তাকিয়ে, হাসিটা যেন ভেতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দিয়েই আসছে, আর সে চাইছে কন্ট্রোল করার জন্য, আমি শুধু চুপচাপ বসেছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম আমি কি সত্যিই একটা হাসির পাত্র হয়ে গেলাম!

চা নাস্তার আয়োজন চলছে সেই ফাঁকে ইমতিদা ভেতরে গেলেন রিমির সাথে সেটআপ এর কাজটা সেরেই পরে খাওয়া যাবে, ইমতিদাকে কাজে লাগিয়ে দিয়েই রিমি এসে বসল আমার কাছে, বলল তারপর বলেন কেমন আছেন, অফিস কেমন চলছে চিরাচরিত প্রশ্নগুলো। তারপর রিমি নিজ থেকেই আমাকে বলল দেখুন শাকিল ভাই, কম বেশি আপনাদের ব্যাপারটা আমি জানি এবং আমি রুমিকে সিরিয়াসলি জিজ্ঞাসা করেছি আপনার ব্যাপারে, সে কিছু ডিসিশান নিয়েছে কিনা, কিংবা তার মতামত কি? উত্তরে সে আমাকে বলেছে আপনার জন্য ওর খুব খারাপ লাগছে কেননা আপনি ওকে খুব পছন্দ করেন কিন্তু আপনার সাথে ফিউচার কেন্দ্রিক কিছুই সে ভাবছেনা, তাই আপনি এবং রুমির শুভাকাংখী হিসেবে এটুকু বলতে পারি আপনারতো মাত্র ক্যারিয়ার শুরু ওদিকে মনোযোগ দিন, পৃথিবীতে কি শুধু রুমি আছে? অন্য কেউ নেই! আমি নিশ্চিত আপনার কপালে যার নাম লিখা আছে সে রুমির চাইতেও অধিক সৌভাগ্যবতি হবে, আপনার সম্পর্কে আমি যতটুকু জানি সেই প্রেক্ষিতে কথাটা বলছি।

- আমি বললাম থাক সেই সব কথা, আমার একটা কাজ করে দেবেন?

= হুম কি বলেন..

- আমার কিছু কবিতা জমেছে, আর দুইটা বাছাই করা গানের ক্যাসেট আছে, রুমিকে দেয়া যাবে? আমি ওগুলো সব সময় সাথেই রাখি, অফিস ব্যাগে, যদি কখনো দেখা হয়ে যায় তাহলে দেব বলে

= আচ্ছা ঠিক আছে, আমার কাছে রেখে যান আমি ওর কাছে পাঠিয়ে দেব অথবা আমি ভার্সিটি যাবার পথে ওর বাসা হয়ে দিয়ে আসব।
তারপর বলেন, চাকরী কেমন চলছে? অন্য কোথাও ট্রাই করছেন? নাকি এখানেই থেকে যাবেন?

- আগে মাষ্টার্স রেজাল্ট টা দিক তারপর দেখা যাবে, তাছাড়া এই কোম্পানীতো তেমন মন্দ না, ফিউচার তেমন মন্দ হবেনা বলে মনে হচ্ছে, আর জানেনইতো চাকরীর বাজার এর কি হাল অবস্থা

= আসলে একটা কথা আপনাকে বলতে চেয়েছিলাম অনেক আগেই কিন্তু আপনার সাথে তো আমার যোগাযোগ হবার কথা না, তাই ওটাও বলার চান্স ছিলনা, আজকে যখন চান্স পেয়েই গেলাম তাহলে বলি

- হুম নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, বলুন

= আপনি কি জানেন? আপনার অফিসের চেয়ারম্যান এর সাথে রুমির বাবার একটা দ্বন্দ আছে?

- কই নাতো! কিসের দ্বন্দ?

= আপনিতো হ্যাড অফিসে বসেন, আপনাদের একটা মিল আছেনা, রুমিদের বাড়ির ওদিকটায়, ওখানে আপনাদের মিল এর পাশেই যে হাই স্কুলটা আছে রুমির আব্বু সেই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আপনাদের চেয়ারম্যান চাচ্ছে স্কুলটা ওখান থেকে উঠিয়ে দিয়ে অন্য কোথাও করে দেবেন, স্কুল এর জন্য ওনি মিল এক্সটেনশান এর কাজ করতে পারছেননা, রুমির বাবাও নাছোড় বান্দা, স্কুল এর বেশ কিছু জায়গা রুমির দাদা স্কুল এর জন্য দান করে গেছেন, তাই রুমির বাবা রাজি হচ্ছেননা স্কুলটা অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে, এই স্কুলে রুমির দাদা শিক্ষকতাও করতেন, জায়গা ও দান করেছেন সব মিলিয়ে রুমির বাবা ওনার বাবার স্মৃতি এবং সম্মান ক্ষুন্ন করে স্কুল সরাতে রাজি হচ্ছেননা, আপনাদের চেয়ারম্যান সাহেব প্রথমে একটু লোভ দেখিয়েছিল কিন্তু পরে যখন বুঝলেন রুমির বাবাকে পয়সা দিযে কেনা যাবেনা এখন ওনি জোর করেই দখল করতে চাচ্ছেন, মামলা মোকদ্দমা চলছে এখন ওটা নিয়ে, তাই বলছিলাম কি রুমি যদি আপনার ব্যাপারে রাজিও হয় ওর বাবা কিন্তু কোন ভাবেই রাজি হবেননা, আপনি যদি অন্য কোথাও চেষ্টা করনে তাহলে আমি নিজেই রুমির আম্মুর সাথে কথা বলে দেখতে পারি।

ইমতিদার কাজ শেষে চা পর্ব চলছিল এমন সময় হঠাৎ শুনলাম কলিং ব্যাল এর শব্দ, রুমি এসেছে মামার বাড়ি হঠাৎ করেই তার বড় ভাইকে নিয়ে, অপ্রত্যাশিতভাবে দেখা হয়ে গেল...

চলবে........

পরের পর্ব (১৯)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:৪১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×