somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অস্তমান রবি ও রবীন্দ্রনাথ ( ফিকশন, রঙ্গ, ব্যাঙ্গ হবে কিছু একটা!)

১৭ ই মে, ২০১১ রাত ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(ছয় মাস পরে ব্লগে আবারো লিখছি। কি ধরনের সাড়া পাবো, জানিনা। তবে আনন্দ লাগতেছে অনেক! :D )


১)

এ রকম ভাগ্য সবার হয়না, আমিও জানি। এটা আমার সৌভাগ্য না কৌ-ভাগ্য তা আপনাদের হাতে। এরকম আমার জীবনে বর্তমানে প্রায়ই ঘটে, আজকাল আর খুব একটা অবাক হইনা। তবে প্রথমবার যা ভয় পেয়েছিনা! আরে, সে তো আর যেমন তেমন মানুষ না! লম্বা শ্মশ্রুযুক্ত, মায়া মায়া চোখের রবীদা!

সে অনেক প্যাচানো কাহিনী। কোনো এক সায়েন্স ফিকশন গল্পে এর ব্যাখ্যা দেবোনে। আজ নাইলে কাহিনী কি সেটা বলি! এইচ.জি.ওয়েলস এর টাইম মেশিনটা তিনি এক বাঙ্গালীকে দিয়ে গিয়েছিলেন, এই ভেবে যে তার যন্ত্রটা যত্নে থাকবে। কারণ, বাঙ্গালী জাতী তখনো এতো শিক্ষিত হয়নাই যে এমন একটা টাইম মেশিন চালিয়ে ফেলবে! সে বাঙ্গালী আবার আমার পুর্ব পুরুষদের আত্মীয়দের হাতে এই জিনিস দিয়ে পটল তুললেন। ঘুরে ফিরে বছর পাঁচেক আগে সেটা আমার হাতে এসে পরলো। আমি তো দেখেই চিনে ফেললাম! কথা না বলে চুপচাপ কাজ শুরু করলাম, আবিষ্কার করলাম যে যন্ত্রটা কাজ করেনা। আমি আবার সব ঠিকঠাক করে, নিজে কিছু লাগালাম। আমি একজন স্বশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার, কি মনে করেছেন আমাকে! এখন এইটা দিয়ে সময়ের আগে পরে তো আসা যাওয়া করাই যায়, আবার অতীত কিংবা ভবিষ্যত থেকে কাউকে বর্তমানে আনাও যায়!

প্রথমেই চ্যাম্বারটা খালি করে মেশিনের লাল বোতাম টা ছোয়ার সাথে সাথে দেখি হিটলার এসে হাজির! ওরে আল্লাহ, এসেই আমার গলা চেপে ধরলো!
- এটেনশন!
- কি?
- তুই কে?
- আমি বৈজ্ঞানিক এরশাদ
- তুই এরশাদ? আমার আদর্শে একনায়কতন্ত্র করিস ভালো কথা। মাইয়া কেলেংকারীতে জড়াইলি ক্যান? আমারে কখনো দেখসিস মাইয়া নিয়ে লটর পটর করতে?
- স্যার, আমি বৈজ্ঞানিক এরশাদ, লুল এরশাদ না।
- এইডা কুন দ্যাশ?
- বাংলাদেশ স্যার।
- জিয়ার দ্যাশ?
- না মানে....
- কি কইলি? না মানে আবার কি? এইডা জিয়ার দ্যাশ। আইয়্যুব, টিক্কা, জিয়া, এরশাদ এডি আমার পুলা। ওইডা ক্যার ছবি?
- বঙ্গবন্ধু।
- ছবি নামা, কুইক!
- আপনে কিন্তু ...
- কি কইলি? আমার ব্যাটেলিওন কই? ফায়ার কর শালারে !

আমি তাড়াতাড়ি হিটুরে ধাক্কা মেরে চ্যাম্বাব্রে ঢুকিয়ে দিলাম লাল বোতাম চেপে। মুহুর্তের মধ্যে হিটু ভ্যানিশ! শরীর ঘামে ভিজে গেছে! মেশিন অফ করে আমি গেলাম বৌকে নিয়ে বাইরে ডিনার করতে। আজকে আবার প্রিন্স উইলিয়াম আর তার দশ বছরের প্রেমিকা ক্যাথেরিনের বিবাহ। আমার বৌ এর খুবি মন খারাপ, কেনো আমি তারে এইভাবে বিয়ে না করে কাজি ডেকে বিয়ে পড়িয়ে, খোরমা খাইয়ে বিয়ে করলাম। তাকে খুশি করতে শপিং করে, ডিনার শেষে রাত ১১টায় বাসায় আসলাম। বাসায় এসে ল্যাবে ঢুকে আলো জ্বালাতে গিয়ে লক্ষ্য করলাম টাইম মেশিনের চিপায় কে যেনো অন্ধকারে বসে আছে। আমি লোহার পাইপ নিয়ে আস্তে আস্তে গেলাম, চোর-ডাকাতের বড়ই উপদ্রব। গত সপ্তাহে আমার ল্যাব থেকে ইঁদুর মারার নিউক্লিয়ার র‍্যাটস্কোপ মেশিনটা চুরি করে নিয়ে গেছে। ঐটা দিয়ে এ বছরে শান্তি আর ফিজিক্স, ২টাতেই নোবেল পাওয়ার একটা চান্স ছিলো!

কাছে গিয়ে বাড়ি দিয়ে মাথা দু’ভাগ করে দিবো, এর মধ্যেই তিনি চিৎকার করে উঠলেন, “আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, মারিসনে তোরা কেহো”
দু পা পিছিয়ে গেলাম। লাইট জ্বালাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল! স্বয়ং রবী ঠাকুর আমার সামনে দাঁড়িয়ে! পাইপ ফেলে এক দৌড় দিয়ে তার পা ছুয়ে বললাম, “রবী দা, আপনি কহন আইলেন?” প্রকান্ড এক থাপ্পড়ে আমি আছরে পরলাম।
- ‘ড়’ আর ‘র’ এর পার্থক্য জানিস নে গর্দভ?
- মাপ কইরা দেন! বুঝতে পারিনাই। অক্ষম!
- আবার তো সেই ড় দিয়েই কথা বলছিস!
- আমি তো এমনেই কথা বলি। আমার মা-বাপ, বৌ সবাই এমনেই কথা বলে!
- তোদের কাছে “কিছু না পরা” আর “কিছু না পড়া” একই কথা!
- লজ্জা দ্যান ক্যান?
বলেই বুঝলাম এ-কারের সংবৃত আর বিবৃত উচ্চারন নিয়ে গুলিয়ে ফেলেছি। থাপ্পড় থেকে বাঁচার জন্য দ্রুত লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেলাম। দেখলাম, রবী ঠাকুর মাথা নিচু করে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলছে।



২)

আজকাল রবীবাবুর সাথে আমার বেশ খাতির। ঢাকা শহর দুইজন একইসাথে ঘুরে বেড়াই। পরশু গেলাম শপার্স ওয়ার্ল্ডে, গিয়ে কি কাহিনী!
- ওহে এরশাদ
- বলেন দাদা
- তোদের এ কি হাল!
- ক্যান? কিইচ্চে?
- তোরা তো আমারও আগের যুগে, আর কি রবীন্দ্রপুর্ব যুগে ফিরে গিয়েছিস দেখছি!
- কি বলেন!
- হ্যা তাইতো। জানিস বোধ হয়, বাঙ্গালী সমাজে আমাদের বাড়ির নারীগনই প্রথম ব্লাউজ পরবার প্রচলন শুরু করে। প্রথম দিকে এদেশের নারীরা তো শুধু এক প্যাচের শারী পরতো, লজ্জা নিবারনের জন্য তা যথেষ্ট ছিলোনা। আধুনিক বাঙ্গলা পরিবার বলতে তো আমরাই ছিলাম! তো, ব্রিটিশ মহিলাদের জ্যাকেটের অনুকরণে আমরা ব্লাউজের চলন শুরু করলাম।
- অনেক জ্ঞান দিলেন। এইবার বলেন কি বলতে চান। ক্ষুধা লাগছে?
- ওরে না! বলছিলাম আর কি, অস্বাস্থ্যকর, রুগ্ন এই নারীগুলোর পোশাকের এ হাল কেনো!
- কি ফ্যাসাদে পরলাম! আপনে ওই দিকে তাকান ক্যান? বয়ফেরেন্ড আইসা ক্যাঁচা দিলে বুঝবেন!
- ক্যাচা? এর মূল কিরে? আধুনিক শব্দ?
- রাখেন আপনের মুল! ওই যে, পুলাপান গুলা আইতাছে! বুইড়া বয়সে ভীমরতি ধরছে! আজকে মজাডা বুঝবেন। দেখেন, আমি আপনেরে চিনিনা, ভুলেও আমি আপনের সাথে এই কথা ইনাগো বলবেন না !

“এক্সকিউজ মি দাদু! ক্যান উই হ্যাভ অ্যা স্ন্যাপ উইদ ইউ?” এক স্বল্পবসনা নারী কাতরিয়ে উঠলো! রবীদা কিছুক্ষন হা করে আমার দিকে চেয়ে রইলেন।
“এই মুন্নী, এই ওল্ড ম্যান দেখতে একদম রবী ট্যাগোরের মতো!”
শীলা নামের এক মেয়ে রবীদার দাড়িতে হাত দিয়ে বললো, “ক্যান উই হোল্ড দিস? উই ওয়ানা ক্যাচ আ স্ন্যাপ উইদ দিস!”

- এইসব কি হচ্ছেরে হতচ্ছারা!
- ফটো তুলবে!
- এই নাঙ্গী নারীরা আমার সাথে বিম্ব গঠনে এতো উৎসাহী কেনো? আর আমার দাড়িতে টানও দিচ্ছে দেখি!
- কথা বাড়ায়া লাভ নাই! ফোডু তোলার, তুইলা ক্ষ্যান্ত দেন!

তাড়াতাড়ি ছবি তুলে আমরা রীতিমতো দৌড়ে বাইরে এলাম।
- আমাকে কিছু চ্ছত্র লিখিবার তরে পত্র দিতে পারবি বাছা? আর একখানি মসী?
- অ্যাঁ?
- ২টা লাইন মাথায় পাক খাচ্ছে। লিখে রাখতাম।
- আপনে বলেন, আমি মুবাইলে লিইখা রাখি।
- মুপাইল কি বস্তু?
- মুপাইল না, মুবাইল। এইটা দিয়া দুরের মানুষের সাথে কথা বলন যায়।
- দুরালাপনি?
- না এটা চালাইতে পানি লাগেনা। চার্জ লাগে। এটা দিয়া গান শুনন যায়, ছবি, ভিডিউ দেখন যায়!

ধানমন্ডি লেকে গিয়ে বসলাম। রবীদা মন খারাপ করে বসে আছেন। মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিছুক্ষন আগে দুষ্ট প্রকৃতির এক ছেলে হঠাৎ দৌড়ে এসে তার দাড়িতে এক হেচকা টান দিয়ে “আসল আসল” বলে চিৎকার করতে করতে ছুটে গেলো। বেচারা বেশ বেদনাযুক্ত হয়েছে বোঝা যায়।
- কলিযুগ, বুঝলিরে এরশাদ!
- কলিচুন? ইউ মীন Ca(OH) ?
- সে আবার কি বস্তু?
- বাদ দেন। আপনের জ্ঞানের বাইরে। গান শুনবেন? আপনের নিজের গান আছে আমার মুবাইলে।
- ওরে সত্যি বলছিস? একটু শুনিয়ে আমার কর্ণে প্রশান্তি নিয়ে আয়রে বাছা!
আমি “রক উইথ রবীন্দ্রনাথ” এলবামের “ আজি ঝড় ঝড় মুখর বাদর দিনে” গানটি ছাড়লাম। ঠাকুর দা অবিশ্বাসের ভঙ্গীতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
- এই গান আমার?
- তা কার?
- আমি এই গানে কবে সুর প্রদান করলাম?
- আজিব তো! এই গান আপনে লেখেন নাই?
- বাচনভঙ্গী তো কিছুই কর্ণে ঠেকছেনা! শুধু যান্ত্রিক বাদ্যযন্ত্র আর এক নারী কন্ঠের উচ্চ আবেশ শোনা যাচ্ছে!
- আপনে যে একটা কি, আমি নিজেও বুঝতাছিনা!
- ঠিকই বলেছিস রে! আমি যে কি, তোরা আজও বুঝলিনা।
বোকার মতো তিনি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে চুপটি মেরে রইলেন। আমি মিলার “ডিস্কো বান্দর” শুনতে লাগলাম। “আঊ” !


৩)

মন-মেজাজ খারাপেরও অধিক। দুই দিন ধরে হাজতে মাছি মারছি। এরে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়াটাই ভুল হয়েছে। পরশুদিন সন্ধ্যায় দুইজন রমনা পার্কে আইস্ক্রীম খাচ্ছি আর গাছ দেখছিলাম, তখনই ঘটলো ঝামেলা!
- এ কি বস্তুরে এরশাদ? আমার ভেতর বাহির, সব তো শীতলতায় ছাপিয়ে যাচ্ছে!
- এইটা আইস্ক্রীম।
- বাহ! জিভে ছোয়ানো মাত্র সমস্ত শরীরে যেনো কোমল কোনো শীতল দেবী পরশ বইয়ে যাচ্ছে। এর মোচার ন্যায় আকৃতি দেখে অবাক বনে গিয়েছি!
- এইটা কোন আইস্ক্রীম।
- কোন আইস্ক্রীম? ( চোখ-মুখ কুচকে জিজ্ঞেস করলেন)
- হুম। কোন আইস্ক্রীম
- আরে তাই তো জিজ্ঞেস করলাম, এটা কোন আইস্ক্রীম?
- আরে, আমি কি কইতাছি তাইলে! কথা বুঝেন না? এই জ্ঞান নিয়া বিশ্বকবি হইছেন? এইটাই তো কোন আইস্ক্রীম!
রবীদা বড্ড লজ্জা পেলেন। তার কবিত্ব নিয়ে কোনোদিন কেউ একটা প্রশ্ন করতে পারেনি আর সামান্য মোচাকৃতি এক শীতলকারক মালাই কিনা তাকে কবি পদ বর্জিত করে দিচ্ছে? তিনি বেশ ক’টি অযথাই দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বাম দিকে তাকালেন এবং দেখলেন এক শাড়ী পরা মেয়ে বেঞ্চে বসে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। তিনি মাথায় চ্ছত্র লিখে ফেললেন-
“ চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে,
উছলে পরে আলো,
ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধ শুধা ঢালো”
আমি খুবই মেজাজ খারাপ করে তাকে বললাম, “আপনার স্বভাব পরিবর্তন হইলোনা। বাপ-দাদা বজরাতে কইরা বাদী নিয়ে ঘুরতো, ভাবছিলাম আপনে বোধ হয় ভালা আছিলেন। এখন তো দেখি আপনে এক ডিগ্রী বেশি!”
“এ সব কি বলছিস রে? একের পর এক আঘাত করেই যাচ্ছিস আমায় তুই? বিধাতার নিজ হাতে গড়া এক মৃৎ গড়নার নারীকে দেখে কবিতা রচনা করছিলাম”।
“এই ভদ্রমহিলা কে জানেন?” আমি জিজ্ঞেস করলাম। তিনি মাথা নেড়ে জানালেন যে তার জানা নেই। আমি উত্তর দেবার আগেই মহিলা এসে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনারে দুই জনেই? নাকি আরো কেউ আছে?”

আমি হাসিমুখে তাকে বোঝাতে লাগলাম যে আমরা আসলে কাস্টমার নই। ভাগ্যের নিদারুন পরিহাস ( আইরনি অফ ফ্যাট!) তখনই পুলিশ এসে আমার দুই হাত আর ঠাকুর দা’র দাড়ি চেপে ধরে কুৎসিত অঙ্গ-ভঙ্গীতে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, “ ফুর্তি, না? আজকে ফুর্তি কারে বলে হাজতে দেখবা!” পুলিশের জীপে উঠার পর সারা রাস্তা তিনি চুপ রইলেন। কিন্তু, পেটে ডলা পরার পর আর থাকতে পারলেন না, গান গাইলেন –
“আমার সকল দুখের প্রদীপ জ্বেলে
দিবস গেলে করবো নিবেদন।
আমার ব্যাঁথার পূজা হয়নি সমাপন”


৪)

- দাদা
- বল রে বাছা
- আপনে নাইলে চইলা যান।
- আমিও তাই ভাবছিলাম। এখানে আর আমার থাকা সম্ভব নারে। বাঙ্গালী আর সেই বাঙ্গালী নেই।
- আবার অতীতে গিয়ে কি করবেন?
- নতুন করে সব কবিতা, গান লিখবো। লিখবো হিংস্রতা নিয়ে, লিখবো যৌনতা নিয়ে, লিখবো কালো-ধোয়া নিয়ে। লিখবো তোর আমার অদৃষ্ট দুঃস্বপ্ন নিয়ে। এইসব ভালোবাসা, দেশপ্রেম, মুল্যবোধের কোনো মুল্যই তোরা রাখলিনারে। কি হবে নোবেল দিয়ে? এই নোবেল কি তোদের কে কিছু শিক্ষা দিয়েছে? দেয়নি, বরং আরো জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করেছে। গিয়েই প্রথমে গীতাঞ্জলীর পান্ডুলিপিটা পুড়িয়ে ফেলবো।
- আমাদের কিছুই কি আপনার ভালো লাগেনি?
- লেগেছে। গতকাল সকালে তোর ঘরের জানালা দিয়ে দেখলাম, পাশের আংরেজি ইশকুলের ছোটো ছোটো বাচ্চা গুলো ভাঙ্গা ভাঙ্গা উচ্চারনে আমার সোনার বাংলা গাইছে। আমার নয়ন জলে ভরে গিয়েছিলো রে!
ঠাকুর দা টাইম মেশিনের কাছে হেটে গেলেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “ ওখানে কিছু লিখে এসেছি। আমাকে ভুলে যাস নে। তোরা আমায় নিয়ে যতোই ঠাট্টা করিস না কেনো, আমি ঠিকই তোদের ভালোবাসি। তোরা যে আমার ভাষার বাহক, তোদের ভালো না বেসে উপায় আছে নাকি, বল?”

নিজেকে খুব ছোটো মনে হতে লাগলো। মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে রবীদা চ্যাম্বারে ঢুকে হাত নেড়ে বিদায় জানালেন। আমি লাল বোতামটা টিপ দিলাম। ঘড়ঘড় শব্দ হলো। মুহুর্তের মধ্যেই চেম্বারটা শুন্য হয়ে গেলো। খুব মন খারাপ নিয়ে আমি আমার টেবিলে ফিরে এলাম। ঠাকুরদার জন্য মনটা খুব কাদছে। ঠাকুরদার লেখা কাগজটা হাতে নিলাম। গোটা গোটা অক্ষরে কয়েকটা লাইন লিখে গেছেন-

“আয় আরেকটি বার আয়রে সখা প্রানের মাঝে আয় মোরা,
সুখের দুখের কথা কবো প্রান জুরাবে তাই।

মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি দুলেছি দোলায়।
বাজিয়ে বাঁশি গান গেয়েছি বকুলের তলায়।

হায় মাঝে হলো ছাড়াছাড়ি গেলাম কে কোথায়।
আবার দেখা যদি হলো শখা প্রানের মাঝে আয়।

পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়
ও সেই, চোখের দেখা প্রানের কথা সে কি ভোলা যায়”


৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×