উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের বাগুয়াটা গ্রামের শেখ আহম্মদ আলী ভেন্ডারের পুত্র ওবায়দুল তার অন্তঃস্বত্বা স্ত্রী রাজিয়া আক্তার রুমা (২২) কে গত ১৮ জুন শুক্রবার জুমার নামাজের পর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। গোপালপুর থানায় এ বিষয়ে রুমার পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য ওবায়দুল ও তার পক্ষের লোকজন মেয়ের পিতাকে নানা ভাবে হুমকীÑধামকী দিচ্ছে বলে মেয়ের পিতা জানান।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ৪মাস পূর্বে বীরনলহরা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের কন্যা রাজিয়া আক্তার রুমা’র বিয়ে হয় বাগুয়াটা গ্রামের শেখ আহম্মদ আলী ভেন্ডারের পুত্র ওবায়দুল হকের (৩২) সাথে। হাতের মেহেদীর রং শুকাতে না শুকাতেই রুমার উপর শুরু হয় অত্যাচারের ষ্ট্রিমরোলার। মেয়ের পিতা মেয়ের দরিদ্র পিতা অতিকষ্টে ২ ভরি স্বর্ণসহ ১০হাজার টাকা নগদ যৌতুক হিসেবে প্রদান করেন।
মাদকাসক্ত ওবায়দুল মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে রুমাকে তার পিতার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বলত। কিন্তু রুমা অসহায় পিতার আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে রুমার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাত। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে রুমা বাবার বাড়িতে গেলে রুমার বাবা রুমাকে মাদকাসক্ত ওবায়দুলের কাছে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ওবায়দুরের বড়ভাই মামুন রুমার পিতাকে আর কোন নির্যাতন করা হবে না মর্মে স্বীকৃতি দিয়ে রুমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপরও থেমে থাকেনি ওবায়দুলের অত্যাচার। নেশার টাকা যোগার করার জন্য ওবায়দুল তার নিজ নামে থাকা নন্দনপুরে পৌনে চার শতাংশ ভূমি বড় ভাই রতনের নিকট বিক্রয়ের জন্য প্রচেষ্টা চালায়। রুমা ও মামুন এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। রুমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর শুনে রুমার পিতা আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলে পৌছেই রুমাকে নিয়ে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ডাক্তার রুমাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। তাৎক্ষনিক এ্যাম্বোলেন্স যোগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এব্যাপারে রুমার পিতা বাদী হয়ে গোপালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু হত্যাকারী ওবায়দুল হক ও তার পক্ষের লোকজন মেয়ের পিতাকে মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকী-ধামকী দিচ্ছে বলে মেয়ের পিতা জানান। তিনি আরো জানান, আমার মেয়ে হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই। আর যেন কারো সন্তান এভাবে কেউ হত্যা না করে।
আলমনগর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাজমা বেগম বলেন, আমরা এলাকাবাসী রুমা হত্যার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
আলমনগর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আমিনুল ইসলাম মারুফী বলেন, রুমা আমার ছাত্রী হিসেবে আমি তার রুহের মাগফেরাত কামনা সহ তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি এবং হত্যাকারী সুবিচারের আশাবাদী।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




