বগুড়ার ধুনটে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মারপিটে আরো দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এরা হলেন ধুনট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিনিধি মাসুদ রানা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি রফিকুল আলম। বিজয় দিবসের মঞ্চে এক রাজাকার নৃত্য পরিবেশন করেছে মর্মে ১৭ ডিসেম্বর দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় দৈনিক প্রথম আলো'র প্রতিনিধি মাসুদ রানাকে উপজেলা চেয়ারম্যান মোবাইল ফোনে তার কার্যালয়ে ডেকে নেন। সাংবাদিক মাসুদ রানা সেখানে পেঁৗছলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি নূরুন্নবী তারিক এবং আওয়ামা লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীসহ কয়েকজন তাকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে। এছাড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বনি আমিন মিন্টুসহ কয়েকজন যুবলীগ কর্মী সাংবাদিক রফিকুল আলমকে তার ব্যক্তিগত অফিস থেকে তুলে নিয়ে যায়। উপজেলা চেয়ারম্যানের সামনে নিয়ে যাওয়ার পর বনি আমিন মিন্টু ও তার ভাগ্নে রনি দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি রফিকুল আলমকে বেদম মারপিট করে আহত করে। পরে তাদেরকে উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে উপজেলা যুবলীগের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আড়াই ঘন্টা আটক রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।সাংবাদিকরা উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নূরুন্নবী তারিক বলেন, প্রকাশিত সংবাদের জন্য একই স্থানে দুঃখ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে সংবাদ প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের ছাড়া হবে না।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ও বগুড়ায় কর্মরত সাংবাদিকগণ পুলিশ সুপার ও স্থানীয় এমপির সঙ্গে যোগাযোগ করে। একপর্যায়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওসি ইয়াসিন আলী তাদেরকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উদ্ধার করে। বর্তমানে আহত সাংবাদিক মাসুদ রানা ও রফিকুল আলম ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার সময় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিএনপি নেতাকর্মীদের মারপিট ও একটি বাসায় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এঘটনার ছবি তোলার অপরাধে যুবলীগ নেতা গোলাম মুহিত চাঁন ও ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল মজিদ মিল্টন ধুনট প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক করতোয়া ও ইত্তেফাকের প্রতিনিধি এনামুল বারী বাদশাকে মারপিট করে ক্যামেরা কেড়ে নেয়। পরবর্তীতে ছবি মুছে ফেলে ক্যামেরা নষ্ট করে ফেরত দেয়। এক দিনের ব্যবধানে তিনজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করায় ধুনটে কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। উক্ত ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ধুনট থানার ওসি ইয়াছিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




