শুধু ঘুম পায়
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
রাত ৩টায় সেহেরী খেয়ে ৪টায় ঘুম দিয়ে ৭টায় উঠে অফিসে যাবার জন্য প্রস্তুতি নেয়া। অফিসে যাবার পরে সবচেয়ে বেশী যে ব্যাপারটা কাজ করে গত ৪টি দিন ধরে তা হলো, প্রায় ১৭ ঘন্টা রোজা। এটা মনে পরলেই ঘুম পায়। I-) কখন বাজবে ৫টা আর কখন বাসায় ফিরেবো। বাসায় ফেরার পরে ধরে আরেক ভয়, আরো ৩ ঘন্টা বাকি ইফতারের। তখন কি আর করার ঘুম ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে আসি বিছানায়। ৮টায় যখন অ্যালার্ম বাজে চোখ মুছতে মুছতে রান্না ঘরে যেয়ে বাসায় যেই কয়জন বান্দা নিজেদেরকে রোযাদার বলে বলে স্বীকৃতি দেন তাদের সাথে কথা বলতে বলতে ইফতারের আয়োজন করা। সেখানেও ঘুম পায়। I-) কোনমতে জুস, খেজুর, পাউরুটি দিয়ে ইফতার শেষ করার পরে সিগারেটের অগ্রভাগে একটু লাল হলেই মনে হয় পৃথিবীর সকল ঘুমদেবীরা যেন আমাকে চেপে ধরছে। কি আর করার, কোনভাবে হামাগুরি দেবার মত করে বিছানায় এসে একটা বালিশ মাথার নিচে, আর একটা বুকে চেপে ধরে দেশের ইফতারীর স্বপ্ন দেখতে দেখতে হারিয়ে যাই।
এর মাঝে যেদিন রান্নার দিন থাকে, সেদিন মনে হয় পালিয়ে যাই। গতকাল ঠিক এমনই ছিল আমার, অনেকভাবে চেহারার মাঝে অনেক দুঃখীভাব নিয়ে এক রুমমেটকে বললাম ভাই আজ খুব মাথা ব্যাথা করছে, যদি তার মনে কোন দয়া হয়। কিন্তু না, আমাকে খালি হাতের তার দুয়ার থেকে ফিরে আসতে হলো। বলে, ভাই সববুঝি রান্না থাকলে সবারই সেদিন মাথা ধরে।
কি আর করা, ফ্রিজ থেকে মাছ বের করে বেসিনে ভিজিয়ে চলে এলাম নিজের বিছানা মামার কাছে। মোবাইলে ১ ঘন্টা পরের অ্যালার্ম সেট করে আবারো ঘুম ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে আসলাম। I-) রাত ১০টা, মোবাইলের অ্যালার্ম বাজার আগেই ল্যাপটপে ইয়াহুতে কল দেয় উপরতলা থেকে আরেক রুমমেট। “কি ভাই, ক্ষিধে লেগে গেলতো”। যাক কি আর করার, একখানা সিগারেটের আয়ু শেষ করার প্রস্তুতি নিয়ে, ল্যাপটপটা হাতে করেই রান্নাঘরের দিকে অনেকটা হামাগুরি দেয়ার মত করেই হাটতে শুরু করি। মনে হচ্ছিলো, দুইটা কাঠি দিয়ে দুই চোখের পাতাকে আলাদা করা ছাড়া মনে হয় কোন উপায় নেই।
শুরু করলাম নিজের বউএর জীবনে সুখ আনার প্রক্রিয়া। পিঁয়াজ, কাঁচা মরিচ গুলো কুচি করার পরে, মাছের আঁশ ছারানো। যদিও এখানে মাছের তেমন একটা আঁশ থাকেনা, তারপরও একটু না করলে আবার খাবার সময় পাওয়া গেলেতো লংকা কান্ড বাধিয়ে ফেলবে আমার বাকি হাউসমেটরা। এমনিতেই আমার রান্নার বি-অশেষ শুনাম। তারপরে একে একে মাছ, ডাল এবং ভাত রান্না শেষ করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রান্নাঘরেই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ের ৩টি ঘন্টা কাটিয়ে দিলাম, যা হয়তো ঘুমিয়ে কাটালে হয়তোবা স্বপ্নে পেলেও পেয়ে যেতাম স্বপ্নে পাওয়া ঔষধের মত কোন মহৌষধ, আর তা দিয়ে বাংলাদেশে যেয়ে গুলশানের মোড়ে একখানা লিল্লাহফির ব্যবসা চালু করা যেত। সেটাও মিস করলাম। এরপর আবারো নিজের বিছানায় ফিরে আসা। বসে বসে ভাবছি এখন যদি খাই তাহলে সেহরীর সময় আর খেতে পারবো না, আর সেহরী বেশী আগে খেয়ে ফেললে ১৭ ঘন্টার ধকল সামলানো সম্ভব হবেনা। এই কথা ভাবতে ভাবতেই আমারো ঘুম ভাইয়া কান ধরে তার দরবারে ডেকে নিয়ে যায়। আবারো ১ঘন্টা পরে উঠে সেহরীর প্রস্তুতি। সেহরী খেতে খেতে ভাবছিলাম, আহ এবার একটা ঘুম দিতে পারবো কমপক্ষে টানা ৩ ঘন্টা। খেয়ে বিছানায় এসে একখানা সিগারেট সাহেবকে জাগ্রত করে কখন হারিয়ে গেলাম ঘুমভাইয়ার দরবারে তা টের পেয়েছি যখন নাকে এসে ধাক্কা দিচ্ছিলো বিছানার চাদর পোঁড়া ধোঁয়া।
১৫টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে
ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি
গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
জানা আপুর আপডেট
জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।
বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন
বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।
এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন