somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক যে ছিলো লিটিল মিস নটি.....

০৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এক যে ছিলো লিটল মিস নটি! পুচ্চি একটা মেয়ে কিন্তু তার দুষ্টামীর জ্বালায় সবাই অস্থির!!!! এমনই এক গল্প ছিলো পুচ্চি একটা মেয়ের। দিন দুপুরে বাবা মা আর বাড়ির সকল লোকজনেদের জ্বালায় তার দুষ্টুমীগুলো বাঁধা পড়তো তাই সে তার সকল দুষ্টামীগুলো তুলে রাখতো ঠিক দুপুরে মা যখন ঘুমিয়ে, বাড়ির অন্যান্যরাও যে যার মত বিশ্রামের অবসরে সে সময়টার জন্য! তখনই চলতো তার দুষ্টামীর অভিযান আর ধরা পড়ে পিঠের উপর দুমদাম...... হা হা হা, সে যাইহোক বড় হবার পর আমিও বই এর পাতায় খুঁজে পেলাম এমনই এক লিটিল মিস নটি এর।


১. লিটিল মিস নটি- এমনই সে এক দুষ্টু মেয়ে যে ঘুমের মধ্যেও সে দুষ্টুমী করতে ভুলতো না। একদিন এক ছুটির সকালে ঘুম ভেঙ্গে উঠেই সে জানালা দিয়ে দেখলো মিঃ আপিটি হেঁটে চলেছে বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে আর অমনি তার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেলো। সে আপন মনে হেসে উঠলো- হে হে হে .... সে দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে দাঁড়ালো বাড়ির পাঁচিলের পাশে। মিঃ আপিটি হেঁটে যাবার সময় পিছন থেকে গাছের এক লম্বা ডাল দিয়ে তার মাথা থেকে সে এক খোঁচায় ফেলে দিলো তার হ্যাটটা। এরপর সে উঁকি দিলো মিঃ গ্রিডীর বাড়ির জানালায়। মিঃ গ্রিডী ওভেনে বসিয়েছিলো চিকেন। দুষ্টু মিস নটি গিয়ে নক করলো তার দরজায়। মিঃ গ্রিডী যেই না দরজায় গেলো জানালা দিয়ে তার চিকেন নিয়ে পালিয়ে গেলো দুষ্টুটা। এইভাবে আর তো পারা যায় না তো পাড়ার সকলে মিলে ঠিক করলো কেমনে তাকে শিক্ষা দেওয়া যায়।


তারা কি যেন প্লান করলো । আর সেদিন বিকালে যখনই মিঃ নোজি ঘুমাচ্ছিলো, মিস নটি তার ঘুমন্ত নাকে রং লাগাতে পেইন্ট ব্রাশ নিয়ে গেলো সেখানে আর অমনি ঘটলো এক ভয়ংকর কান্ড......এর পর একের পর এক ........
এখানে ক্লিক করলেই দেখা যাবে যে কি শিক্ষা সে পেয়েছিলো সেদিন
ভাগ্যিস আমার নটিবেলায় এমন কোনো প্লানার ছিলো না....:(
যাইহোক বলছিলাম মিঃ মেন সিরিজের কথা। মিঃ মেন সিরিজ এমনই সব মজাদার গল্পের সমাহারে রচিত যা শিশুদের পড়ে শোনালে বা পড়তে দিলে পিচ্চিপাচ্চাগুলো যেমনই মজা পাবে তেমনি শিখতে ও বুঝতে পারবে অনেক ভুলগুলোই। যেমন-
২. মিঃ নোজি - মিঃ নোজী এমনই এক নোজী যে ট্রেইন বা পার্কে সেইম নিউজপেপার পড়া পাশের ব্যাক্তির নিউজপেপারেই চোখ দেবে নিজেরটা রেখে। আর যদি কখনও কারো এনভেলপের মুখবন্ধ লেটার টেবলে পড়ে থাকতে দেখে তো সেটা ছিড়ে ভেতরের খবর না পড়া পর্যন্ত তার শান্তি নেই। আবার রাস্তায় যেতে যেতে মানুষের বাড়ির পাঁচিলের ভেতর কি হচ্ছে বা অন্যের রুমের বন্ধ দরজার কি-হোলে চোখ রাখার ইচ্ছাটুকুও সে সামলাতে পারে না।
তারপর যা হবার তাই হলো সবাই মিলে শিক্ষা দিলো মিঃ নোজী সাহেবকে। একের পর এক অন্যের বিজনেসে নাক গলাতে গিয়ে শিক্ষা পেয়ে পেয়ে অবশেষে সে সেই বদভ্যাস থেকে ক্ষ্যান্ত হলেন। হা হা হা এই বইটা শুধু পিচ্চিপাচ্চা না অন্যের ব্যাপারে অযথা নাক গলানো বড় মানুষেরও পড়া উচিৎ এবং শিক্ষা নেওয়া উচিৎ।
নাক গলানো মিঃ নোজী


৩. লিটল মিস চ্যাটারবক্স- এই মিস চ্যাটারবক্স বইটা পড়ে শুনাতে গিয়ে আমার ক্লাসের জায়নামনির সাথে আমার কি কান্ডটাই না ঘটেছিলো তা আমি আগেও লিখছিলাম সে যাইহোক আজ বলি এই বই এর মিস চ্যাটারবক্সের কথা। লিটিল মিস চ্যাটারবক্স এমনই এক বকবকি বালিকা যে সে এত কথা বলতো যে তার কথার পাশে উপরে নীচে ডাইনে বায়ে কোথাও কেউ আর কথার ফাকে গলতে পারতো না তো সে একদিন এক ব্যাংকে গেলো জব করতে । একজন কাস্টোমার আসলো-
কাস্টোমার- গুড মরনিং.... ( যেই না বলেছে সে অমনি)
লিটল মিস চ্যাটারবক্স- (এক লম্বা নিশ্বাষ নিয়ে শুরু করলো) আজকেরসকালগুডবটেতবেকালকেরমতনাবরংতারআগেরদিনযাছিলোতারথেকেমোটেওভালোনাএরআগে
২০১৬তেযেমনছিলো২০১৩...
কাস্টোমার তো থ! চেক নেবার জন্য সে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়েই রইলো কিন্তু মিস চ্যাটারবক্স থামলো যখন ব্যাংক বন্ধ হবার সময় হলো তখন। পরের দিন তার চাকরী গেলো......এরপর সে গেলো রেস্টুরেন্টে-
একজন আসলো আজকের স্যুপ কি? সেইম ঘটনা আজও ঘটলো।
মিস চ্যাটারবক্স - আজকেরসকালএমনকালতেমনছিলোপরশুমন । এরপর সে থামলো মিডনাইটে গিয়ে আর যখন থামলো তখন রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাবার সময় হয়েছে। এখানেও যথারীতি সে জব হারালো এবং জব নিলো হ্যাট শপে। সেখানেও একই অবস্থা!
অবশেষে সে তার স্যুইটেবল জব পেলো! কোথায় জানো! জবটা ছিলো টেলিফোন অফিসে।প্রতি সেকেন্ডে টাইম বলার জব যা তাকে কখনও থামতে দিত না! হা হা হা কোন কোন আপুর অবস্থা এই মিস চ্যাটারবক্সের মত! সেসব আপুরা অতিসত্বর ফোন অফিসের ভ্যাকান্সির খোঁজ নাও। কোনো কোনো ব্যাংকে বা অফিসে ফ্রন্ট ডেস্কে আমি এমনই কাজের প্রতি উদাসীন কিন্তু বকবকা চ্যাটারবক্স আপুর সন্ধান পেয়েছি তাদেরকে এই বই এক এক কপি উপহার দেবো ভাবছি।


৪. মিঃ স্লো- মিঃ স্লো কাজে কামে এমনই স্লো সকালের নাস্তা খেতে বসে দুপুরের লাঞ্চ টাইম পার করে আর দুপুরের লাঞ্চ করে রাত দুইটায়। একবার এক বন্ধুর ক্রিসমাস গিফট এর থ্যাংকইউ লেটার লিখতে তার ইসটার টাইম হয়ে গেছিলো। তো একদিন সানডের পত্রিকার এক পাতাতেই জবের নিউজ খুঁজতে সানডে থেকে ওয়েডনেসডে সে পার করেছিলো। তো সে জব নিলো টিভিতে। তার কাজটা ছিলো নিউজ রিডিং। তো সন্ধ্যার নিউজ ঢুলে ঢুলে টেনে টেনে পড়তে পড়তে সে সন্ধ্যা থেকে মিড নাইটে চলে গেলো এবং পরদিনই তার চাকুরী গেলো। এরপর সে ট্যাক্সি চালাতে গেলো। ট্যাক্সি ড্রাইভার। যথারীতি যাত্রীকে ৩ টার ট্রেইন ধরাতে স্টেশনে ৪ টায় নিয়ে গেলো। সেই জব ছেড়ে সে গেলো আইসক্রিম ফ্যাক্টরীতে। আইসক্রিম বানাতে বসলো সামারে আর তার বানানো শেষ হলো শীতকালে। উলেন কাপড়ের ফ্যাক্টরীতে সে শীতকালেে কাপড় শুরু করে শেষ করলো গরমকালে। একে একে এই মিঃ স্লো রেসিং কার, ট্রেইন, স্পিড বোট সব ট্রাই করার পরে উপযুক্ত জব খুঁজে পেলো স্টিম রোলারের ড্রাইভার হয়ে। যারা যারা মিঃ অর মিস স্লো স্টিম রোলারের জব খুঁজে নিতে পারেন এই গল্প থেকে শিক্ষা পেয়ে।


৫. লিটল মিস কুইক- মিঃ স্লো এর পারফেক্ট জুটি হবার দরকার ছিলো এই মিস কুইকের কিন্তু ইনি আবার আরেকজন। তিনি এতই কুইক যে কোনো কিছুই কেয়ার না করা কেয়ারলেস। বিছানা গুছাতে তড়িঘড়ি উলটা নষ্ট করে রাখে। দৌড়ে প্লেট আনতে গিয়ে ভেঙ্গে রাখে। দাত মাজার সময় এতই জোরে আর তাড়াতাড়ি পেস্টের টিউব চাপ দেয় যে সব পেস্ট সবখানে ছড়ায় পড়ে কিন্তু ব্রাশে লাগেনা। একদিন কি হলো এক শরতের সকালে সে কেয়ারলেসলি দরজা খোলা রেখে বাইরে চলে গেলো। পথে পোস্টম্যানকে দেখে সে তাড়াতাড়ি হেল্প করতে গিয়ে তার সব চিঠি টেনে নিলো এবং এখানে সেখানে ছড়িয়ে একশেষ করলো পোস্টম্যান তাকে ধরার আগেই সে হাওয়া। এরপর মিঃ স্ট্রংকে হেল্প করতে গিয়ে তার সব ডিম ভেঙ্গে শেষ করলো। এরপর সে চিড়িয়াখানা গিয়ে তাড়াতাড়ি করে যু কিপার কিছু বলার আগেই তার হাত থেকে ভুট্টার ব্যাগ কেড়ে নিয়ে তাকে হেল্প করতে ছুটলো এবং লায়নের খাঁচায় ঢুকে লায়নকে এতই তাড়াতাড়ি ভুট্টা খাইয়ে দিলো যে লায়নও কিছু বুঝে উঠবার আগেই মাংসের বদলে ভুট্টা খেয়ে ফেললো। চোখের পলক ফেলবার আগেই মিস কুইক হাওয়া। মানে সে এতই কুইক ছিলো যে লায়ন পর্যন্ত ভুট্টা খেয়েও তাকে ধরতে পারলো না আর বোকা বনে গেলো। হা হা হা লিটিল মিস কুইক
৬. লিটিল মিস শাই- থাকতো শহর থেকে বহূ দূরের জঙ্গলের মাঝে এক নির্জন বাড়িতে। সে এতই লাজুক লতা ছিলো যে কখনও শপিং এ পর্যন্ত যেতনা। নিজের বাগানেই চাল ডাল ফল ফুলুরী সব্জী যা হত তাই খেয়ে বেঁচে থাকতো। একদিন এক পোস্টম্যান এলো। সে দরজা নক করলো কিন্তু মিস শাই এতই লজ্জাবতী যে তার পক্ষে দরজা খুলে পোস্টম্যানের হাত থেকে চিঠি নেওয়া সম্ভব না । সে টেবিলের নীচে ঢুকে কানে হাত দিয়ে বসে রইলো। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে তাকে না পেয়ে পোস্টম্যান দরজার নীচে দিয়ে লেটার রেখে চলে গেলো। মিস শাই অনেকখন ওয়েট করলো ফুটস্টেপ চলে যাওয়া পর্যন্ত। বলতে গেলে সারাদিন সে কিচেন টেবিলের নীচে কাটিয়েছিলো। অনেক পরে সে লেটার খুলে যা দেখলো তাতে তার প্রেশার বেড়ে গেলো দশগুন। মিঃ ফানি তাকে ইনভাইট করেছে এক পার্টিতে। আগামী শনিবার বিকাল ৩ টায়। এ খবর পড়ে শাই এর অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো! সে মনে মনে বললো- না না সেখানে অনেক মানুষ থাকবে আমি মরে গেলেও যেতে পারবোনা। সে একবার ভাবে যাবে আরেকবার ভাবে না না না। দুশ্চিন্তায় সারারাত না ঘুমিয়ে কাটলো তার। পরের দিনগুলো তার খুব খারাপ গেলো। এরপর আসলো শনিবার-
সকাল থেকে সে সময় গুনতে লাগলো ১টা ২টা ৩টা বাজলো। সে সোফায় মন খারাপ করে বসে আছে। তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। কেনো সে এত লাজুক! কেনো যেতে পারছেনা? এমন সময় দরজায় কে যেন নক করলো। সে ভয়ে, লজ্জায় সোফার পিছে লুকালো। ভুলে দরজা খোলাই ছিলো। মিঃ ফানি সোজা তাকে ধরে নিয়ে গেলো পার্টিতে। সেখানে অনেক হই হুল্লোড়! অনেক ফান !অবশেষে তার ভালো লাগতে শুরু করলো কারণ সে সেখানে মিঃ কোয়ায়েটের দেখা পেলো। দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী হয়ে চুপচাপ হাসি মুখে বসে রইলো! :) পারফেক্ট জুড়ুয়া হয়ে। :)


৭. মিঃ কোয়ায়েট- থাকতো বনের ধারে। হই হুল্লোড় তার একদমই পছন্দের নয়। কিন্তু তার বাড়ি যে বনের মাঝে ছিলো সেই দেশের নাম লাউডল্যান্ড সেখানে কেউ আস্তে ধীরে কিছুই করতে পারেনা । নিশব্দে চলা অভ্যাসই নেই। সবাই চিৎকার করে কথা বলে, ধড়াম করে দরজা লাগায়। সে সেসব পছন্দ করতোনা।তাই বনের মাঝে অনেক দূরে একা একা থাকতো। কিন্তু শপিং এ যেতে হতো । শপকিপার চিল্লিয়ে শুনতে চাইতো কি লাগবে আর মিঃ কোয়ায়েট ফিসফিস করে বলতো। সে শুনতে পেতনা। শেষে কি আর করা। দরকারী জিনিস না নিয়েই সে ফিরে আসতো। বুচার, সব্জিওলাা মিল্কম্যান কেউ তার কথা শুনতে পেতনা। একদিন পোস্টম্যান এলো এবং সে দেখলো মিঃ হ্যাপী তাকে হ্যাপীল্যান্ডে যাবার দাওয়াৎ দিয়েছে। সেখানে সে পরদিন গেলো এবং অনেক দুঃখ করে তার প্রবলেম বললো মিঃ হ্যাপীকে। মিঃ কোয়ায়েট অনেক দুঃখ নিয়ে বললো আমি তো কখনই জব পাবোনা, কেউ আমার কথা শুনতেই পায় না। মিঃ হ্যাপী তাকে জব খুঁজে দিলো। জবটা লাইব্রেরীতে। যেখানে কোনো কথা বলতে হয়না শুধুই ফিসফিস ছাড়া। বাহ এই না হলে ফ্রেন্ড!


৮. মিঃ টল- মিঃ টল ছিলো অনেক অনেক লম্বা। এত লম্বা কেউ কখনও এর আগে দেখেনি। সে এটা নিয়ে খুবই কষ্টে থাকতো। কখনও কেউ তার মুখে কোনো হাসি দেখেনি। রাতে শুলে তার হাঁটু দুটো গিয়ে ঠেকতো ছাঁদে। সে এক পাশও ফিরতে পারতোনা। হাঁটু বেরিয়ে যেত খাটের বাইরে। সে যখন হাঁটতো বড় বড় গাছের পাশ দিয়ে হাঁটতো না। হাঁটতো সে সেসব টপকে টপকে। একদিন পথে যেতে যেত কে যেন তাকে ডাকছিলো-
মিঃ টল মিঃ টল
মিঃ টল এদিক ওদিক দেখলো । কোথাও কেউ নেই। সে শুনতেও পাচ্ছিলো সে শব্দটা খুব ক্ষীন। অনেক কষ্টে বুঝতে পারলো শব্দটা আসছে ঘাসের কাছাকাছি থেকে। আর সেটা মিঃ স্মল। মিঃ টলের দুঃখিত মুখ দেখে মিঃ স্মল ঠিক করলো তাকে সে খুশী করবে আর তাই সে তার সাথে হাঁটতে চাইলো কিছুক্ষন। কিন্তু কোনো লাভই হলোনা কারণ একটা জিরাফ আর ইঁদুর যদি পাশাপাশি হাঁটে তো কি হবে?কেউ কারু কথাই শুনতে পাবেনা। তখন সে বললো, তাকে তার মাথার উপরে নিতে। মিঃ টলের মাথার উপরে উঠে মিঃ স্মল মহা খুশী। কারণ সে আগে কখনও এত উপর থেকে কিছু দেখতে পায়নি। তার এত ছোট্ট শরীর নিয়ে তাই সেও অনেক দুঃখে ছিলো। এরপর সে মিঃ টলকে বললো চলো আমরা স্যুইমিং করি। কিন্তু মিঃ টল খুব দুঃখ করে বললো, আমার পা হাঁটু পর্যন্ত পানিতে ডুববে তার চেয়ে আমি তীরে বসে তোমার স্যুইমিং দেখি।
এমন সময় মিঃ টিকেল এলো। বললো তোমাকে এত দুঃখিত লাগছে কেনো? মিঃ টল বললো তার দুঃখ তার লম্বা পা নিয়ে। টিকেল বললো ঠিক যেমন তার দুঃখ তার এতগুলো হাত নিয়ে, একে একে মিঃ নোজি, মিঃ গ্রিডি সবাই বললো সবার সমস্যার কথা।
তারপর মিঃ টল বসে বসে ভাবলো সবার কথা, নোজির লম্বা নোজ, টিকলের টিকলিং হ্যান্ডস এইসব নিয়ে। তারপর অনেক হাসলো সে । বুঝলো পৃথিবীতে সবারই কিছু না কিছু সমস্যা আছে যার নেতিবাচক ও ইতিবাচক ফলাফল আছে। তার উচিৎ তাই লম্বা পা নিয়ে দুঃখ না করা। তারপর সে বাড়ি ফিরে এলো চার পা ফেলে চল্লিশ মাইল চার মিনিটে। কাজেই সব কিছুর অপোজিটও আছে মানে পজিটিভ সাইডও। শুধু একটু বুঝে নিতে হয়। :)


৯.লিটল মিস টাইনি- লিটিল মিস টাইনি এতই ছোট্ট পুচকে ছিলো যে সে কোনো বাড়িতেই বাস করতে পারতো না। সে বাস করতো এক কৃষকের বাড়ির ড্রইংরুমের ছোট্ট ইঁদুরের গর্তে। কেউ জানতোনা। এমনকি কৃষকের বউটাওও না । কিন্তু সে খুবই লোনলী ছিলো আর ভীষন দুঃখ ছিলো তার।
একদিন সে ঠিক করলো সে বাইরে বেড়াতে যাবে। সে যখন বাইরে থেকে উঁকি দিলো। ঘরটা লাগছিলো তার বিশাল বড় মাঠ। সে দরজার নীচের লেটার আসবার ফুটোটা দিয়ে নিজেকে গলিয়ে বাইরে নিয়ে এলো। মাঠের পাশে ছিলো এক শুকরছানার বাসা। সেখানে ঢুকলো মিস টাইনি। শুকরছানা তো তাকে দেখেই অবাক। এই পুচকেটা এলো কোত্থেকে? শুকরটাকে দেখে সে ভীষন ভয় পেলো ও তার ছোট্ট ছোট্ট পা দিয়ে যতদূর সম্ভব দৌড়াতে শুরু করলো। ওয়ালের কাছে এসে সে নিজের চোখে দুই হাত দিয়ে ঢেকে রাখলো।
ফার্মে একটা দুষ্টু বিড়াল ছিলো। সে মিস টাইনীকে ভয় দেখালো। মিস টাইনি যতদূর সম্ভব চি চি করে হেল্প হেল্প করে চিল্লাতে লাগলো। মিঃ স্ট্রং তাকে বাঁচাতে এলো। সে বললো এমন ভয় পেলে সামান্য বিড়ালও তাকে ভয় দেখাবে। এরপর সে তার বন্ধু হলো। এভরি উইকেই মিঃ স্ট্রং তাকে নিউ নিউ ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। মিঃ ফানি, মিঃ হ্যাপী, মিস নটি এরপর সে একজন পারফেক্ট পারসনের দেখা পেলো? এক্কেবারেই পারফেক্ট পারসন ফর হার এ্যান্ড দ্যাট ইজ মিঃ স্মল। এখন তারা দুজন দুজনার বন্ধু। :)


১০. মিঃ রং-মিঃ রং যাই করে তাই তার ভুল হয়। সে যে বাড়ি বানিয়েছে তা যদি কেউ দেখতো। উল্টা পাল্টা ভাঙ্গাচুরা ।দরজার যায়গায় জানালা, জানালার জায়গায় দরজা। একদিন সকালে সে ঘুম থেকে উঠলো। রাতে তার ভালো ঘুম হয়নি। সে লাফ দিয়ে উঠলো বেড থেকে, দুইবার পড়লো, দুই পায়ের উল্টা পাল্টা জুতা পরলো, বাথরুমে যেতে গিয়ে বাথরুমের ম্যাট উল্টিয়ে দিলো। জোরে এক চাপে এক গাঁদা টুথপেস্ট বের করে টুথব্রাশের উল্টা দিকে লাগালো। কোনোরকমে দাঁত মেজে ধুড়ুম ধাড়ুম করে কিচেনে নেমে এলো। তাড়াহুড়ায় সিরিয়ালের বাটিতে দুধ ঢালতে গিয়ে পুরো দুধই ফেলে দিলো টেবিলে। তারপর বসে বসে শুকনো কর্নফ্লেক্সস চাবাতে লাগলো। মন খারাপ করে ভাবলো ওহ আমি কেনো সবকিছু ভুলভাল কাজ করি?
তারপর সে হাঁটতে বের হলো। ভুল করে সামনের দরজা দিয়ে না বের হয়ে সে পেছনের দরজায় গেলো ও লেট করলো। যেতে যেতে তার দেখা হলো ওয়ার্মহোল থেকে বের হয়ে আসা এক ওয়ার্মের সাথে। সে তাকে বললো, গুডমরনিং ডগ। তারপর সে ভুল করে পোস্টম্যানকে ডক্টর বললো। এরপর তার দেখা হলো এমন একজনের সাথে যাকেই তার দরকার ছিলো আর সেটা মিঃ রাইট।

মিঃ রাইট মিঃ রংকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলো। সেই বাড়িটাও ছিলো একদম মিঃ রং এর বাড়িটার মত দেখতে শুধু তার জানালা জানালার জায়গায় ছিলো, দরজা আর সব কিছুই ঠিকঠাক যা ,মিঃ রং এর বাড়ির একদম উল্টা। মিঃ রাইট বললো, তোমার উচিৎ কিছুদিন আমার সাথে থাকা ও আমাকে দেখে শেখা কি করে রাইট হতে হয়। মিঃ রং বসতে গেলো একটা চেয়ারে আর মিস করে পড়ে গেলো। এরপর এক সপ্তাহে সে মিঃ রাইটকে দেখে দেখে কিছুটা রাইট হতে শিখলো। দুই সপ্তাহে আরও কিছুটা। চার সপ্তাহে প্রায় রাইটের মতই। মিঃ রাইট তাকে বললো, বলেছিলাম মানুষ সবই বদলাতে পারে। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী অভ্যাস না। দেখি তুমি সব ভুল গুলো ভুলে এখন রাইট হতে শিখেছো। আমার সাথে থেকেই তোমার এই পরিবর্তন হলো। মিঃ রং খুব খুশি হলো ও বাড়ি ফিরে গেলো।
কিন্তু এ গল্পের শেষ এখানেই নয়। মিঃ রাইট ঘুমাতে গেলো বেডে কিন্তু ঘুম ভেঙ্গে উঠে দেখলো সে বাথটাবে ঘুমাচ্ছিলো। মিঃ রং যেমনি রাইটের সাথে থেকে কিছু বদ অভ্যাস বদলেছে। তেমনি মিঃ রাইটও মিঃ রং এর সাথে থেকে কিছু বদ অভ্যাস পেয়েছে। হা হা হা একেই বলে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎসঙ্গে সর্বনাশ!!!!! হা হা হা


১১.লিটিল মিস টাইডি- সে ছিলো এক এক্সট্রা অর্ডিনারী টাইডি মেয়ে। তার বাড়িতে সব কিছুই সব সঠিক জায়গায় থাকতো । তার হাজার হাজার হ্যান্ডব্যাগ ছিলো যার ভেতরে সে নানা রকম জিনিস আলাদা করে রাখতো। তার ছোট বড় মাঝরি, গোল চৌকো লম্বা সোজা সব ধরনের বক্স ছিলো। কোনো কিছুই তার এখানে সেখানে পড়া থাকতো না। যদি তাকে কেউ পারফেক্ট ভেবে থাকে এসব দেখে তাহলে সে ভুল। সে ভুলে যেত কোথায় কোন জিনিসটা রেখেছে । ঐ যে মানে বেশি গোছানো হলে যা হয় মানে ঠিক আমার মত আর কি।:)
কিন্তু মিস টাইডীর সব কিছুই গুছিয়ে রাখা থাকলেও সবই ছিলো বাক্সবন্দী ও হাজার হাজার বক্সের মাঝে আর তাই সে কাজের সময় আর সেটা সে খুঁজে পেত না মানে দরকারের সময়। সে মিঃ নোজী থেকে শুরু করে মিস সাই পর্যন্ত ফোন দিত তার জিনিস কোথায় আছে মনে করাতে। শেষে খুঁজতে খুঁজতে দেখা যেত হেয়ার ব্রাশ আছে সু বক্সে, বয়েলড এগ আছে সল্ট পটে। একদিন সে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেলো। তার বন্ধুরা তাকে এমন একটা গিফট দিলো তার জন্মদিনে যে এরপর সে আর কোনোদিন কোথায় কি রেখেছে ভুলে যায়নি। আর সে গিফটটা ছিলো অনেক বড় আর অনেক পাতাওয়াাল একটা রাইটিং প্যাড আর পেন। সে কোথায় কি রাখবে এখন থেকে লিখে রাখবে। পরের দুদিন সব বক্স খুলে খুলে সে কোথায় কি আছে সব রাইটিং প্যাডে লিখলো আর টায়ার্ড হয়ে ঘুমাতে গেলো। পরদিন সকালে উঠে সে তার নোটবুকই খুঁজে পেলোনা। সেই সারাটাদিন সে আবার সব বক্স খুলে খুলে রাইটিং প্যাড খুঁজলো আর শেষে প্যাডটা পাওয়া গেলো তার সাইড টেবলের উপরে। হা হা হা একদম মিস টাইডি!!!!!!!


১২.মিঃ বিজি- মিঃ বিজি ছিলো মিঃ স্লো এর একদম উল্টা। সে সব কাজই করতো এক নিমেসে। একদিন সে সকাল বেলা গেলো মিঃ স্লো এর বাড়ি। সে স্লোকে ঘুম থেকে উঠালো , তার বেড গুছিয়ে দিলো, ব্রেকফাস্ট বানালো, বাড়িঘর পরিষ্কার করে দিলো তাড়াহুড়া করে। যা মিঃ স্লো একদমই লাইক করলো না। তারপর মিঃ বিজি বললো তারা দুজন পিকনিকে যাবে। সে তাড়াতাড়ি পিকনিকের সব সরঞ্জাম রেডি করে হাঁটা দিলো। মিঃ বিজি হাঁটছিলো তড়বড় করে আর মিঃ স্লো!!!!!!! তার তো আঠারো মাসে বছর।
উফ লিখতে লিখতে হাত ব্যাথা হয়ে গেলো বাকীটা নিজেরাই দেখে নাও।


যাইহোক যদিও আগেই বলে রাখা দরকার ছিলো ইহা একটি শিশুতোষ পোস্ট তবুও চাইলে বুড়ারাও পড়তে পারেন। কারন বলাই বাহুল্য আমরা সকলেই জানি শিক্ষার কোনো বয়স নাই। দোলনা থেকে খাঁটিয়া পর্যন্ত মানুষের শিক্ষার শেষ হয় না। আর এই মিঃ মেন সিরিজ তেমনি মজাদার ও শিক্ষামূলক যা পড়লে ছেলেবুড়ো সকলেরই বেশ শিক্ষা হবে। আর যারা পড়তে মিঃ স্লো বা মিঃ লেজী হয়ে যায় তারা ইউটিউবে সার্চ দিলেও পেয়ে যাবে মিঃ মেন সিরিজের মজাদার ভিডিওগুলি!!!!!!! :)

আমার বেবিদের আঁকা আরও কিছু মেন সিরিজের মানুষেরা-





সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:৫৪
১৪৪টি মন্তব্য ১৪৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×