রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ডিসেম্বর ৩১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক অনুপম হীরা মণ্ডলকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা এমদাদ হোসেনকে বৃহস্পতিবার জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ওদিকে, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রাবি শাখা ছাত্রলীগ তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
শিক্ষককে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে রাবির মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এবং শিক্ষক সমিতি পৃথক বিবৃতি দিয়েছে। এছাড়া ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করে ক্যাম্পাসে মৌন শোভাযাত্রা করে।
জড়িত ছাত্রের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়ে প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বঘোষিত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে। একই আশ্বাসে বিভাগের শিক্ষকরাও তাদের একাডেমিক কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে হেমানী বিশ্বাস নামের এক শিক্ষার্থী ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিবিএ প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হতে এলে একই বিভাগের এমবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র ও ছাত্রলীগের উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এমদাদ হোসেন তার কাগজপত্র কেড়ে নেয়। ৩০ হাজার টাকা না দিলে কাগজ দেওয়া হবে না বলে জানায়।
বিষয়টি হেমানী তার পরিচিত শিক্ষক অনুপম হীরা মণ্ডলকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে এর কারণ জানতে চান। এতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এমদাদ ওই শিক্ষককে মারধর করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুপুর তিনটায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিকালে মতিহার থানা পুলিশ এমদাদকে আটক করে। রাতে ওই শিক্ষক মতিহার থানায় চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার মতিহার থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, অনুপম হীরার দায়ের চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এমদাদকে সকালে রাজশাহী মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা এদিন ক্লাশ বর্জন করে ক্যাম্পাসে কালোব্যাজ ধারণ ও মৌন শোভাযাত্রা বের করে।
তারা অবিলম্বে ওই ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতার ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানান।
রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারাণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন জানান, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য এমদাদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে এবং এমদাদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবিতে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার থেকে ক্যাম্পাসে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়। এছাড়া বিভাগের পক্ষ থেকে দোষী ছাত্রলীগ নেতার ছাত্রত্ব বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে ফোকলোর বিভাগ ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে।
এ বিষয়ে ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শহিদুর রহমান জানান, শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রের বিরুদ্ধে প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে। একই আশ্বাসে বিভাগের শিক্ষকরাও একাডেমিক কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন।
প্রক্টর চৌধুরী মো. জাকারিয়া বলেন, "ঘটনায় জড়িত ছাত্রের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার রাতেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে।"
সুত্রঃ
Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




