somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যখন ধ্বস নামল অলিম্পাসে - একটা মুভি রিভিউ

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেখতে বসলাম মুভিটা - অলিম্পাস হ্যাজ ফলেন । প্রিয় নায়কের ছবি বলে কথা । জিরার্ড বাটলার সেইরকম মাসেল বানিয়েছে । দ্য ক্রাডেল অফ লাইফ বা ট্যু মোরো নেভার ডাইসের সেই ইনোসেন্ট চেহারার নায়কটার কি বিশাল অবস্থা । কিন্তু একি ! বডি ব্লিডিং করলে তো জানি শরীরে মাসেল জমে । জিরার্ডের তো মুখেও মাসেল জমেছে !!! যাই হোক, নায়ক বলে কথা !! চেহারাটা বড় নয় । অ্যাকশনটাই বড় কথা । শুরু করলাম পপকর্ণ হাতে নিয়ে ।

শুরুটা ফ্লাসব্যাক । ছিমছাম জিরার্ডের বেশ টিপটপ লাইফ । খুব দায়িত্ববান । নায়ক বলতে আমরা যা বুঝি আর কি ! বড় হৃদয় । উদার মনোভাব। খুব নমনীয় । সবদিকে খুব কড়া নজর । একদিকে যেমন বড়দের সাথে বন্ধুভাবাসম্পন্ন, আরেকদিকে ছোটোদেরও প্রিয় । একবাক্যেই যাকে বলে হৃদয় ছুয়ে যায় । আমার হৃদয়ও ছুঁয়ে ছিল আরেকটু হলেই । সে কথা না হয় আরেকদিন হবে । ;)


কিন্তু সবকিছুতে নাম্বার ওয়ান হলে হবে কি, আমাদের জ্ঞানী জ্যোতিষী কাওসার আহমেদ চৌধুরীর আস্তানা থেকে ভাগ্যের হালচাল আগেভাগে না জেনেই হোক বা কারও কুদৃষ্টির কারণেই হোক - জিরার্ডের ক্যারিয়ারে নেমে আসে দূর্ভোগ । সেই ফারা যেন আর কিছুতেই কাটতে চায় না । ফারাটার কালো ছোবল প্রায় তার পারিবারিক জীবনেও হানা দেয় । তবে কাহিনীতে তার পারিবারিক জীবন নিয়ে তেমন আলোকপাত করেননি ডিরেক্টর সাহেব । মনে হয়, ঐ অংশটুকু নিয়ে 'কাহানি ঘর ঘর কি' সিরিয়ালটার নতুন ভার্সনের জন্যে একতা কাপুরের সাথে সাথে কথাবার্তা চলতেছে ।

যাই হোক, এরকম সাদামাটা, নিরস, একঘেয়ে জীবনে একদিন আসে দুর্দিন বা বলা উচিত সুদিন । কারণ আজকেই জিরার্ডের ভাগ্য নির্ণয় হবে । অন্য আর দশটা দিনের মতই ছিল সেদিন সকালটা । রোজকার মত স্যুট টাই পড়ে অফিসে আসা । দুপুরের পর থেকেই শনিবলয়টা গ্রাস করতে থাকে পৃথিবীকে । পৃথিবী না বলে বলা উচিত ইউএসএ-কে । কারণ আর অন্যসব মুভির মত এই মুভীর ঘটনাও ব্যতিক্রম কিছু না । পৃথিবীর যে কোনো দূর্যোগটা কেন জানি শুরু হয় আমেরিকা মহাদেশের এই অঞ্চল থেকে । এমনকি ভিন গ্রহের প্রাণীরাও এই অঞ্চলটাকেই টার্গেট করে এবং তারা শুধু ইংরেজীতেই মানুষের সাথে কমিউনিকেট করতে পারে ! পুরাই অবিশ্বাস্য ! মনে হয়, ব্রিটিশরা ঐখানেও কলোনী স্থাপন করতে গেছিল ! যদিও আমরা বাঙালীরা ২০০ বছর পদতলে পিস্ট হয়েও ঠিকমত ইংরেজী শিখতে পারলাম না ।


সে যাক, মুভির যে অংশে ছিলাম । এই দূ্র্যোগটা কিন্তু প্রকৃতি প্রদত্ত নয় । খোদ আমেরিকার নিজস্ব পাপের ফসল । বলা উচিত বুসের পেটে লাত্থি । বুসের নানা অকাম-কুকাম মানে নিজের খায়ে অন্যের ধান মাড়ানো টাইপ স্বভাবের জবাব । এই জবাবের প্রথম পদক্ষেপেই ইউএসএর তের বছরের তৈরি অত্যাধুনিক ইন্টেলিজেন্সকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়ে হোওয়াইটের হাউজের সিক্রেট চেম্বারে । আমেরিকার এত জটিল সবসিকিউরিটিকে বুড়া আঙ্গুল বা কাঁচকলা জাতীয় কিছু দেখি দেয় কোরিয়ানরা !!! চাইনিজ হইলেও না বুঝতাম । কিন্তু কোরিয়ানরা । যাই বলুন, ওরা তো চাইনিজদেরই বাইপ্রডাক্ট । এইখানে বাঙালী দেখায় নাই, ভালই করছে । আমাদের তো মাথা গরম । এত সূক্ষ্ণচাল চালতে গেলে আমরা লেজে গবরে করে ফেলব আরকি। তো, কোরিয়ানদের একের পর দূর্ধোষ্য স্নাইপারের বন্দুকের মুখে ইউএসএর ইন্টেলিজেন্সের হোমরা চোমড়ারা সব টুপ টুপ করে পড়তে থাকে । মাত্র ১৩ মিনিটের মাথায় হোওয়াইট হাউজের সবচাইতে উচু টাওয়ারটা ভেঙ্গে পড়ে । আছড়ে পড়ল বললে ভাল শুনায় । এই শব্দেই হোক বা বুসের উপর অনাস্থার কারণেই হোক, সব দায়িত্ব গিয়ে পড়ে ওবামা বাবাজির উপর ।

এদিকে এত হৈহুল্লুর আর চেচামেচি তে হতাশ আর জীবন যুদ্ধে পরাজিত নায়ক জিরার্ড বার্টলার জানালা দিয়ে উকি মারে । হঠাৎ এন্ড্রনালিন হরমোনের মাত্রাধিক্ক টের পায় কানের নিচে । আর যায় কই, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে মাঠে নেমে পড়ে জিরার্ড । যেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ ইন্টেলিজেন্স টপাটপ গুলিবিদ্ধ হচ্ছে আর সেখানে জিরার্ড নিজেকে রক্ষা করে বাকিদেরকে কভার দিয়ে যাচ্ছে । কিন্তু শুধু জিরার্ড ছাড়া বাকি সবাই ক্ষণস্থায়ী ছিল। একসময় সব শত্রুকে ভেলকি দেখিয়ে শত্রু আস্তানা মানে ভাঙ্গা হোওয়াই হাউজে ঢুকে পড়ে । আমেরিকার জনগণ মুখে বুসের পিন্ডি চটকালেও, তাকে রক্ষার জন্যে আগুনে ঝাপ দিতেও দ্বিধা করে না । সেই দূর্বলতা থেকেই হোক বা মুভিতে নায়ক সাজার জন্যই হোক, জিরার্ড তার কোরিয়ান শত্রুকে কিভাবে মারবে, তার প্লানটাও বলে দেয় । আমি ভাবছিলাম, এরকম হয়ত হবে না । অনেক সময়ই নায়ক নিজের হাতে তার শত্রুকে মারতে পারে না । ঐটা নেক্সট এপিসডের জন্যে তুলে রাখা হয় । কিন্তু কি আর করা, স্ক্রিপ্টে ঐটা লেখা ছিল ! /:)


কাহিনীর মাঝখানে মাঝখানে একটু আধটু টুইস্ট আছে, মুভিটাকে বড় করার জন্যে । যাই হোক, মুভি শেষে মনে হল, ধ্যুর, বেশি দাম দিয়ে পপকর্ণ কেনাটা ঠিক হয় নাই । আমি 'টম এন্ড জেরি' টাইপ মুভি পাগল । আমারে কি এইসবে মানায় । :P
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৫
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৫



কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×