গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার আরাজী ছত্রগাছা গ্রামের মুকুল মিয়া এখন বোধহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ক'দিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে তিনি আদরের দুই সন্তান হারিয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম। সন্তান হারানোর শোকে মুকুল মিয়ার এ অবস্থা। শুধু মুকুল মিয়াই নন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট 'বত্রিশ মাইল' নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের হারিয়ে অনেকেই এভাবে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এবং পুলিশের তথ্যমতে, বত্রিশ মাইল নামক স্থানে বিগত তিন বছরে প্রায় ৪০ বার বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। আর শিশুসহ আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ। এ মহাসড়কের বত্রিশ মাইল নামক স্থানটি এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল জলিল আকন্দ বলেন, এ এলাকায় মহাসড়কের কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমে ভেবে নেওয়া হয় জায়গাটি নিশ্চয়ই বত্রিশ মাইল। কারণ এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই স্থ্থানে কেন এত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তা বলা মুশকিল।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক দিয়ে যারা যানবাহন চালান তাদের সবার কাছেই আতঙ্কের স্থান বত্রিশ মাইল। প্রায়ই এখানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে। ১৯ জানুয়ারি রাতে এখানে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন প্রাণ হারান। এর ক'দিন আগে বরযাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় আটজন মারা যান। তাই এলাকার মানুষ বত্রিশ মাইলের নাম রেখেছেন মৃত্যুকূপ।
সাদুল্যাপুর থানার ওসি আবু মোঃ দিলওয়ার হাসান ইনাম বলেন, উত্তরাঞ্চলের এ মহাসড়কের ৩ থানার (সাদুল্যাপুর, পলাশবাড়ী ও পীরগঞ্জ) সীমান্তবর্তী বত্রিশ মাইল নিয়ে পুলিশ সর্বদা চিন্তিত থাকে। কারণ এখানে খুব বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এ জন্য সেখানে পুলিশ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু সাঈদ বলেন, এটি ওয়ান ওয়ে মহাসড়ক। এ মহাসড়কে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি গাড়ি চলাচল করায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। এর পাশাপাশি রাস্তা পারাপারে মানুষের সচেতনতার অভাব এবং বেশির ভাগ চালক প্রশিক্ষণবিহীন হওয়াসহ নানা কারণে প্রায়ই ওই স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



