আমরা একসাথেই কলেজে পড়াশুনা করেছি। কলেজ পাশ করে আমি রুয়েটে ভর্তি হলাম আর সে ভর্তি হলো রাজশাহী কলেজে। কেমিস্ট্রি নিয়ে। ওদের তিন বছরের কোর্স তাই আগেই বের হয়ে সে রাজশাহী ছেড়ে গ্রামে চলে গেল। একদি ন আরেক বন্ধুর কাছে শুনি যে বন্ধুটি আমার কেমিস্ট্রির অধ্যাপক হিসেবে গ্রামের কলেজে জয়েন করেছে। ওকে ঘিরেই এ কাহিনী। আমার বন্ধুটি ছিল দেখতে শুনতে এক নম্বর। তো শ্রীমানের প্রেমে পড়েছে তার কলেজের প্রথম বষের্র বাংলা সাহিত্যের এক ছাত্রী। বন্ধু কিন্তু মেয়েটিকে দু'চোখে দেখতে পারে না। মেয়েটি এদিকে বন্ধুর প্রেমে যাকে বলে রীতিমত হাবুডুবু। লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে নানাভাবে সে বন্ধুর কাছে প্রেম নিবেদন করেছে। কিন্তু আমার বন্ধুটি তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। নায়িকা তবুও ক্ষান্ত নয়। অগত্যা বন্ধুবরটি সেদিন কলেজেই তার কয়েক অধ্যাপক বন্ধুর সামনে মেয়েটিকে যাতা, মানে একেবারেই যাতাভাবে অপমান করে দিল। অতগুলো টীচারের সামনে, তার উপর যাকে সে ভালবাসে, তার কাছ থেকে এমন চরম অপমান কি আর সহ্য করতে পারে? আপনারই বলুন। যাহোক, মেয়েটি মনে বিরাট দাগা পেল। দুঃখ লজ্জাকে নিবারণ করতে হবে। কি করে করা যায়? অনেক হাতড়ে উপায় বের করল। 'রাখিব না মম এ জীবন।' অর্থাৎ করো আত্মহত্যা। করেছে কি জানেন? নিজে তো সাহিত্যের ছাত্রী, বিজ্ঞানের জানে কলা। বিজ্ঞান বিভাগের মেয়েদের মুখে শুনেছিল, ল্যাবরেটরিতে নাকি বিষও থাকে। ব্যস, হাতিয়ার পেয়ে গেল। ফাঁক বুঝে সোজা ঢুকেছে কেমিস্ট্রির ল্যাবরেটরিতে। আলমারির মধ্যে বিভিন্ন রকম 'রি-এজেন্ট' সাজানো ছিল। আমাদের নায়িকা বিষ চিনতে পারেনি। তাই দেখে শুনে কিনা 'কমন সল্ট'কেই বিষ ঠাউরেছে। বিস্মিল্লাহ বলে বেশ খানিকটা খেয়ে ফেলল। মনে তখন ঝড় বইছে তো। কাজেই কি খেলো অতটা বুঝতে পারেনি। তারপর সোজা 'কমনরূম'। কমনরূমে এসে সে কি হাউমাউ করে কান্না! ভেবেছে, এখনই তো মরে যাব। কাজেই ইনিয়ে বিনিয়ে সবকিছু কমনরূমের মেয়েদেরকে বলেছে আর কেঁদেছে। আর মেয়েরা যেন নিষ্ঠুর ছেলেদের প্রেমে না পড়ে, তার জন্যে চোদ্দদফা অনুরোধও করা হয়ে গেছে। যাই হোক, ইতিমধ্যে প্রায় আধঘণ্টা কেটে গেছে। কিন্তু কই, বিষের ক্রিয়া তো শুরু হচ্ছে না। নায়িকা তো ইনিয়ে বিনিয়ে কেঁদেই চলেছে। কিন্তু আজরাইলের দেখা নেই। 'কমন সল্ট' খেয়ে কে আর কবে মরেছে বলুন! ডাক্তার তো বুঝেসুঝে হেসেই চলে গেলেন। তারপর... তারপর কি হয়েছিল তা আপনারা বুঝে নিন।
কেমিস্ট্রিবিষ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুহূর্ত কথাঃ সময়

সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।