somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ মৌলবাদ না রুখলে, কাল তা আপনার ঘাড়ও মটকাবে

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতের ওই মুসলমান ভদ্রলোকের বাসায় গরুর মাংস আছে, এমন গুজবে বাড়ি এসে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল হিন্দু। তবে পুলিশ বলছে, নিহতের বাসার ফ্রিজে ছাগলের মাংস ছিল। গরুর না। কথা হচ্ছে, ভদ্রলোকের বাসায় গরুর মাংস পাওয়া গেলেও কি এ হত্যাকাণ্ড বৈধ হয়ে যেত?
সবচেয়ে মর্ম যতনার বিষয় হচ্ছে, ভারতের রাজধানী দিল্লীর নিকটবর্তী, উত্তর প্রদেশের এক গ্রামে এ ঘটনা ঘটল। যেখানে গরু খাওয়া আইনত নিষিদ্ধ নয়। সুতরাং এ হত্যাকাণ্ডের দায় প্রশাসনের এড়ানো উচিৎ হবে না। এড়াতে চাইলে তা জুলুম হবে ওই পরিবারটির প্রতি। ধর্মের নামে জুলুম আসলে হয়েছেও। এখন ভয়ের বিষয়টা হচ্ছে, এর প্রতিক্রিয়ায় কোন দেশে, কদ্দূর কী হয়। শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে কোনো হত্যাকাণ্ড থেকে দোষীকে দায়মুক্তি দেওয়ার যে পশ্চিমা প্রবণতা তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ভারতকে। এখানে আসলে একটি জঘন্য অপরাধের জন্য অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে পারাটাই হবে সবচেয়ে স্ব:স্তির খবর। বাংলাদেশে যেন কেউ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফায়দা লুটতে না পারে সে দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
ভেবে দেখেন, এমন করে যদি হিন্দু প্রধান দেশ, মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাসের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠে। আর মুসলিম বা খৃষ্টান প্রধান দেশ হিন্দু বা অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠে তাহলে শেষ পরিণতি কিসে হবে! আর একটা ধর্মযুদ্ধে। তারপর ধ্বংশ, রক্ত, ইজ্জ্বত হরণ, লাশ, কান্না...এইতো?
এই মুসলমানটাকে হত্যা করে ধর্মের কী লাভ হলো তা ব্যাখা করার সামর্থ্য এসব হিন্দু মৌলবাদীদের নেই আমি নিশ্চিত। থাকলে ওরা এমন পৈশাচিকতায় মেতে উঠতে পারত না। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, ওদের অধিকাংশেরই পারিবারিক কোনো বন্ধন নেই। থাকলে হয়তো মুহম্মদ আখলাখ (৫৮) নামক ওই ভদ্রলোককে পিটিয়ে হত্যা করার সময় নিজের বাবার মুখটা ভেসে উঠত।
আসলে ধর্মান্ধতা রুখতে শিক্ষা ও সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের উপমহাদেশের মানুষ শিক্ষিত নয় বলে অতিমাত্রায় ধর্মান্ধ। তাদের মধ্যে ধর্ম বিশ্বাসের চেয়ে, ধর্ম নিয়ে কুসংস্কার, গোড়ামিটাই বেশি। ফলে এসব দেশগুলো সাধু বা পীরেরা ধর্মের নামে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করে। এর সবই কিন্তু হচ্ছে অশিক্ষার কারণে। সুতরাং এ অঞ্চলের সরকারগুলোকে তার নাগরিকেদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। নইলে ধর্মান্ধতা রুখা যাবে না। ধর্ম নিয়ে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধেও পদক্ষেপ নিতে হবে।
আমাদের সকলেরই উচিৎ যে যার জায়গা থেকে এসব অমানবিকতার বিপক্ষে দাঁড়ানো। উগ্রপন্থাকে রুখে দেয়া। নইলে একদিন এ ধর্ম নামীয় অশিক্ষিত বাঘ আমাদের সবাইকে চাবিয়ে খাবে। এই যে হত্যা করার প্রবণতা তা রাজনৈতিক কারণে হোক, ধর্মীয় কারণে হোক এটা ভয়ঙ্কর এক রোগ। যা আমাদের সমাজে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। এসব রোধ করা না গেলে আমাদের একটা ধর্মযুদ্ধে দর্শক হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখাই ভাল।
বাংলাদেশ সরকারসহ, অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোকে ওই পরিবারটির প্রতি সহানুভূতি জানানোর আবেদন জানাচ্ছি। ভারত সরকারের উচিৎ হবে পরিবারের জীবিত সদস্যদের জীবনের সুরক্ষা ও পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া। আমরা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এই পরিবারটির প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তাদের অসম ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিতে পারি। একই সাথে সচেতন হতে পারি, যেন ভবিষ্যতে আমাদের সমাজে ধর্মের নামে এমন অধর্ম কেউ করার সুযোগ না পায়।
আমি ব্যক্তিগতভাবে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সমবেদনা ও পরিবারটির প্রতি ন্যায় বিচারের নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি। আশাকরি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের দাবিদার ভারতের আদালত হত্যাকারীদরে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি যে মন্দির থেকে এ হত্যাকাণ্ডের প্ররোচণা দেওয়া হয়েছে সেটিকেও বিচারের আওতায় আনবে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×