somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুটিং শেষ। প্রোডাকশন বয় ব্যস্ত মালসামালা গোছগাছ করতে। ডিরেক্টর রাজীব সব আর্টিস্টদের নিয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। কার কোন জায়গায় আরো ভালো করা দরকার, কে কোন জায়গায় বেশ ভালো করেছে, কার ডায়লগে সমস্যা, কার এক্সপ্রেশন কতটুকু ভালো-খারাপ তা বলে দিচ্ছে। রাজীবের কথা সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছে। রগচটা ডিরেক্টর হিসেবে তার কুখ্যাতি থাকলেও ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড এ পর্যন্ত পেয়েছে ৩ বার। তাও টানা। ঝুলিতে হিট ছবি আছে তো ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। এ পর্যন্ত ১১টি সিনেমার ডিরেকশন দিয়ে ১১টাই হিট। আর্টিস্টদের একেবারে ভেতরকার অভিনয় বের করে আনার জন্য গায়ে হাত দেওয়া ছাড়া যেকোন ভাষায়, ভঙ্গিমায় কথা বলতে তারচেয়ে রুক্ষ আর কেউ হতে পারে না। খ্যাতি আছে বলেই কি না, সবাই তাঁকে মান্য করে। যার কাছে ক্ষমতা আছে, তার শত রুক্ষ আচরণও মানুষ সহ্য করতে পারে।

-কি ব্যাপার এরকম ভ্যাবলার মতো করে তাকিয়ে আছো কেন?

-কই না তো।

-ফাইযলামি করো? তোমাকেই বলছি নিশি। দুইটা সিনেমা হিট করেছে বলে ভেবো না যে তুমি বিরাট অভিনেত্রী হয়ে গেছ। অভিনয় সিনেমাতে দেখাবা, বাস্তবে না।

-সিনেমা কি বাস্তব থেকেই বানানো না?

-মুখে মুখে কথা কম বলো। স্টুপিড।

-গালি দিচ্ছেন কেন?

-কারণ তুমি কথা শুনছো না।

নিশি আড্ডা থেকে চলে যায়। রাজীব পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে আড্ডা চালিয়ে নেয়। সন্ধ্যা মিলিয়ে রাত নেমে এসেছে। শুটিং ইউনিটের সবাই ঘুরাফেরা করতে গেছে। অভিনয় করার অনেক সুবিধা আছে, কোথাও শুটিংয়ে গেলে শুটিং শেষে টাইম থাকলে ইচ্ছেমতো ঘুরাফেরা করা যায়। রাজীব এই নীতিতে বিশ্বাসী না। প্রডিউসার যদিও কিছু মনে করেন না। তবুও অন্যের টাকা নষ্ট করাটাকে সে ভালো চোখে দেখে না।

প্রচলিত ধারার ডিরেক্টর বলতে যা বোঝায়, খাকি হাফপ্যান্ট, ঢোলাঢালা টি শার্ট, মাথায় ওয়েস্টার্ন হ্যাট, গলায় একটা বাশি, মোট কথায় জোকার টাইপ কোন গেটআপই সে নেয় না। সাধারণ ইন্ ছাড়া ফরম্যাল শার্ট আর ফরম্যাল প্যান্ট। পায়ে হাওয়াই চপ্পল। প্রথম ছবি “অবেলা” এর যেদিন ডিরেকশন দিতে আসে, হিরো ফিরোজ তাঁকে দেখে প্রোডাকশন বয় মনে করে ধমকের সুরে এক কাপ চা দিতে বলেছিল। রগচটা রাজীব ওতেই ক্ষেপে যায়, হিরোর গালে কষে একটা চড় লাগিয়ে বলে, আমি ডিরেক্টর। স্বভাবতই ইগোর কারণে ফিরোজ আর সে ছবিতে অভিনয় করেনি। একজন সুপারস্টারের গালে প্রথম দেখাতেই একজন নতুন ডিরেক্টর যখন চড় লাগায়, কোন হিরোরই আর সেই সিনেমা করার কথা না। এরপর সেটের একেবারে জুনিয়র আর্টিস্টদের থেকে বেঁছে বাদশা নামের একজনকে হিরোর রোল দেয়। নায়িকাও নতুন, নায়িকাও নতুন, ডিরেক্টরও নতুন, প্রডিউসারও নতুন। এরপরেও কেবল মাত্র অভিনয় দক্ষতা আর ডিরেকশনের জন্য অবেলা হিট করে যায়। যে সে হিট না, একেবারে ন্যাশন্যাল অ্যাওয়ার্ড। মিডল ক্লাস ফ্যামিলির সিম্পল লাইফস্টাইল। কমার্শিয়াল ছবির ভীড়ে এভাবে যে সিনেমাটা জায়গা করে নিবে কেউ বুঝতে পারেনি। সেই থেকে আর পিছনে ফিরতে হয়নি। একের পর এক হিট সিনেমা। সেই ফিরোজ ফিরে আসে তার কাছে, ক্ষমা চাওয়ার জন্য। খ্যাতি মানুষকে কতই না বদলে দেয়।

রাত নয়টা। সবাই এখনো শপিং মলে ঘুরাফেরাতে ব্যস্ত। রাজীব শুটিং স্পটের বাসার বারান্দায় বসে আছে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সব আলো নিভে আছে। পেছন থেকে কারোর পায়ের আওয়াজ আসছে। খুব সম্ভবত কোন মেয়ে। মেয়েরা তাল রেখে আস্তে আস্তে হাঁটতে পারে, ছেলেরা পারে না, হাটলে থপ থপ শব্দ করে। ব্লু লেডী বডি স্প্রের ঘ্রাণটা আস্তে আস্তে কাছে আসছে। নিশি এসেছে বোধহয়। মেয়েটার সাথে ওসময় খারাপ ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। তবে শক্ত না থেকেও উপায় নেই। নায়িকারা সব সময় সুযোগ খুঁজে শক্ত কোন খুটি পাওয়ার, যে খুটি কখনোই তাকে উপড়ে যেতে দিবে না।

-রাজীব দা কি ঘুমুচ্ছেন?

-নিশি কুমড়া বসো।

-আপনি আমাকে কুমড়া বলছেন কেন? আমি কত স্লিম না!

-তুমি তো স্লিমই, কিন্তু তুমি যে আমাকে দা বললে।

-তো?

-যারা আমাকে দা বলে, আমি তাদের কুমড়া বলি। তাদের সাথে আমার দা-কুমড়া সম্পর্ক।

-রাজীব ভাই, আপনি খুব মজা করতে পারেন।

রাজীব উত্তর দেয় না। চুপ করে থাকে। নিশি আস্তে আস্তে এগিয়ে আসে তার কাছে। আশেপাশে কেউ নেই। মেয়েটা করতে চাচ্ছেটা কি? না না। এসব কি ভাবছে রাজীব। নিরবতা ভেঙে নিশি বলে,

-রাজীব ভাই, একটা কথা জিজ্ঞেস করি?

-করো।

-আপনি এখনো বিয়ে করেননি কেন?

-সেটা তোমার জানার দরকার নেই।

-আপনি তো আমাদের সবারই কত খোঁজ খবর রাখেন। তা আমরা রাখলে সমস্যা কি?

-আমি তোমাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে তো কখনো জানতে চাই না।

-কেন আপনি যে আমাদের বাসার খবর নেন।

-বাসার খবর নেওয়া ভদ্রতার মধ্যে পড়ে, ব্যক্তিগত জিজ্ঞাসার মধ্যে পড়ে না।

-না পড়ে।

-আচ্ছা যাও আর নিব না।

-আপনি এমন কেন?

-কেমন?

-কেমন যেন গম্ভীর।

-আমি মোটেই গম্ভীর না। তুমি বেশি বাঁচাল।

-আপনি বুঝেন না আমি কেন বাঁচাল?

-না বুঝি না।

-আপনি মিথ্যা বলছেন। আপনি না বুঝলে এরকম স্ক্রিপ্ট লিখেনই বা কিভাবে আর সেগুলোকে একেবারে ফিল করিয়ে ডিরেকশন দেনই বা কিভাবে?

-ওটা আমার নেশা। নেশা থাকলে সব কিছুই করা যায়।

-আপনি কি কাউকে বুঝতে চেষ্টা করেন না?

-হুমম।

-কি হুমম।

-করি।

-আমাকে কখনো বুঝতে চেষ্টা করেছেন?

-না।

-কেন?

-তুমি কি আর কিছু বলবে?

-জ্বি।

-বলে তাড়াতাড়ি বিদায় হও।

-আমি আপনাকে ভালোবাসি।

রাজীব নিস্তব্ধ হয়ে যায়। জীবনে বহুবার এ কথা শুনেছে। সেই স্কুলে, কলেজে, ভার্সিটিতে, পাড়ার মঞ্চ নাটকে। কতবার এরকম মায়াকাড়া কত মেয়ের কথায় বিশ্বাস যে করেছে, তারপর বিশ্বাস ভঙ্গের যন্ত্রনায় ছটফট করেছে কতদিন। ভাবলে রাজীবের গা দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে যায়। রাজীব এখন আর কাউকে ভালবাসতে পারে না। শেষ ভালোবেসেছিল মঞ্চ নাটক করবার সময়। তারই সাথে অভিনয় করতো লীনা। অভিনয়ে তার অনেক সিনিয়রও ছিল। “শেষ কৃত্য” নাটকে রাজীবের জমিদারের চরিত্রে অভিনয় দেখেই প্রথম ভালোলাগা জন্মে লীনার। তারপর কাছে আসা, ভালবাসা। তারপর হুট করে একদিন কথাবার্তা ছাড়াই বলে দিল সে আর ভালোবাসে না। রাজীবের তখন ক্যারিয়্যার খারাপ যাচ্ছিল। এমনও অবস্থা হচ্ছিল যে অভিনয়ই ছেড়ে দেয় ভাব। ক্লাব পলিটিক্সের কবলে পড়ে রাজীব মঞ্চ নাটক থেকে বেড়িয়ে আসে। লীনার সাথে এরপর আর কোন যোগাযোগ নেই।

পুরনো স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কত সুন্দর সম্পর্কই না ছিল। কেউ কি জানতো, সেই সম্পর্ক অজানা কারণে ভেঙে যাবে? রাজীব খুলনা থেকে ঢাকা চলে আসে। ফিল্ম ডিরেকশনের উপর পড়াশোনা করে, নিজের ভেতর থেকে স্ক্রিপ্ট লিখে সেগুলোকে ফিল করে করে ডিরেকশন রপ্ত করে। “অবেলা”, “দায়”, “সুপুরুষ” এর মতো ন্যাশন্যাল অ্যাওয়ার্ড পাওয়া সিনেমা অল্প দিনেই উপহার দেয়। চারদিকে খ্যাতি আর খ্যাতি। যে বন্ধুদের সে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি লাইফে কোন কঠিন প্রয়োজনেও পায়নি, নাম কামানোর পর তারাই কোথা থেকে যে বেড়িয়ে আসা শুরু করে রাজীব নিজেই জানে না। কোথা থেকে কোন আত্মীয় এসে যে তার হাত ধরে বলে একটা ছবি তুলবো, আমি আপনার কাজিন হই, আমি তোমার চাচা হই, ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কত কি? রাজীব এদের কাউকেই মনে করতে পারে না। একসময় বিরক্ত হয়ে বাজে আচরণ করে ফেলে। কি মনে করে যে এরা এই বাজে আচরণকেও বিরাট রসবোধ মনে করে হাসে, রাজীব বোঝে না।

-রাজীব ভাই,

-হুমম বলো।

-আমি কি আমার প্রশ্নের উত্তর পেতে পারি।

-তুমি তো কোন প্রশ্ন করোনি।

এমন সময় সেলফোন বেজে ওঠে। এই অবস্থায় সেলফোন যে এভাবে বাঁচিয়ে দিবে রাজীব ভাবেনি। প্রডিউসার মোস্তফা ভাইয়ের ফোন,

-রাজীব কি ফ্রি আছো?

-জ্বি।

-এখন কি একটু পান্থপথে আসতে পারবে?

-কেন বলুন তো?

-আরে আমার এক ভাস্তির বিয়েতে এসেছি। সবাই বায়না ধরেছে তোমাকে আনার জন্য। আসতে পারবে না সমস্যা আছে?

-জ্বি আচ্ছা। আসছি।

-তাহলে সামুরাই কনভেনশন সেন্টারে চলে আসো। গাড়ি পাঠিয়ে দেই।

-না থাক, বাসেই চলে আসছি।

-কি যে কর না? এতবড় একজন ডিরেক্টর। আর এখন একটা গাড়ি কিনতে পারোনি?

-জ্বি চেষ্টা করছি।

-আচ্ছা আসো আসো। পরে কথা হবে এ নিয়ে।

রাজীব বেড়িয়ে পড়ে। নিশিও পেছন পেছনে চলে আসে। মেয়েটা আসলে চায় কি?

-কোথায় যাচ্ছো?

-আপনার সঙ্গে।

-আমি কি আসতে বলেছি?

-না বললেও কি আসা যাবে না?

রাজীব জবাব দেয় না। মাঝে মাঝে চুপ থাকলে অনেক সুবিধা। কথা বাড়ালে, মেয়েটা হয়তো আরো বেশি দুর্বল হয়ে যাবে। কে জানে, সে নিজেই হয়তো দুর্বল হয়ে যাবে।

রাতের ঢাকায় রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকা হয়ে যায়। মোহাম্মদপুরের এই রাস্তাটায় সবসময়ই ভীড় লেগে থাকে। এখন রাত পৌনে দশটা। শীতের রাত বলেই কি না কে জানে রাস্তাঘাট ফাঁকা। একটা সিএনজি ফাঁকা দাঁড়িয়ে ছিল। রাজীব সিএনজি নিয়ে পান্থপথ যায়। রাতের ঢাকাকে যে এত সুন্দর লাগে আগে হয়তো সেভাবে করে ভাবেনি। রাতের ঢাকায় নিয়ন আলোয় আঁকা-বাঁকা রাস্তাগুলোকে নদীর একেকটা বাঁকের মতো লাগে। সিএনজিতে রাজীবের পাশে নিশি বসে আছে। মেয়েটা রাজীবের হাত ধরে বসে আছে। রাজীব তাকে হাত ধরতে দিবে কেন? কিন্তু হাতটা সরিয়ে নিতে গিয়েও সরিয়ে নিচ্ছে না। কেন সরাচ্ছে না?

মোস্তফা ভাইয়ের কথা মতো কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকে পড়লো তারা দুজন। গ্রাউন্ড থেকে দোতলা পর্যন্ত পুরোটা বেশ সাজিয়েছে। বিয়ে বাড়ির সাজগোজে আজকাল লাইটিং বেশি হয়। এদের অনুষ্ঠানে পুরোটা সাজানো হয়েছে হরেক রকমের ফুল দিয়ে। ভদ্রলোকের রুচি আছে বলতে হবে, টাকাও আছে। রিসিপশনের সামনেই মোস্তফা ভাই দাঁড়িয়ে ছিলেন, সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কনের বাবার নাম শুনে বেশ পরিচিত লাগছিল। কোথায় যেন শুনেছিল। এমন সময় কয়েকজন মেয়ে এসে রাজীবের সাথে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার জন্য রিকুয়েস্ট করলো। পাশেই নিশি দাঁড়িয়ে আছে, নিশিকে নিয়ে কেউ ছবি তুলতে চাইলো না। নিশি কটমট করে তাকিয়ে চারপাশ দেখছে।

এখানে স্টেজ দুইটা। একটা কনের, একটা বরের। রাজীব কনে পক্ষের লোক, তাই সে কনের স্টেজের কাছে প্রথমে গেল। স্টেজের সামনে গিয়েই তার চোখ থমকে গেল। লীনা কনের জায়গায় বসে আছে। একেবারে পরীর মতো লাগছে দেখতে। বিয়ের সাজে মেয়েদের নাকি অন্যরকম সুন্দর লাগে। এটাই কি তাহলে সেই অন্যরকম সৌন্দর্য? এই সৌন্দর্যের নাম কি?

রাজীব লীনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রাজীবকে দেখে লীনার মুখে তেমন কোন ভাবান্তর হল না। স্টেজে বসার পর থেকে যেমন মুখ হাসি হাসি করে রেখেছিল সেরকমই করে রেখেছে। বিয়ের সময় মানুষকে না চাইলেও যেন হাসতেই হয়, ভেতরে বিরক্ত হচ্ছে কি না, দুঃখ পাচ্ছে কি না সে খবর ছবির মাঝে প্রকাশ না পেলেই হল।

রাজীবকে লীনা স্টেজের সোফা সেটে বসতে ডাকলো। সবাই সেখানে বসে ছবি তুলছে। রাজীব সোফায় বসতেই একসাথে অনেকগুলো ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলে উঠলো। এরই মাঝেই লীনা অস্ফুট স্বরে ঠোটে ঠোট মিলিয়ে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো,

-কখন এসেছ?

-মাত্রই।

-কেমন আছো।

-ভালো।

-মুভি বানাচ্ছো শুনলাম।

-চেষ্টা করছি।

-কথাবার্তার স্টাইল পাল্টালে না।

-জানি না।

-এই আমার হাতটা ধরবে?

-এখন এখানে?

-হ্যাঁ। ছবি তুলতে থাকলে কেউ কিছু মনে করবে না।

রাজীবকে হাত ধরতে বললেও লীনা নিজেই রাজীবের হাত খপ করে ধরে ফেললো। লীনার চোখে পানি চিকচিক করছে। ক্যামেরার ফ্ল্যাশ সেই পানিতে প্রতিফলিত হয়ে মুক্তোর মতো দেখাচ্ছে। আশেপাশের মেয়েগুলো দৌড়ে লীনার কাছে এসে বসে চোখ মুছবার জন্য টিস্যু এগিয়ে দিল। ক্যামেরার সব ফ্ল্যাশ নিভে গেছে। লীনা তবুও মুখ হাসি হাসি করে রাজীবের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে। আগের মতো ফিসফিস করে বলে উঠলো,

-আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো তো?

রাজীব জবাব দেয় না। সেও লীনার মতো মুখ হাসি হাসি করে লীনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। দুজনের চোখের কোণেই জল জমে আছে। লীনার চোখের জল মুছতে দিতে যেয়েও রাজীব তার হাত থামিয়ে নিল। লীনা চোখ বন্ধ করে রাজীবের হাত ধরে আছে। বন্ধ চোখের পাতার চাপে কোণে জমে থাকা জল টপটপ করে পড়ছে। বিয়ে বাড়িতে গান বাজছে। সবগুলোই রবীন্দ্রসঙ্গীত। লীনার চোখের জল না মুছেই রাজীব উঠে পড়লো। সবকিছুতেই ডিরেক্টরের হাত দিতে নেই।

আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে।

ভয় কোরো না, সুখে থাকো,বেশিক্ষণ থাকব নাকো--

এসেছি দণ্ড-দুয়ের তরে॥

আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে।

ভয় কোরো না, সুখে থাকো,বেশিক্ষণ থাকব নাকো--

দেখব শুধু মুখখানি,শুনাও যদি শুনব বাণী,

নাহয় যাব আড়াল থেকে হাসি দেখে দেশান্তরে॥

আজ তোমারে দেখতে এলেম অনেক দিনের পরে।

ভয় কোরো না, সুখে থাকো,বেশিক্ষণ থাকব নাকো--

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×