গন্ধটা মনটাকেও নাড়া দেয়। পরিচিত। খুব পরিচিত ।
আমি নতুন এ বাসায় এসেছি সবে মাত্র দুদিন হলো। আসার দিন থেকেই গন্ধটা আমার পিছু পিছু ছুটছে। মনে হয় তার বিলীন হওয়ার কোনো জায়গা নেই। সে শুধু আমারই পিছু নিয়েছে। আমার নাকটাই যেনো তার নিশানা। সেখান দিয়ে ঢুকে সে সোজা চলে যায় আমার মস্তিষ্কে। সেখানে সে কৌতুহলের সৃষ্টি করে। সে কৌতুহল আমার মনে গিয়ে পৌছে। মনটা আমাকে অস্থির করে তোলে।
আজব! বড় আজব এক গন্ধ।
প্রথমদিন পেয়েছিলাম যখন সিড়ি বেয়ে দো-তলায় উঠছিলাম। বুকটা তখন ধক করে ওঠে। আরে! এ যেনো কার গন্ধ?
ওহ! প্রিয় পাঠক, আপনাদের শুরুতেই বলা উচিত ছিল। গন্ধটা একজন মানুষের গন্ধ। খুব পরিচিত মানুষের গন্ধ। কিন্তু কার যে গন্ধটা তা ভেবে পাই না।
যাইহোক, প্রথমদিন গন্ধটা পেয়ে খুব একটা পাত্তা দেইনি। কিন্তু এখন তো দেখছি আমি এক মহাবিপদে পড়ে গিয়েছি। কিছুতেই গন্ধটা আমার পিছ ছাড়ছে না। আমার দু-কামরার ঘরের আনাচে কানাচে গন্ধটা খুঁজে বেড়িয়েছি। ঠিক কোথা থেকে আসে ভেবে পাই না।
প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম মায়ের গায়ের গন্ধ। মা মারা গেছে সেই কবে। গন্ধটা ভুলেই গেছি। হয়তো মাকেও ভুলে গেছি। মাও হয়তো আমার কাছে মরে গেছে। দেহের সাথে সাথে আমার ভেতরের অস্তিত্বে মা হয়তো বিলীন হয়ে গেছে। তাই হয়তো মা তার গন্ধ আমাকে পাঠিয়েছে। তাঁর দেহের গন্ধে ছেলে যেনো আবার মার কথা মনে করার সুযোগ পায়। তাই হয়তো।
মা প্রায়ই বলতো, জন্মের পর একটি শিশুর তো বোঝার ক্ষমতা হয় না, তার মা কে.....বাবা কে...। শিশুটি চিনতে পারে মায়ের গায়ের গন্ধ দিয়ে। মাকে সে ঠিকই চিনে নেয়। কারণ গন্ধটার সাথে তার একটা পরিচয় ঘটে। অর্থাৎ, মায়ের সাথে তার সন্তানের সম্পর্কের শুরুই হয় গায়ের গন্ধ দিয়ে।
পৃথিবীর কত গভীর লিলাখেলা।
যাইহোক। মায়ের গন্ধ কিনা তা শিওর হওয়ার জন্য আমার কাছে মায়ের স্মৃতি হিসেবে রেখে দেওয়া একটা শাড়ী বের করি। একদম ভালো মতো তা সুকে দেখি।
নাহ। এ গন্ধ মায়ের না। মায়ের গন্ধটা অন্যরকম। একদম অন্যরকম। চোখে পানি চলে আসে। মায়ের গন্ধে অসাধারণ পবিত্রতা। পবিত্রতায় নিজেকে পৃথিবীর সবচাইতে অপবিত্র সন্তান মনে হয়। মায়ের সরলতা যেনো সেই গন্ধটাতেও বোঝা যায়। বছর বছর পার হয় অথচ মায়ের গন্ধ ঠিকই তার শাড়ীতে লেগে থাকে। এই শাড়ীটি আমি স্বযতেœ নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। এটা মায়ের পছন্দের শাড়ীর একটি ছিল। প্রায়ই মা পরতো। সাদার বুকে কালো ডোরা-কাটা ডিজাইন। শাড়ীর কারুকাজ ব্যখ্যা করতে আমি পারি না। তাই আপনাদের সে সুন্দর স্বাভাবিক শাড়িটার ব্যখ্যাও দিতে পারছি না। তবে শাড়ীটার মধ্যে মায়ের সরলতা লুকিয়ে ছিল। মা যখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায় তখন এই শাড়ীটাই মা পরে ছিল। মাকে হাসাপাতালে নেয়া হলো। মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। তখনও শাড়ীটি পরিধান অবস্থায়। শাড়ীটি যেনো সব কিছুর সাক্ষি। তাই শাড়ীকে আমি নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। শাড়ীটিতে রয়েছে মায়ের গন্ধ; মায়ের মৃত্যুর গন্ধ।
আচ্ছা! মৃত্যুর কি কোনো গন্ধ হয়?
হয়তো হয়। কারণ, এই শাড়ীর গন্ধটাতে সরলতার পাশাপাশি আরেকটা কি যেনো অনুভূতি মেশানো আছে। গন্ধ আর অনুভূতি। গন্ধটা নাক দিয়ে ঢুকে যায় সাথে অনুভূতিটাও। বুকটা খালি করে দেয়। একদম ফাঁকা। যেনো আমার বুক তৈরী হয়েছে অসংখ্য ফুটো। আর সেই ফুটো দিয়ে গন্ধটা বের হচ্ছে। প্রবাহিত হচ্ছে বাতাসের মতো। আমি সত্যিই এমনই একটা কিছু অনুভব করি। তাই তো বললাম, এই শাড়ীটিতে একটা অনুভূতিও বাস করে।
ইদানিং যে গন্ধটা আমার উপর হামলা করছে তা মোটেও মায়ের গায়ের গন্ধ নয় এ ব্যপারে আমি নিশ্চিত। বললাম তো। মায়ের গন্ধে একধরনের সরলতা আছে। কিন্তু এই গন্ধটা কেমন যেনো। নেশা লাগানোর মতো। নেশাগ্রস্থ করে দেয়। মাতাল করে দেয়। সব কিছুর থেকে কনসানট্রেশান ব্রেক করতে সে সক্ষম হয়। মনের মধ্যে তো বটেই সাথে শরীরের মধ্যেও নাড়া দেয়। মনে হয় এ শরীরটাও যেনো গন্ধটার সাথে পরিচিত। এ শরীরটাও যেনো উদগ্রীব হয়ে ওঠে। শরীরটাও যেনো গন্ধটাকে আকড়ে ধরতে চায়। এ শরীরটা যেনো গন্ধটাকে খোঁজার জন্য আমার মনকে জানান দেয়। তাই হয়তো মনটা আনচান করে ওঠে। অস্থির হয়ে যায়।
২.
অনেক রাত। একদম বিঘুটে অন্ধকার। একটি আলোও জলছে না। ঘুমও আসছে না। অন্ধকার ঘরে হঠাৎ দম বন্ধ হয়ে আসছে। উঠে পড়ি। অন্ধকার বড্ড বিছরি। একদম ধ্বংসাত্বক। মনে হয় সমস্ত কিছুকে উল্টে-পাল্টে ফেলছে। সাথে গন্ধটাও ছড়িয়ে আছে। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। চেতনারা আর সইতে পারে না। সিগারেটের গন্ধটাও পরাজিত হচ্ছে ঐ গন্ধটার কাছে।
আশ্চর্য! গন্ধরা কি ঘুমায় না? ওদের কি ঘুমের প্রয়োজন হয় না? ওদের কি বিশ্রামের দরকার হয় না?
ঘরের বাতি জালিয়ে বের করি পুরণো ডাইরি। সেখানে ঘুমায় আমার অতীতগুলো। ওদের আমি ঘুম পাড়িয়ে রাখি। মাঝে মাঝে আমি তাদের জাগাই। তারা তখন আমার সাথে কথা বলে। তাদের কথামালার ঝঙ্কারে বেজে ওঠে সুখ-দুঃখের ধ্বনি।
সেখানে একটি ছবি আছে। একটি মেয়ের ছবি। টানাটানা চোখ। স্বচ্ছ চোখ। মেটো গায়ের রং। মিষ্টি হাসি। সরলতা নেই। আছে সব কিছুতে রহস্যময়তা। সেই মেয়েটি যার সাথে কাটিয়েছি অনেকগুলো বছর। যার সাথে ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে ছিলাম অনেকগুলো দিন।
অনুভূতিময়-অবেগময় সেদিনগুলো যেনো বন্দী হয়ে আছে এই ডায়রীতে।
মেয়েটি। ঝিমু নামের মেয়েটি বন্দী হয়ে আছে ডায়রীর মাঝবারাবর। একটি ছবি হয়ে সে এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ওকে মুক্তি দেয়া হয়নি। এ ছবি ডায়রীতেই আবদ্ধ। ঝিমু যদি আমার হতো তবেই ওর মুক্তি হতো। ডায়রী থেকে বের হয়ে হয়তো সামনে থাকতো। আমার পাশে থাকতো। আমার ঘরের দেয়ালে ঝুলতো ওর ছবি। কিন্তু ও মুক্তি পায়নি। রয়ে গেছে অন্তরালে। একদম গহীনে।
গন্ধটা কি তবে ঝিমুর! ঐ যে বলছিলাম, এ শরীরটাও গন্ধটাকে খুঁজে বেড়ায়। এ শরীরটারও পরিচিত গন্ধ। হ্যাঁ। হতেও তো পারে। গন্ধটা ঝিমুর।
একজন নারী-পুরুষের দৈহিক সম্পর্কের আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে তাদের গায়ের গন্ধ। দৈহিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়ে যায় গন্ধ পেয়েই। তাই কি! তাই কি এতো পরিচিত!
যেদিন ঝিমু প্রথম আমার বিছানায় শুয়েছিল। কি আবেগ ছিল তার মাঝে। আমি শুধু তার আবেগ দেখছিলাম। চোখ বন্ধ করে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার আবেগ। আমাকে শক্ত করে ধরে রাখার আবেগ। জোরে-জোরে নিশ্বাস নেয়ার আবেগ।
এ সবকিছুর মধ্যেই ছিল গায়ের গন্ধ। শরীরে শরীরে মিলনে গন্ধেরও তো মিলন হয়েছিল। গন্ধটা তাই হয়তো এতো পরিচিত।
আমার বিছানায় একসময় প্রায়ই আমি ঝিমুর গন্ধ পেতাম। মনে হয় এখনও সেই আবেগ নিয়ে ও শুয়ে আছে। চোখ বন্ধ করে নিজেকে সমর্পণে সে প্রস্তুত। নিজেকে দিয়ে দিয়েছে আমার কাছে।
ভালোবাসা। আবেগ। গন্ধ। সব সব কিছু আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। গন্ধটা কি তবে ঝিমুর? এতো এতো বছর পর কেনো এই গন্ধের আগমন?
ঝিমুকি আমার পাশে? ওর অস্তিত্ব কি আমাকে খুজে বেড়ায়? ওর গন্ধটা কি আমাকে খুজে পেয়েছে? তাই কি আমাকে এভাবে আকড়ে ধরেছে?
৩.
আমি এই বাড়িতে এসেছি নতুন।
বাড়িটি তিনতলা। আমি থাকি দো-তলায়। নিচ তলায় গাড়ীর রাখার সুবন্দবস্ত। দো-তলার দুই ইউনিটের মধ্যে এক ইউনিটে আমি থাকি। অরেক ইউনিটে বাড়িওয়ালা। বেচারা বুড়ো। একা থাকেন। ছেলে মেয়ে সব বিদেশে। পড়াশুনা করে আর দেশে আসার অপরাধ করেনি। সাথে বাবাকে সঙ্গ দেয়ারও অপরাধ করেনি। বাবা একাই থাকুক। বিদেশে এসে একাকিত্বে সময় কাটবে। তাই বিদেশ গিয়ে কি করবেন। দেশে থাকেন। মানুষজনের পাশাপাশি থাকবেন।
এই কথাগুলো বৃদ্ধ আমাকে বলেছিলেন। হাসতে হাসতে বলেছিলেন, আমাকে বলে, দেশে থাকলে মানুষজনের পাশাপাশি থাকবেন। আমিও বলি, ইউ আর রাইট মাই চাইল্ড। তোমরা তাহলে স্বীকার করছো, ঐ দেশে মানুষ থাকে না। হা হা হা..
বৃদ্ধ খুব মজা নিয়ে কথা বলে। যেনো এ জীবন তার কাছে এক খেলা। তার সন্তানের বেহায়াপনা তার কাছে খেলা। যে খেলা সে উপভোগ করে।
যাইহোক। সে ঘরে ঝিমুর অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না।
আছে তিন-তলা। সেখানে স্বামী-স্ত্রী থাকেন। তিন সন্তানের পিতা-মাতা তারা। এ খবর দারোয়ানের কাছ থেকে নিয়েছি।
গন্ধটা তখনও পিছু ছাড়ে না। ঝিমু কি তবে তিন সন্তানের মা? যার শরীরের সাথে একসময় মিশেছিল আমার শরীর সে শরীর এখন অন্য পুরুষের রোষানলে পড়ে জন্মেছে তিন সন্তান। তা কি উপভোগ করে ঝিমু? আমার মতই আবেগ নিয়ে সে কি নিজেকে সমর্পণ করে? সে কি ভালোবাসে?
যদি সবকিছু ঝিমু পক্ষে থাকে তবে এ গন্ধ কেনো আমার কাছে আসে? কেনো এ গন্ধ আমার পিছ ছাড়ে না। প্রকৃতি কেনো তার গন্ধ আমার কাছে পৌছাচ্ছে।
দো-তলার সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছি। উঠছি তিন-তলার দিকে। আজ বের করেই ছাড়বো।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। এই তো গন্ধটা আরও গাড়ও হচ্ছে। আরও আমার কাছে আসছে। এবার সে আমাকে জড়িয়ে ধরছে। একদম আলিঙ্গণ করছে। আমার কাছে ধেয়ে আসছে।
যদি ঝিমুর স্বামীর সাথে আমার কথা হয়। যদি সত্যি সত্যিই ঝিমু হয়? তবে.....তবে সেই আবুল হাসানের কবিতার মতো,
চেপে যাই। তবু একি অস্থিরতা, অন্তরালে এ কী ঝড় বয়!
ভাঙ্গে, খন্ড খন্ড করে যেনো সব নিয়ন্ত্রিত গোপন বিন্যাস
আমাতে লুকিয়ে ছিলঃ আজ তারা আকষ্মাৎ এদিক ওদিকে
খুলে পড়ে, পাখি, বীজ, অমরতা, লৌহবোধ, শক্তির বিকাশ!
আর আমি পড়ে থাকি একা একা দ্রবীভূত আত্মার কানন,
আমাকে দেখেনা কেউঃ না পুষ্প, না ফলশ্র“তি- অদৃশ্য হাওয়ার
সেচ্ছাচার ধীরে ধীরে গিলে খায়- নিয়তিও আমাকে অস্থির
বধির বিন্যাসে রেখে ধাবমান, দ্যাখো ঐ, ঐ ধাবমান।
এ কবিতা দিয়ে সব কিছু বলে দেয়া যায়। মনের কথা কবিতা বলে। আমিও বলেছি। যদি তিন-তলায় ঝিমুর বাস হয়?
হ্যাঁ। কলিংবেল। দরজা খুলছে। গন্ধটা আর গাড়ো হচ্ছে। খুলে গেলো দরজা। একজন ভদ্রলোক। পরিচয় দিলাম।
ব্যতিব্যস্ত হয়ে তিনি আমাকে আপ্যায়ন করছেন। আমি ড্রয়িং রুমে। আড্ডা জমছে। সব কিছু হচ্ছে। তিন সন্তান ঘুরে ঘুরে আমাকে দেখে যাচ্ছে। এ বাড়ির নতুন ভাড়াটিয়াকে দেখছে।
কিন্তু গন্ধটা আরও বেগমান হচ্ছে। আমার সমস্ত চেতনাকে উল্টে ফেলছে। একি একি ঝিমুর ঘর? একি ঝিমুর স্বামী?
সব.... সব ঘোলাটে হয়ে উঠছে। তবু... তবু একি অস্থিরতা, অন্তরালে একি ঝড় বয়! ভাঙ্গে, খন্ড খন্ড করে যেনো সব নিয়ন্ত্রিত গোপন বিন্যাস।
ভদ্রলোক তার স্ত্রীকে ডাকে। নাম ধরে নয়। কোনো এক সন্তানের মা বলে। রুমীর মা। কোথায় তুমি। এসো। আমাদের বাড়ির নতুন ভাড়াটিয়া।
গলার শব্দ নেই। বাচ্চাগুলো দৌড়ে ভেতরে গেলো মা মা করে। আমি বসে আছি। অপেক্ষা। গন্ধ আবিষ্কারের অপেক্ষা। আসবে। ঝিমু আসবে। নাকি গন্ধ আসবে। গন্ধ পুরো ঘরের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
আসছে। পায়ের শব্দ। কেউ একজন এগিয়ে আসছে। ভেতর ঘর থেকে কেউ আসছে। হাটার খসখস শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
নিয়তিও আমাকে অস্থির বধির বিন্যাসে রেখে ধাবমান। দ্যাখো ঐ, ঐ ধাবমান।
আমাকে দেখে না কেউঃ না পুষ্প, না ফলশ্র“তি......
আসছে। গন্ধ এগিয়ে আসছে। আমার নাকে আটকে গেছে সেই গন্ধ। ঝিমুর গায়ের গন্ধ। আসছে গন্ধ। গাড় থেকে গাড় হচ্ছে। আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
খন্ড খন্ড করে যেনো সব নিয়ন্ত্রিত গোপন বিন্যাস আমাতে লুকিয়ে ছিলঃ আজ তারা আকষ্মাৎ এদিক ওদিকে খুলে পড়ে, পাখি, বীজ, অমরতা, লৌহবোধ, শক্তির বিকাশ!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৫৬