পরানসখা, বন্ধু হে আমার
সপ্তম শ্রেণীতে শরৎবাবুর কাহিনী থেকে
শতজনমের আগে
কানে কানে যে গল্পটা তুমি শুনিয়েছিলে
একদা এক বাদল শেষের রাতে
জেনেছিলাম তোমার আর আমার প্রেম
ঈশ্বরের মত এক ও অবিভাজ্য
প্রথম চুম্বনের মত
এক দেশপ্রেমের মতই সেটা পবিত্র
শাশ্বত, অবিনশ্বর, অমর।
বীণাপাণির বরে
তুমি কবি, গল্পকার, উপন্যাসিক,
তুমি মহান চলচ্চিত্র নির্মাতা
তোমার কবিতা
তোমার গল্প
তোমার উপন্যাস
তোমার সিনেমা
উত্তম-সুচিত্রা
রাজ্জাক-কবরী
সবই তোমার কল্পনা
আমি কখনও লিখিনি এই গল্প।
মধুর রোমহর্ষ সেই আলাপে
লভিনু সঙ্গ তব
সুন্দর হে একেশ্বরবাদী।
ভাবতাম আমার জন্মশহর
ঢাকার কোন এক নিরালা কোনে
তেমন একটি একগামী মিষ্টি প্রেমের গল্প
লিখে সমগ্র জীবন কাটবে
তোমার আমার লাল-নীল সংসারে
কানে কানে একবার বলে যাবে
তুমি যে কতটা আমার
আর আমি যে চিরকাল তোমার।
না জমিজমা, ব্যাংক ব্যালেন্সের দখলীস্বত্ব
কেবল তোমার দেহ-মনের উপর
তোমার সন্তানের উপর শুধুই আমার স্বত্ব হবে
এমনটাকেই সর্বসুখের আধার
ভেবে ভেবে নির্ঘুম জ্যোৎস্নার প্লাবনে ভেসে গেছি
এর ভিন্ন কিছু হতে পারে
আরও অনেক রকম ঈশ্বর থাকতে পারে
তোমার সাহিত্য সেটা আমাকে কখনও বলেনি
একেশ্বরের উপাসিকা আর আমি
জানিনি আমার হৃদয়
কি কথা বলে, কাকে বলে?
সে কেন জলের মত ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়?
তুমি আর আমি, আমি আর তুমি
মিলে যেন আমরা জন্মান্তর ধরে
জগত সৃষ্টি-সৃজন-পালন করে যাব
এমনটাই তো তোমার প্রতিশ্রুতি
শ্রেষ্ঠতম সঙ্গীতে
জনম জনম আমার কানে
মধুবর্ষণ করে গিয়েছিল।
তোমার অর্ধেক কল্পনার অর্ধেক মানবী হয়ে
অনন্ত জীবন সুখে শান্তিতে
কেটে যাবে বলে ভেবেছিলাম।
আমার জন্যে লক্ষণরেখা এঁকে
বহুঈশ্বর তুমি নিষিদ্ধ করে রেখেছিলে
তোমার একগামী প্রেমের রহস্যরোমাঞ্চ গল্পে
আত্মবিস্মৃত হয়ে কেটে গেছে কয়েক জীবন,
যতক্ষণ না ইতিহাসের আলোর কিরণে
তোমার বহুঈশ্বরীদের গল্পের বইগুলোর পাতা
বহু ভাষার অনুবাদে রক্তেমাংসের মানবী হল।
তোমার জান ওয়ান জান টু জান থ্রিকে
গোড়া থেকে উচ্চতর গণিতের মত
না শেখবার কঠিন মাসুল গুণেছি
তোমার বহুঈশ্বরীর আসঙ্গলিপ্সায়
প্রজ্বলিত নরকের দুয়ারে দুয়ারে
আমি একে একে ঈর্ষা, ঘৃণা ও আত্মপ্রবঞ্চনার
কক্ষ পথ ঘুরে
তোমার প্রেমের সলিলে
ডুবে যাওয়া মরাকে খুঁজে পেয়েছি।
তারপর পদ্মদীঘির কালো জলে
স্নান সেরে আর কোন রাজপুত্রের শরীর থেকে
আর কোন কণ্টক উত্তোলন করিনি
একে একে আমার নিজস্ব কণ্টকিত শরীরে
বীণাপাণির মহৌষুধী সেবন করে
অসংখ্য গোলাপের ঘ্রাণে ভস্ম থেকে জেগে উঠেছি
জ্ঞানচক্ষুর পাঁপড়ি মেলে মনে পড়ে গেছে,
বীণাপাণির আসল পরিচয়
আর কেউ নয়
বিশ্বব্রহ্মার প্রণয়িনী আমি নিজেই
এবার গল্পের নতুন অধ্যায়ে
রচয়িতা ও প্রকাশক আমি
জান ওয়ান জান টু জান থ্রি
চিরসখা হে, নতুন চরিত্রে
শীঘ্রই শুভ মুক্তি দিতে যাচ্ছি তোমায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



