somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামোফোব নারীবাদ শেষপর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর

২৭ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তফাৎ যান!
ইসলামোফোব নারীবাদ শেষপর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর!

১৬ জুলাইয়ে রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের হত্যা থেকে শুরু হয়ে হাজার তরুণ শিক্ষার্থী নিধনের গোটা সময়টা চুপচাপ থেকে এক দল নারীবাদীদের দেখলাম অগাস্টের ৫ এর পরে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে বিপ্লব-পরবর্তী রাষ্ট্রে নারীদের কি হবে বলে দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।ছাত্র-জনতার সমর্থনের বিভিন্ন পোস্টে প্রকাশ্যে ও আড়ালে কোন রকম উস্কানি ছাড়াই অযাচিতভাবে এসে "বোরখা পড়ে গর্তে ঢোকা"র ভয় দেখাতে শুরু করেছিলেন।বাংলাদেশের "পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য" হওয়ার ভয় দেখাইছেন।সন্তানের বয়েসী বাচ্চারা যখন জানবাজি রাইখা মাফিয়া রাষ্ট্রের মূল উৎপাটনে রাজপথে সংগ্রাম করছিলো, ঠিক তখনই আবার কিনা এই গোষ্ঠী নারীদের মধ্যে সমানে ইসলাম-ভীতি সঞ্চার করবার চেষ্টা চালায়ে গেছেন!নারীদের মধ্যে বাংলাদেশে "ইসলামী শাসন কায়েম" হয়ে যাওয়ার ভয় ছড়াইসেন।আজ অব্দি তিনারা ননস্টপ আছাড়ি-পিছাড়ি দেশ "শরিয়া আইনের অধীন" এ চলে যাওয়ার জুজু দেখায়েই যাচ্ছেন।

অথচ, কি আজব!গত ১৫ বছর ধরে ভয়, গুম-খুন, ধর্ষণের পরিব্যাপ্ত ভয়াল সংস্কৃতিকে এই ইসলামোফোব নারীবাদী গোষ্ঠীর কাছে ভীতিকর মনে হইল না! আওয়ামী রেজিমের ক্ষমতার বলে বলীয়ান রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আমলা, মিডিয়া লর্ড, পুলিশ, মন্ত্রী, আর্মি, এলাকার পাণ্ডা, পুরুষদের একের পর এক যৌন আগ্রাসন ও লাগাতার ধর্ষণের খবরগুলো আপনাদের যথেষ্ট বিচলিত করে নাই কেন? ঘরে-বাইরে, বাসে-ট্রেনে-রাস্তায় - সর্বত্র বিরাজমান যৌন-নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্ক আপনাদের গ্রাস করলো না কেন? ফ্যাসিবাদী ক্ষমতার চুড়ায় বসা কতিপয় অত্যাচারী জালেম নারী ধন-সম্পদের পাহাড় বানাল, মিডিয়ার টক শো কাঁপালো, পুরস্কার বাগাল, আর সেই সব গল্প আপনারা নারীদের ক্ষমতায়ন নামে প্রচার করলেন? রোকেয়া আফজাল, রুবিনার ক্ষমতাকে আপনারা ভূমিহীন কৃষকের উদ্বাস্তু মেয়েদের, গার্মেন্টসের নারীদের ক্ষমতায়ন নামে দেশবাসীকে ধোঁকা দিলেন? এই রেজিম শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরীর দাবীকে ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করতে চাইলে আপনাদের দিক থেকে কোন আওয়াজ শোনা গেল কি? গ্রামীণ কৃষক নারীদের কথা আপনারা বেমালুম ভুইলা গেলেন? আদিবাসী কিশোরী প্রীতি উরাং মত গৃহকর্মীর উপর নির্যাতনের ক্রিমিনাল অফেন্সগুলা রীতিমত উপেক্ষা করলেন?

বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে তনু, মুনিয়া, সাহসিকার মত ধর্ষণের মামলাগুলোতে ক্ষমতার দাপটের সাথে কিভাবে জোরদার লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছিলো, সেইসব ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।কতিপয় আওয়ামী সুবিধাভোগী নারীরা ক্ষমতার উচ্চপদে আসীন হয়ে সারাদেশের নারীদের প্রকৃত স্বার্থগুলোর সাথে গাদ্দারি করে গেছে।দেশের নারীদের "পশ্চাদপদ" রাখবার জন্যে গণতন্ত্রহীনতা না, একনায়কতন্ত্র না, দুর্নীতি না, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন না, সীমান্তে ফেলানিদের হত্যা না, মিডিয়াতে নারীদের বেশ্যাকরণ না, যৌন নিপীড়ন সেলগুলো হাইজ্যাক করে ফেলা না, বাংলাদেশের নারীর স্বার্থ বিরোধী অগণিত কর্মকাণ্ড আপনাদের কাছে আপত্তিজনক মনে হয় না। আপনাদের একমাত্র সমস্যা ইসলামের অনুসারী নারীদের জীবনধারা!কেবলমাত্র "পশ্চাদপদ" "মৌলবাদী" "ধর্মান্ধ" "মাদ্রাসা" "হুজুর" গোষ্ঠীর জুজু দেখিয়ে আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের সহায়ক শক্তি হওয়া, নারী উন্নয়নের বুলি কপচানো, নারীমুক্তির বিকল্পহীন ত্রাণকর্তা হিসাবে হাসিনার শাসনকে পরিবেশন করা ছিল আরেক জঘন্য কৌশল।

পৃথিবীর আর সকল ধর্ম অনুসারী নারীরা - হিন্দু ধর্ম প্র্যাকটিস করে, খ্রিস্টান বা ইহুদী মূল্যবোধ ধারণ করে, বৌদ্ধ জীবনধারা অনুসরণ করে - অসংকোচে কোন বাধা ছাড়াই তথাকথিত এই নারী স্বাধীনতার প্রকল্পে ইনক্লুড হইতে পারে, কেবল মুসলমান নারীদের জীবনধারার বিরুদ্ধের যত আক্রমণ? আর কোন ধর্মের সিম্বলিজম বহন করা নিয়ে আপনাদের আপত্তি দেখলাম না। কেবল ইসলামিক সিম্বলিজমের প্রতি আপনাদের অনন্ত বিদ্বেষ। কেবল ইসলাম ধর্ম প্র্যাকটিস করা নারীরা এই নারীবাদে ইনক্লুড হইতে পারে না? এই রহস্যের কোন কিনারা নাই যে, মুসলমান হইলেই নারী সঙ্গে সঙ্গে "Other" হইয়া যায় ক্যান? অদৃশ্য হয়ে যায় কেন?

প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত লাগাতার চলা গণহত্যা থেকে এটা পরিষ্কার যে, ইসলামোফোব নারীবাদ জায়নবাদের সহচর, নিও-লিবারেল যুদ্ধ-কারখানার মতাদর্শিক সঙ্গী! যারা কিনা আমাদেরই দাঁড়ি-টুপী-লুঙ্গী পরা বাপ-ভাইদের আমাদের শত্রু হিসাবে প্রচার করে, দেশে দেশে নিজেদের উপনিবেশকে জারী রাখে, এইসব অঞ্চল পদানত রাখতে "সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ" এ তহবিলের ব্যাবস্থা করে। তাদের পা চাটলে সঙ্গী, আর না চাটলে জঙ্গী আখ্যা দেয়। সময় আসছে, এই নারীবাদকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলার।ফিলিস্তিনের নারীদের কাছ থেকে আমাদের নতুন নারীবাদের দীক্ষা নিতে হবে।হিন্দু-মুসলমান ভাইদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকল প্রকার বৈষম্যবিহীন নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের সামিল হওয়ার কোন বিকল্প নাই।

ইসলামোফোবদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই।

খালাস!

অগাস্ট ২৭, ২০২৪
মঙ্গলবার
উইস্কন্সিন, যুক্তরাষ্ট্র
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৫:৩৭
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×