১.
একটা আদরের চিহ্ন রেখে গেলাম। পারতপক্ষে না রাখাটাই ভাল। ভুল যোজনে ভুল হয়ে যায়। ধর, আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামলো। তুমি নাম দিলে আষাঢ়। আমি গাণিতিক বিষয়াদিতে দূর্বল। তবুও উত্তর দক্ষিণ বরাবর আলম্বিত এক প্রায়ান্ধকার দিন দেখি।
২.
সমগ্রতা নিয়ে আছি। এই সব রোদ দুপুর সকাল বিকেল। কিভাবে কাটে সন্ধ্যা। বেঁচে থাকাটা নিদারুন আনন্দের। যদি থাকে ধরার মত একটি হাত। দেখার মত খোলা আকাশ। একটা রুপালী চাঁদ।
৩.
পাড় হয়ে যাচ্ছে নদী। আমার বাঁচার সাম্পান। হিয়ার করতলে বিস্মৃত গান। আঁখি পটে ভাসমান স্মৃতি। একদা আমার কবন্ধে ছিল রৌদ্র করটি।
৪.
বন্ধু তোর প্রতীক্ষায় পনের বছর। আমি ঘর হীন। বাহির বাড়ি বারান্দা। দ্বীন অদিন। বন্ধু তোর প্রতীক্ষায় বাড়ি ঘর ছাড়া। ঘর বাড়ি হীন। নির্বিঘ্নে কাটেনাতো দিন। কত দিন কত রাত, রাত হলো প্রভাত। বন্ধু তোর প্রতীক্ষায় পথ হলো পথিক, পথিক হলো পথ। তোর জন্যে জীবনের মানে বরাত।
বন্ধু আসল কিংবা নকল তুমি চিনোনি। অপেক্ষায় কে থাকে তা জানোনি। বন্ধু জীবন হলো যুদ্ধ। তোর জন্য পথ রুদ্ধ। এ পথিক হলো বৃদ্ধ তা দেখনি। বন্ধু আমায় ভাবোনি। বন্ধু প্রতীক্ষা বুঝনি।
৫.
এটা না হলে ওটা হবে
এক না হলে দুই হবে
প্রশ্ন হবে
উত্তর না হলে মাথা আঁচরাবে।
হবে, ঘর না হলে পর হবে
আপন না হলে পর হবে
এই যে লতা তার একটা ঠাঁই হবে
কোমল না হলে কালো হবে
রাত হবে, দিন হবে
ঋণ হবে কানাকড়ি
যাই হোক হবে কিছু
জেনে রেখো তোমাকে ছাড়া
হবে না কিচ্ছু।
৬.
শোন বেহালা
তোর কোলে
আজ আমাকে শুতে দিও
একটু না হয় ঘুমিয়ে নিবো।
দেখা হয় না জমজমাট এক গানের আসর
কত দিন যে, আগল পাগল কথা হয় না
বন্ধুরা সব কোথায় গেল
যাক না সবাই যে যার পথে
তোমার কোলে শুতে দিও।
শোন বেহালা পছন্দ ঐ এক চপলা
রাত বিরাতে কাটাতাম এক নদীর তীরে
না হলে এক পদ্ম ফোটা পুকুর পাড়ে
গান শোনাতো হাসনা হেনা
বকুল গাছে শিরশিরে এক
বাতাস বইতো।
শোন বেহালা তোর গানে আজ মাতাল হবো
ভুলে যাবো উত্তরে সব বেভুল গান
কেমনে বলি, সে যে মোর
আসা যাওয়ার পথের প্রাণ।
৭.
কি মনে করে একটা শব্দ লিখিনি। সেখানে একটি বিষাদময় বৃক্ষ জন্মেছে। আবহমান কাল ধরে ঝুলে আছে কৃষ্ণকায় ফল। শুধু একবার ডাকিনি বলে আর কেউ আসেনি।
ওফেলিয়া নামের মেয়েটি ছিল বিমর্ষ এক বৃক্ষ, বিষন্নতম ফুল। শুধু যারা জানতো তারাই তাকে ছুঁতে পেরেছে। মেয়েটি সহোদরের জীবন ভালবেসে পৃথিবী ত্যাগ করেছিল। নিজের জীবনের বিনিময়ে সে হয়েছিল ধরিত্রী রাণী। আজ আমার কবিতাগুলো ন্যুব্জ হয়ে তাকে কুর্নিশ করার উদ্দেশ্যে ধাবিত হচ্ছে। তারা ফলবান বৃক্ষ হতে চায়। বলতে চায় একটি শব্দ ভালবাসি।
৮.
সে দেখে গেল অযাচিত জীবন। তুমি বোধে রাখোনি তারে। হিয়ার করতলে কান্না জমে আছে। অশ্রুরা বিষাদ বিপন্ন। এ জীবন অসংলগ্ন। উপেক্ষায় জীবন পুড়ে ছাই। কাঠ কয়লায় নাইবা সিদ্ধ হলো সহজ উপাচ্য। তুমি পুড়ে পুড়ে অংগার।
৯.
গ্লাণিরা কখনো বলবে না আমি আছি। তারা আছে তোমার পিছে। তোমার মুমূর্ষতায় তারা জীবন্ত। জীবন মানে যুদ্ধ, পুরনো প্রলাপ। গ্লাণিরা পুরনো ও প্রকট।
১০.
হাজার বছর ধরে মনে করো অপেক্ষায় আছো। প্রাচীন ঐতিহ্যগতভাবে বিধ্বস্ত এক নগরী। কেউ কাউকে চিনলো না। অতীতের কথা কেইবা মনে রাখে। মনে করো আমিও ছিলাম না। কাকে মনে পড়বে তখন। তোমার সৃষ্টির সূত্র না সৃষ্টিকর্তা। সৃষ্টি সংকটে না ভূগে মনে করো কেউ তোমার শুশ্রূষায় ব্যস্ত। উত্তর ক্রম বিবর্ধিত হবে। আসল রহস্য সীমানায় প্রথিত।
১১.
আমি দেখতে চেয়েছি অসীম
তুমি দেখালে তর্জনী
ভ্রুকুটি করে কাটালে রজনী
মনে করলে কেনবা বিশালতা
আপাত সান্নিধ্যে কাটে যখন অপারগতা
সেরা সৃষ্টির সূত্র জানলেনা তুমি
ভূমি ও আকাশের মাঝে
আছে আর এক রণভূমি
ভালবেসে নাও শুধু তুমি
তুমি তুমি তুমি।
ছবি: নিজস্ব এ্যালবাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩