somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাসঙ্গিক ভাবনা : ‘বঙ্গবন্ধু-১’ নামে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের আরেক মাইলফলক !!

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রযুক্তিগত দিক থেকে আস্তে আস্তে উন্নতির সোপানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। একটা সময় ছিলো যখন আমরা শুধু প্রযুক্তি ব্যবহারের স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু আজ অনেক প্রযুক্তিই আমাদের হাতের নাগালে চলে এসেছে এবং কিছু নব আবিষ্কৃত প্রযুক্তি অচিরেই চলে আসবে বলে বিশ্বাস করি। ঠিক তেমনি এক আনন্দের সংবাদ হলো বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই ‘বঙ্গবন্ধু-১’ নামে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের প্রকল্পনা করছে। আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে মহাকাশে নিজেদের কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বর্তমানে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য প্রারম্ভিক কাজগুলো অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ৫ বছর আগেও উন্নত দেশগুলোর কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের খবর পড়ে আমরা নিজেরা ভাবতাম, আমাদের দেশ কবে নিজেদের কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে। সেই সুভময় ক্ষন আজ আর খুব বেশী দূরে নয়। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের কল্যানের পরিধিটাও অনেক বেড়ে যায়। আর তাই সেই লক্ষ্যে ২০১৩ সালের মধ্যেই ক্‌ত্তিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। উন্নয়ন দেশগুলোর পাশাপাশি আমাদের নিজেদের স্যাটালাইট পাখা মেলে ঊড়বে এটা ভাবতেই নিজের দেশকে নিয়ে গর্বে বুক ফুলে উঠছে। আর নিজে দেশের এই রকম একটা প্রযুক্তিগত উন্নয়নের খবর একজন বাংলাদেশী হিসেবে নিজেকে গর্বে মাথা উচু করে দেয়।

“Bangladesh will launch a satellite in the space with broadcasting facilities to make information and communication technology more available and upgrade to international standard. The concerned experts said the satellite project implementation will cost about 200 to 300 million US dollars and take about three years. The meeting stressed the need for formation of a national expert committee and taking steps for feasibility study for quick implementation of the project. সূত্র http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=154606



১৯৫৭ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে সক্ষম হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ যার নাম ছিল ‘স্পুটনিক ১'৷ এর পরের বছর অ্যামেরিকা এক্ষেত্রে সফলতা দেখায়৷ যদিও তারা এই পরিকল্পনা করছিল প্রায় ১৩ বছর আগে থেকেই৷ পরবর্তীতে আরও অনেক দেশ কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় ইতিমধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানেরও নিজস্ব উপগ্রহ রয়েছে৷ এর মধ্যে ভারত নিজে নিজেই মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর সামর্থ্য অর্জন করেছে৷ আর পাকিস্তান অন্য দেশের সহায়তায় উপগ্রহ পাঠিয়েছে৷ এখন, বাংলাদেশও সেটা করতে যাচ্ছে৷
১৯৯৭-৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল৷ কিন্তু পরে সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি৷ এরপর আবার ঝোঁক উঠেছে উপগ্রহের ব্যাপারে৷ সে লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে৷ ২০১৩ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ তার নিজস্ব একটি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাতে চায়৷ এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা - বিটিআরসি। সূত্র : http://www.dw.de/dw/article/0,,15081977,00.html



যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল, এসপিআই কোম্পানিকে পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এ মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ৷
এসপিআই'এর কাজ কী হবে? এ সম্পর্কে বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান বললেন, ‘‘তাদের কাজ হবে স্যাটেলাইট ডিজাইন ও এটির নির্মাণকাজ তদারকি করা৷ এছাড়া কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের সঙ্গে বাংলাদেশের যারা জড়িত থাকবে তাদেরকেও সহায়তা করবে এসপিআই৷ গ্রাউণ্ড স্টেশন তৈরি, বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং এই উপগ্রহকে কী কী ভাবে কাজে লাগানো হবে সেটার পরিকল্পনাও করবে এসপিআই৷সূত্র http://www.dw.de/dw/article/0,,15740859,00.html

সফলভাবে উপগ্রহ পাঠাতে পারলে বাংলাদেশের যে লাভগুলো হবে
১। এটি হবে একটি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট অর্থাৎ যোগাযোগ উপগ্রহ৷ ফলে টেলিযোগাযোগ, টিভি ও বেতার সম্প্রচারের মত কাজগুলো এই উপগ্রহ দিয়ে করা সম্ভব হবে, এখন যেটা করা হচ্ছে অন্য দেশের উপগ্রহ ব্যবহার করে৷ যার জন্য খরচ হচ্ছে প্রচুর অর্থ৷
২। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজও করা যাবে এই উপগ্রহের মাধ্যমে৷
৩। চাইলে অন্য দেশকেও উপগ্রহ ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া যাবে৷ সেক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটা উৎস হতে পারে এই উপগ্রহ৷

একেকটি টিভি চ্যানেল স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ডলার দিয়ে থাকে৷ সে হিসেবে বর্তমানে চ্যানেলগুলো প্রতি বছর প্রায় ৪০ লাখ ডলার ভাড়া দিচ্ছে। সম্প্রচার ছাড়াও আর অন্য কোনো কাজে এই উপগ্রহকে কাজে লাগানো যায় কিনা সেটাও ভেবে দেখা যেতে পারে।

দেশের এরকম অভাবনীর সাফল্য অনেক সময় চোখে পড়ে না। আর উন্নতির পথে বাধাতো আসবেই। হলুদ সাংবাদিকতার কারনেও এই রকম সফলতা নিয়ে অনেক সময় বড় করে প্রতিবেদন ছাপা হয় না। আমাদের দেশের এবং নিজেদের রয়েছে হাজারো সমস্যা, কিন্তু তার মাঝেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে সরকার এবং কিছু উদ্দমী জনগন। সবসময় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলে নিজেদের সংকীর্নতা এবং নিচু মনমানসিকতা প্রকাশ পায়। অধ্যবসায় আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যেমে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করার জন্য সর্বপ্রথম আমাদের নিজেদের পরিবর্তন আনাটা অনেক জরুরী। আর তাই দেশের সমস্যা এবং ভুলগুলো আলোচনার পাশাপাশি দেশের উন্নতি এবং অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার করাটাও আমাদের দায়িত্ব। এতে দেশের জনগনের উদ্যমতায় এবং সাহস অনেক বেড়ে যাবে। এরকম একটা পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য সরকারের অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। আর এভাবেই সরকার এবং জনতার যৌথ সন্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির চুড়ায়। ধন্যবাদ সবাইকে।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৪৭
১৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×