somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী দিবস একদিনের গন্ডির মাঝে বন্দী থাকার নয় !!

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকালে অফিসে আসার পথে একটি বিষয় চোখে আটকে গেলো। একটি মেয়ে এবং তার এক ছেলে বন্ধু বাসে উঠেছে ইউনিতে যাবে বলে। মেয়েটি বাসে উঠে অপেক্ষা করতে লাগলো তার ছেলেবন্ধুটির ইশারার তাকে কোন সিটে বসার জন্য ইঙ্গিত করে। এবং কিছুক্ষন এদিক ওদিক তাকিয়ে ছেলেটি যথারীতি মেয়েটিকে ইশারায় দেখিয়ে দিলো এই সিটে বসো এবং মেয়েটি বসে পড়লো। ঘটনাটি কিন্তু উল্টা ঘটতে পারতো। ছেলেটির জায়গায় মেয়েটি এবং মেয়েটির জায়গায় ছেলেটি হতে পারতো। মেয়েদের ইচ্ছার মুল্য আমাদের আধুনিক নামের তথাকথিত সমাজে কতটুকু আছে সেটা এক বিশাল প্রশ্ন। প্রতিনিয়ত নারীরা হচ্ছে প্রতিহিংসার শিকার। মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ সালে নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪ হাজার ৭৭৭ জন। ঘরে-বাইরে নারীরা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন।

বিশ্বের অনেক দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারী ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। অবাক হলাম সেই সব দেশের তালিকার মধ্যে আফগানিস্তান এর নাম রয়েছে দেখে । সুত্র Click This Link

এক সময় খবরে পড়েছিলাম আফগানিস্তানের পুরুষরা তাদের স্ত্রী, কন্যাশিশু ও বোনদের মারধরের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় অনুমতি পাচ্ছে। নতুন একটি আইনে বলা হয়েছে মারধরের শিকার নারীর আত্মীয়রা এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দিতে পারবে না। এছাড়া এ সংক্রান্ত কোনো মামলাও আদালতে তোলা যাবে না। দেশটির পার্লামেন্ট লয়া জিগরায় সম্প্রতি এ ধরনের একটি আইন পাস হয়। তবে আইনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের জন্য প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের দফতরে তার সাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। সুত্র http://www.sheershanews.com/2014/02/06/24968 যেই দেশে এমন আইন পাস হবার অপেক্ষা করা হয় সেই দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সরকারী ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয় কোন যুক্তিতে বুঝলাম না কেমনে কি ?

আরেকটি মজার তথ্য দেখলাম চীন,মেসিডোনিয়া, মাদাগাস্কার,নেপালে শুধুমাত্র নারীরাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সরকারী ছুটি দিনভোগ করেন। পুরুষেরা না। কেন পুরুষদের একটু সুবিধা দিলে কি হইতো ? সাম্যের কথা বলে এগুলা কি ? এই সব সমালোচনা থেকে মুক্ত হতে হবে।

বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে বলছে, বাংলাদেশের বেশির ভাগ পুরুষই মনে করেন, স্ত্রীকে মার দেওয়া যায়। গ্রামের ৮৯% শহরের ৮৩% পুরুষ মনে করেন, স্ত্রী অন্যায় কিছু করলে স্বামীর মার দেওয়ার অধিকার আছে। শহরের ৯৩% এবং গ্রামের ৯৮% পুরুষই বিশ্বাস করেন, পুরুষ হতে হলে তাঁকে কঠোর হতেই হবে। আবার শহরের ৫০% এবং গ্রামের ৬৫% পুরুষ বিশ্বাস করেন, পরিবারকে রক্ষা করার জন্য নারীদের নির্যাতন সহ্য করা উচিত।

নির্যাতন বলছেন কাকে দাদা? এতো আমাদের সংস্কৃতি!বাংলাদেশে পুরুষ দেবতার পর্যায়ে পরে। এই দেবতা শুধু নারীর দেবতা। পুরুষকে দেবতা বানিয়েছে আমাদের ঘুনেধরা পচে যাওয়া পুরনো মূল্যবোধ। আমাদের সিনেমা, আমাদের সাহিত্য, আমাদের রাজনীতি সব কিছু সবসময় সুকৌশলে নারীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং এখনো দাঁড়াচ্ছে।

আমাদের পুরুষ যখন প্রেমিক তখন সে দেবতার মতো প্রেমিক সব দিয়ে দেয়। নিজের প্রেম বুঝাতে বুক থেকে থাবা দিয়ে হৃদপিণ্ড বের করে নিয়ে আসে। তাই দেখে নারী অসহায়ের মতো কাঁদে আর নিজেকে অভিশাপ দেয়। এই হল আজকের দিনের সিনেমা আর অতীতের শাবানা সে এক লম্বা ইতিহাস।

আমাদের পুরুষ যখন দেশপ্রেমিক পুরুষ তখন সে বেসরকারি চ্যানালের মালিক। সে যখন নারীর জন্য কাঁদে তখন তার একটা হাত নারীর আঁচল তলে থাকে। সে নারীকে পণ্য করে সে নারীকে ব্যাবহার করে তার মতো করে। পার্থক্য শুধু সে সাজিয়ে গুঁজিয়ে করে।
আমাদের পুরুষ যখন রাজনীতিবিদ তখন সে ম্যাশিনম্যান, তখন সে বাবুর বাবা ......……… থাক সেটা নাই বলি।

নারীকে তার নিজের অধিকার বুঝে নিতে হবে। নারীর শরীর নারীর অধিকার। ঘুণে ধরা পুরনো মূল্যবোধ আমাদের কি বাংলাদেশ দিয়েছে তা বলে দিচ্ছে ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভের স্ট্যাটিস্টিক।


" আমি নারী আমি পারি/শুধু সৃষ্টিই নয় জানি ধ্বংস/আমি যে মহাশক্তির অংশ /আমি পারি প্রেমে বাঁধতে /পারি ভবিষ্যৎকে মুঠোয় ধরতে /হতে পারি,ক্ষুদ্র কিন্তু উচ্চ আমার আশা/আমি স্বাধীন/ আমি মুক্ত তাই আকাশে ভাসা "।

সকল জেন্ডারের মানুষ পরস্পরের বন্ধু হয়ে উঠুক; ক্ষমতা ও অধিকারের পুর্নবিন্যাস হোক। লিঙ্গীয় বন্ধুত্বের দিবসে সকল জেন্ডারের মানুষকে শুভেচ্ছা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×