আমরা যারা প্রবাসে শ্রম বিক্রি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার কে শক্তিশালী করি তারা পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি।
আমরা যারা মালয়েশিয়াতে আছি তারা মালয়েশিয়ার মুদ্রা রিঙ্গিতকে টাকা বলে ডাকে।
এক সময় রিঙ্গিত খুবই শক্তিশালী একটি মুদ্রা ছিল বলা যেতে পারে। ২০১৩/১৪ সালেও এক রিংগিত এর বিনিময় বাংলাদেশের ২৬/২৭ টাকার মত পাওয়া যেত। এরপর ধীরে ধীরে রিংগিত এর মান কমতে থাকে। এক পর্যায়ে উহা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১৭ টাকাতেও নেমে আসে।
মালয়েশিয়াতে প্রবাসী শ্রমিকরা বেতন পায় রিংগিত হিসাব। আগে যারা মাসে ১০০০ রিঙ্গিত বেতন হিসেবে পেতেন তারা সেটা টাকাতে পরিবর্তন করলে ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকা পেতেন। কিন্তু তাদের বেতন আগের মতো থাকলেও বাংলাদেশী টাকায় তা এখন খুবই কম। আজকের মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী উহা ২০ হাজার টাকার সামান্য একটু বেশি।
শ্রমিকরা দেশে টাকা পাঠানোর জন্য বেশি নির্ভর করে অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউস এর উপর। এটি বাংলাদেশের অগ্রণী ব্যাংকের একটি কোম্পানি। রাজধানী কুয়ালালামপুরে বন্দরনগরী ক্লাং, জহরবারু, বুকিত মারতাজাম ইত্যাদি জায়গায় অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউজের শাখা অফিস আছে। এই সব অফিসে বাংলাদেশের কর্মকর্তা ছাড়াও মালয়েশিয়ান কর্মচারীরাও কাজ করে। এখানে টাকা পাঠাতে গেলে মালয়েশিয়ান কর্মীরা জিজ্ঞেস করেন, ভাই কত টাকা পাঠাবেন?
গত বছর থেকে সরকার একটি নিয়ম চালু করেছিল। এটা হচ্ছে বিদেশ থেকে কোন নাগরিক বাংলাদেশের ব্যাংক চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠালে ২% অতিরিক্ত পাবেন। অর্থাৎ কেউ যদি একশ টাকা পাঠায় বাংলাদেশে পাবে ১০৩ টাকা।
এখানে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের ও আনাগোনা আছে। হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে অনেকে টাকা পাঠালেও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা মূলত উপকার করে কালো টাকার মালিক দের। ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কালো টাকা বিদেশে আনা অনেকটাই কষ্টকর । তাই তারা হুন্ডির আশ্রয় নেয় কিংবা মাঝে মাঝে এলসি জালিয়াতির সাহায্য নেয়। যারা কালো টাকার মালিক ও অবৈধ ইনকাম আছে তারা মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম ইত্যাদি করে বসেছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৭:৪৭