somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারা একে অপরকে ভাবী ডাকেন *****************************

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা শহরের অজস্র স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রীদেরকে খুব সকালে দিয়ে আসতে হয়। বেশীর ভাগ স্কুলেই সকাল ৮টা কিংবা সাড়ে আটটার মধ্যে ক্লাস শুরু হয়ে যায়। ঢাকা শহরের বেশীর ভাগ মহিলার কাঁধে অবধারিতভাবে এই দায়িত্বটি এসে পরে। খুব সকালে বাচ্চাকে রেডি করে স্কুলে দিয়ে আসা। যাদের বাসা একটু দূরে তাদের আবার অন্য সমস্যা। স্কুলের সামনে কোন একটি জায়গায় অনেক মহিলাকে তাই দেখা যায় বসে বসে অপেক্ষা করতে কখন ছুটি হবে আর কখন তারা তাদের প্রিয় সন্তানকে নিয়ে নিরাপদে বাসায় ফিরে আসবেন। এই দৃশ্য এখন খুবই কমন একটি বিষয়।

যে কোন ধরনের অপেক্ষাই অনেক কঠিন ও কষ্টের একটি ব্যাপার । কেননা, অপেক্ষার ঘড়ির কাটা খুব আস্তে আস্তে ঘুরে। সময় পার হতে চায় না। তাই বেশ কয়েক জন মহিলা একত্রিত হলে তারা নিজেরাই আগ্রহী হয়ে খাতির জমিয়ে তুলেন। আমি প্রায় প্রতিদিনই এমন জমজমাট আড্ডা দেখে দেখ অভ্যস্ত।

আমার বাচ্চারা যে স্কুলে পড়ে সেখানকার দৃশ্যও মোটামুটি একই। এই স্কুলের বেজমেন্ট-এ দেখলাম আরো সুন্দর ব্যবস্থা। সেখানে একটি জায়গায় মোট কালো রঙের কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। যাতে করে কোন বেগানা পুরুষলোক ভাবীদেরকে দেখতে না পায়। ফলে সেখানে বসে আচ্ছা করে জমিয়ে আড্ডা দিতে পারেন নারী অভিভাবককুল। বড়ই সুন্দর ব্যবস্থা।

বিকেলবেলায় এই স্কুলে শুরু হয় কোচিং সেশন। বিকেল বেলায় বাচ্চাদের দিয়ে আসা এবং রাতে নিয়ে আসার জটিল দায়িত্বটি পালন করতে হয় আমাকেই। আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করি রাতের বেলায়ও নারী অভিভাবকদের প্রাধান্য। পুরুষ অভিভাবক নেই বললেই চলে। রাতেও চলে তুমুল আড্ডা। সেই আড্ডা যেন শেষ হতেই চায় না।

নারী অভিভাবকরা জমিয়ে তুমুল আড্ডা দেন। দুনিয়ার কোন বিষয় মনে হয় বাদ থাকে না। আমি চুপচাপ একটি প্লাস্টিকের চেয়ার দখল করে বসে বসে অপেক্ষা করি। আর তাদের আড্ডার মুখরিত কলকাকলি শুনি। উপায় নেই।

তাদের আড্ডা থেকে একটি বিষয় উদ্ধার করলাম- তারা একে অপরকে ভাবী ডাকেন। যেমন রহিমা তার পাশে বসা সখিনাকে ভাবী ডাকেন। আবার সখিনাও রহিমাকে ভাবী ডাকেন। স্বাভাবিক বিষয় এই যে, এখানে একজন ভাবী হলে আরেকজন হবেন ননদ। কিন্তু স্কুলের আড্ডায় নিয়ম অন্যরকম। উদাহরণ হিসাবে-

প্রথম মহিলাঃ তারপর কি হয়েছে শুনবেন ভাবী?.......
দ্বিতীয় মহিলাঃ বলেন ভাবী, শুনবো। …….

একে অপরকে ভাবী ডাকার পিছনে কী কারণে থাকতে পারে। আমি চুপচাপ চিন্তা করতে থাকলাম। এক সময় আমার কাছে মনে হলো এটা একটি পুরুষতান্ত্রিক ঝামেলা হতে পারে। তারা যদি একে অপরকে ভাবী না ডেকে আপা ডাকেন তাহলে স্বাভাবিক নিয়মে
কোন এক জনের স্বামীর কাছে অপর একজন শ্যালিকা হয়ে যেতে পারেন। এটা বড় একটা একটা আপদ। তখন দুলা মিয়া দুস্টামী করার অধিকার পেয়ে যেতে পারেন। কেননা, দুলামিয়াদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছ শ্যালিকাদের সাথে দুষ্টুমী করার।

আর তাই মনে হয় আমাদের নারী অভিভাবককুল যখন যেখানে অনেকেই একত্রিত হোন অপর পক্ষের নারীদেরকে আপু/আপা না ডেকে নিরাপদ ডাক ভাবী ডাকেন। একে অপরকে ভাবী ডাকলে উভয়েই থাকেন নিরাপদ।

বড়ই আচানক ঘটনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×