অর্কের সঙ্গে ভাব নিয়ে লাভ নাই । অর্ককে সবাই ভালবাসে। আওয়ামীলীগ-বিএনপি, ব্রজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থক মোদ্দাকথা সবাই। তেসোও ভালবাসে অর্ককেই। অনেক ভালোবাসে। সকল আবদার তার তেসো শুনবে। তেসোর ঝগড়া ঝাটি কান্নাকাটির সবকিছু বড় আশ্রয় এই অর্ক। সে জানে অর্ক ঝগড়া করতে জানেনা। বাস্তবের পৃথিবীর মানুষও তার সঙ্গে ঝগড়া করতে জানেনা। অর্ক আবার অনেকের জন্য পরশমণি। তার পরশে লোহা সোনা হয়ে ওঠে। তেসোর মধ্যে যতটুকু লোহা ছিল অর্কের সান্নিধ্যে সেটুকুও সোনা হয়ে গেছে। অর্কের সত্যবাদিতা অনেক ক্ষেত্রে অসহনীয় ঠেকে। তাকে না দেখলে অনেকের খুন মাথায় চেপে ওঠে। তার সঙ্গে সামনাসামনি বসে কথা বললে খুনতো দূরের কথা নারী হলে প্রেম/স্নেহ/সম্মান আর পরুষ হলে স্নেহ অথবা সম্মান একটা তার মিলবেই । খারাপ মানুষ অর্কের বেশি ভক্ত। হয়তো অর্ককে দেখার জন্য মন পুড়ে। অর্ক অবাক হয়। স্রস্টার কাছে মনে মনে কতবার জিজ্ঞাসা করেছে। আমার জন্য কি আখেরাতে কিছু নেই? সব পৃথিবীতে পেয়ে শেষ। কিছুটা মন খারাপ হয়। অর্ক ব্রাজিল দলের কট্টর সমর্থক। আর্জেন্টিনার যত কট্টর সমর্থক আছে তারা থাকবে অর্কের আশেপাশে। তাদের প্রিয় মানুষের তালিকায় অর্কের নাম সবার আগে। ২০১০ সালে বিশ্বকাপের কথা । ব্রাজিল হেরে গেল । অর্ক খেলা দেখেছে ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ের বাংলাদেশ আইন সমিতির অফিসে বসে। সঙ্গে তার দুইজন কাছের মানুষ । দুজনই আর্জেন্টিনার সমর্থক। তাদের কথার খুচায় মনে হলো ব্রাজিল হেরে গেছে। অর্কের মনে ভীষণ জ্বালা। পরের দিন আর্জেন্টিনার খেলা। অর্ককে খেলা দেখতে অনুরুধ করে অর্জেন্টিনার আরেক সমর্থক। একুশে হলে দেখতে হবে খেলা। অর্কের মনে ভীষণ জ্বালা। ম্যাচে আর্জেন্টিনা গো হারা হারলো ব্রাজিলের চেয়ে বড় ব্যবধানে। অর্কের গায়ের জ্বালা মিটে গেল। আর্জেন্টিনার বিরোধিতা দেখে অর্ক বিস্মিত এবং আরজেন্টিনার বিরুধী হলো। এই বিরুধীতা অবশ্য ততটা প্রকট নয়।
এবারে ব্রাজিল বেলজিয়ামের ম্যাচে অর্ক বেশ সতর্ক ছিল। বাসার পাশে বিগস্ক্রিনে খেলা দেখার সুযোগ থাকলেও খেলা দেখেনি। কারণ তার আছে বেদনার অতীত। শহীদুল্লাহ হলে বিগ স্ক্রীনের অন্যতম আয়োজক অর্ক । ব্রাজিল -ফ্রান্স খেলা শুরুর আগে বিগস্ক্রীনে ব্রাজিল গানটা তিনবার বাজিয়ে তারপর শুরু হলো খেলা। ফলাফল ব্রাজিল হেরে গেছে। সেজন্য ব্রাজিলের খেলা আর বিগ স্ক্রীনে দেখেনি। তবু যদি জিতে। গাভীর ভবিষ্যৎবাণী গভীর রেখাপাত করে অর্কের মনে। ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা যদি কুসংস্কার মেনে থাকে। এ খবরে মানসিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়বে খেলোয়াড়রা। সেই চিন্তায় অর্কের কপালে ভাঁজ পড়ে। অর্কের দৃষ্টিতে এগুলো বাজিকরদের কাজ । এটাও ভয়ের ব্যাপার। খেলার মাঠে একের পর এক কুফা চেপে বসলো। অনেক সুযোগ ব্রাজিল কাজে লাগাতে পারলো না। ব্রাজিল হেরে গেল। শৈল্পিক ফুটবলের বিদায় হলো বিশ্বকাপ ফুটবল থেকে। আর্জেন্টিনা আরও আগে বিদায়। বিদায় মেসি রোনাল্ডো একই রাউন্ডে। এদিক দিয়ে দুজনেই সমান সমান । নেইমার এক ধাপ উপরে গিয়ে বিদায়। ফুটবল খেলা তারাকা শূন্য। অঘটনের বিশ্বকাপ ভালো রকম অঘটন হবে ক্রোয়েশিয়া চ্যাম্পিয়ন হলে। সেটা নাও হতে পারে। ফ্রান্স বিশ্বকাপ শুরুর দিন থেকেই অন্যতম ফেবারিটের তকমা নিয়ে বসে আছে। অনেকেই চান নতুন চ্যাম্পিয়ন। খেলা বিনোদনের অংশ । সম্মানের ও। যারা খেলছে বিশ্বকাপে তাদের জন্য সম্মানের। ক্রোয়েশিয়ার সুন্দরী মহিলা প্রেসিডেন্ট বিজয়ী খেলোযাড়দের হাগ করে অভিনন্দিত করলেন। কারণ দেশের খেলোয়াড়রা তদের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন।
অর্ক একটা বিষয়ে খুব বিরক্ত। কোটা সংস্কার আন্দোলন নাকি জামাত শিবিরের। এর জন্য তারা ১২৫ কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে। এ কথার কোন যু্ক্তি নেই। দেশের ছাত্রদের শতকরা ৯৯ ভাগের যদি মুক্তিযুদ্ধাকোটা না থাকে তার তো আন্দোলন করবেই। ছাত্র বয়স কম অবিবাহিত পিছুটানে নেই তাদের আন্দোলন হবে দূর্বার।তাদের জামাত বলার মত মূর্খতা আর কিছু হতে পারে না। শতকরা ৯৯ ভাগ জামাতের লোক হলে আওয়ামীলীগ কোন আসন পাওয়ার কথা না। শতকরা একভাগের জন্য যদি বড় ধরণের আন্দোলন হয় তবে বলা যাবে টাকার ছড়াছড়ি চলছে। তবু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাতে অংশ নিবে না। নিজের কপাল কে ফুটু করতে চায়। বরঞ্চ যারা কোটার পক্ষে লম্ফঝম্ফ করছেন তাদের হয় মুক্তিযুদ্ধ কোটা আছে অথবা টাকা খেয়ে নিজের ও নিজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কপাল ফুটো করছেন। সম্প্রতি মাল মোহিত সাহেব আবারো সরগরম হয়েছে শতকার ৭৫ ভাগ মেধায় নিয়োগ হয় বলে। তার হিসেবে ১০০-৫৫=৭৫?? ইনি হলেন অর্থ মন্ত্রী!!! সম্প্রতি কোটার গ্যাপ মেধা থেকে ভরাট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। গত দুই এক ব্যাচ থেকে। তার আগে সেটা ফাঁকা রাখা হয়েছে। অনিয়ম বৈষম্য দূর হওয়া দরকার।
সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়ার বৃটিশ আইনজীবি ভারতের বিমানবন্দরে আটকে গেছেন ভারতের কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে পারেন নি । এটাই এখন প্রধান খবর। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কতটা বিকিয়ে দেয়া হয়েছে বা দিয়েছে এই সরকার এটা তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। আর কিছু বলা লাগে না। ভারতের কথায় খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে এটা কতটা অগ্রহণযোগ্য হতে পারে ভাবুনতো। কিন্তু বৃটিশ নাগরিকও বুঝে গেছেন আমরা এখন মুঘল শাসন ব্যবস্থায় আছি। এই নিয়ে আওয়ামীলীগের দৃষ্টিভঙ্গি হলো ক্ষমতায় থাকলেই হলো। জন সমর্থন থাকুক আর না থাকুক। চুরির প্রকাশ্য দলিল দেখেও কোন সৎ নাগরিক চুরির সমর্থন দিবে না। নিজের সার্বভৌমত্ব স্বাধীনতা বিকিয়ে দিবে না। দিতে চাইবে না। ভারত কে সমীহ করবে কিন্তু আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না। আর এভাবে ভোট হলে দেশের মানুষ দেশপ্রেমিক জনতা আওয়ামীলীগকে ভোট দিবে না।
অনেকে পুতিনকে স্বৈরাচার বলার চেষ্টা হয়তো করবেন। তিনি কিভাবে নিজের জন্য সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্ট- প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকেন। তার জনপ্রিয়তার বিষয়টিও মানতে হবে। গণতান্ত্রিক বিশ্বে যেটি সবচেয়ে দরকার সেটি পুতিনের আছে। এবং সেভাবে তিনি ক্ষমতায় আছেন । বর্তমান ক্ষমতাসীনরা ১/১১ এর মাধ্যমে ক্ষমতায় এসছেন । সেখানে বৃটিশ হাইকমিশনার ভাইটাল রোল প্লে করেছিলেন। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে দলীয় অনুগতদের দিয়ে নির্বাচন কোর্ট নিজেদের কব্জায় রেখে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো ব্যবস্থায় টিকে আছে আওয়ামী সরকার। আর ভারত তাদের সমর্থন দিচ্ছে নগ্ন ভাবে। তারা বলেই ফেলে জনসমর্থনে বিএনপি এগিয়ে থাকলেও ভারত চায় লীগ ক্ষমতায় থাকুক। কতটা অগণতান্ত্রিক কথা। অথচ ভারতে ঠিকই গণতন্ত্র বিদ্যমান। সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা বিদ্যমান। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর টাকা ভারতে যায়। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয় নয় নিশ্চয়। আসলে অসততা পরচর্চা দূর করতে হবে। শেখহাছিনা যদি কেবল ভারতের উপর ভর করে দেশ চালায় তাকে প্রত্যাখান করতে হবে এদেশের মানুষেরই । জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। এটাই গণতন্ত্রের মূলনীতি। এটি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যারা তা থেকে বেড় হয়ে এসছে তাদের প্রত্যাখান করতে হবে।
আওয়ামীলীগের স্বৈরাচারি মনোভাব জনসাধারণের মনে ক্ষোভের জন্ম দিবে। একসময় ক্ষোভ বিক্ষোভে পরিণত হবে। সেই বিক্ষোভে আওয়ামীলীগের পতন হলে আওয়ামীলীগ আর থাকবে না । নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এদশের মানুষ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। স্বাধীনতাহীনতায় কে বাচিতে চায়?
ক্ষমতার শেষ দিকে কিছু নতুন নেতা ভয়ানক হয়ে ওঠেন। হাতুরি , চাপাটি আরও কত কি নিয়ে মেতে ওঠেন। নারীদের শ্লীলতাহানী ঘটান। এতে তাদের খুব একটা লাভ হয় না। তারা চিহ্নিত হয়ে যান । মানুষ তাদের ঘৃণা করতে থাকে। তাদের আর ফেরার পথ থাকেনা । এভাবেই রাজনৈতিক দলগুলো কিছুলোকের ইমেজ ভেঙে তাদের সারাজীবন ব্যবহার করতে থাকে । এ জন্য ক্ষমতা নয় জনতা।
অর্কের কিছু বিস্ময়কর ব্যাপার আছে। অর্কের সঙ্গে যে থাকবে সে বড় হয়ে যায়। অর্কের সঙ্গে যে ছবি ওঠায় সেও বড় হয়ে যায়। অবশ্য অর্ককে সহজে পাওয়া যায়না। অর্ক লুকিয়ে থাকে। নিজেকে আড়াল করে রেখে দারুন সুখ লাভ করে। অর্ক আর তেসো একসঙ্গে ঘুরবে, রেসটোরেন্ট খাবে , ছবি তুলবে।দেশ কে দেশের মানুষকে ভালোবাসবে। বোবা হয়ে বসে থাকবে না । আর বোবাডি খেলবে না। কথায় যদি মানুষ কিছুটা উপকৃত হয় সেটাই বা মন্দ কি ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬