কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে, এই দীর্ঘ জীবনে আমি সবচেয়ে বিচিত্র, সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বিষয় কী দেখেছি। আমি এতটুকু দ্বিধা না করে বলব, সেটি হচ্ছে হিযাব পরিধান করা একটি তরুণী, তোমরা যাকে বোরকা পড়া মেয়ে পাগল করেছে বলে গীত কর। যাই হোক এর কারণ হলো, যে বয়সটি হচ্ছে নিজের দেহসৌষ্ঠব ও যৌবন প্রদর্শনের বয়স, সেই বয়সে তারা তাদের শরীরকে ঢেকেঢুকে রাখে। যে বয়সে সমবয়সী একজন তরুণের চোখে চোখ রেখে মধু বিলানোর কথা, বাঁধনহারা হওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা অনুপ্রাণিত হয় ১৪শত বছর আগের পোশাক পড়তে! যে বয়সে তাদের রঙ্গীন স্বপ্ন দেখার কথা, দেশ-বিদেশের নায়িকাদেরর আধুনিকতায় অনুপ্রাণিত হবার কথা সে বয়সে তারা নিজেদের হিযাবের ভিতরে বন্দী করে রাখে।
যে বয়সে তাদের ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে পার্কের চিপায় যাওয়ার কথা, পয়লা বৈশাখে রাজপথে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কথা, দিন সুযোগবুঝে ছেলেবন্ধুর সাথে মজা লুটে নেওয়ার কথা সেই বয়সে তারা যে শুধু এই অবিশ্বাস্য আনন্দ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করে রাখে তা নয়, তারা এগুলোকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। যে বয়সে তাদের মুক্তচিন্তা শেখার কথা, গান গাওয়ার কথা, নাটক করার কথা, রুপ-যৌবন নিয়ে ভাবালুতায় ডুবে যাওয়ার কথা সেই সময় তারা ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে নিজেদের আটকে রাখতে শেখে, সাম্প্রদায়িক হতে শেখে, ধর্মান্ধ হতে শেখে। যে বয়সে ছেলে আর মেয়ের ভেতর সহজ ভালো লাগা ভালোবাসা জন্ম নেওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা সেই অনুভূতিগুলোকে অশ্রদ্ধা করতে শেখে। সে জন্য তারা কত দূর যেতে পারে, সেটা আমি তখন নিজের চোখে দেখেছি, যখন আমি এক হিযাবী তরুণীকে ভাবালুতার খেলায় আমন্ত্রন জানিয়েছিলাম! সেই ভয়ংকর কাহিনি আমি কখনো কাউকে বলতে পারব না!
শুনেছি গত পহেলা ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বব্যপী হিযাব দিবস পালন করেছে! ব্যপারটা শুনামাত্র মুহূর্তেই আমার শরীর শক্ত হয়ে গিয়েছিলো, জামাতী-রাজাকারদের এই হিযাব দিবসের চক্রান্তের কথা আমার চেতনার দন্ড মাঝে কঠিনভাবে আঘাত করেছিলো! আজ চারদিনের মাথায় শরীর ও চেতনা উভয়স্থানে শান্তি অনুভব করছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমার একসময়ের নিত্যসহজন্মযোদ্ধা খুরশিদা বেগমকে প্রীতি জানাই হিযাবীদের ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার মত সাহসিকতাপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ায়। আমরা এই বাংলাদেশই চেয়েছি যেখানে নারীরা হিযাব পড়বে না, বরং তাদের সৌন্দর্য দেখিয়ে আমাদের চেতনাকে মজবুত রাখবে। জয়বাংলা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





