somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা অবাক চোখে(গল্প)

২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক দূর থেকে দেখেই রক্তিম নীলিমা আসছে বুঝতে পারল ।রক্তিম ১০ টাকার বাদাম কিনে তা খাচ্ছিল । নীলিমা কাছে আসাতেই জিজ্ঞাসা করল - কেমন আছো ? বাদাম খাবা ?
নীলিমা রক্তিম এর দিকে তাকিয়ে রইল । রক্তিম বুঝল না নীলিমার মনের অবস্থা রাগের দিকে না ঠাণ্ডা । আবার জিজ্ঞাসা করল - বাদাম খাবা না?
নীলিমা আবার অনেক রাগে রাগে তাকাল রক্তিমের দিকে । রক্তিম বলল- কি হল?কথা বলবা না ?
এতক্ষণে নীলিমা বলল - তুমি ছোলাসহ বাদাম খাচ্ছ কেন ?
- ওহ ! sorry . ভুল হয়ে গেছে ।
-ভুল হয়ে গেছে মানে ? এক ভুল মানুষ কতদিন করে ?
- আমার বাদাম এর ছোলা ছাড়াতে ঝামেলা লাগে ।
- তাহলে বাদাম খেতে কে বলছে ?
- আমার ভাল লাগে ।
-ছোলাসহ খেতে , তাই না ?
- না , খারাপ তো লাগে না । দেখ, বাদাম এর ছোলাও তো টাকা দিয়ে কিনি ।
- চুপ কর । কথা বইলো না ।
- আচ্ছা।
রক্তিম ঠোঁট ২ টা আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরল । নীলিমা রক্তিম এর পাশে বসল । বসে বলল - মুখটাকে এমন অদ্ভুত করে রাখছ কেন ? হাত নামাও মুখ থেকে ।
রক্তিম হাত নামাল । নীলিমা বলল - এবার কথা বল ।
রক্তিম বলল- কি বলব ?
- এতদিন পর দেখা হল, কিছুই বলার নাই ?
- আছে ।
- কি?
- i love u
- তোমাকে না টি -শার্ট পড়ে আসতে বলছি , এই পচা শার্ট পরে আসছ কেন ?
-sorry .ভুল হয়ে গেছে ।
- আমাকে চিনতে পারতেছ ?
- পারব না কেন ?
-না । ভাবলাম তাও ভুলে গেছ নাকি !
- কি যে বল তুমি ?আচ্ছা তুমি কি আমার উপর রাগ করে আছ?
- না ।
- তাহলে এভাবে কেন কথা বলতেছ ?
- কিভাবে বলতেছি ?
- সবসময় যেভাবে বল সেভাবে বল ।
- আমি সেভাবেই বলতেছি , তোমার ভাল লাগতেছে না।
রক্তিম কিছু বলল না ।চুপ করে রইল । দুজন কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর নীলিমা বলে উঠল - নাহ !তুমি এমন কেন ? আমার মনের মতন কিছুই করতে পারো না । তোমার কিছুই মনে থাকে না ......
- কি হল আবার ?
- কি হবে , কিছুই হয় নায় । তোমার চুলের ঐ অবস্থা কেন? মানুষের চুলের অবস্থা এমন থাকে? একটা কথা কতদিন তোমাকে বলতে হয় ? আমার সাথে দেখা করতে আসছ এতদিন পর, আজ কে অন্তত চুলটা ঠিক করে আসতে পারতে !
- ভুল হয়ে গেছে sorry !!
- এই এত sorry sorry করবা না'ত ।
- তুমি কি রাগ করতেছ?
- তো কি করব ?
- ভাল করে কথা বল না , please .
- আমি ভাল করে কথা বলতে পারি না ।
রক্তিম কি বলবে বুঝতে পারল না । তাই আবার চুপচাপ বসে রইল ।
নীলিমার রাগ বোধহয় আরও বাড়ছে । রক্তিম কে বলল - তুমি পাশ থেকে সরো তো । আমার ভাল লাগছে না ।
- কেন?
- তোমাক সরতে বলছি সরো ।
- না আমি তোমার পাশেই বসে থাকব।
- সরতে বলছি না তোমাকে । তোমাকে আমার অসহ্য লাগছে ।
- দেখ , এমন কইরো না please.
- কি করতেছি ? তোমাকে আমার ভাল না লাগলেও ভাল বলতে হবে? তুমি আমার পাশ থেকে সরো তো ।
- plz, আর এমন করব না ।
- কেমন করবা না? তুমি তো আবার এমন করবা । তোমাকে চুল ঠিক করে রাখতে বলছি , একটা দিন করলা না । চুল দেখলে মনে হয় পাখির বাসা । বলছি ছোলাসহ বাদাম না খেতে, তুমি ওগুলা সহই খাবা । বলছি t-shirt পরতে , তুমি পরই না । বল কি t- shirt পরলে নাকি ছাগল এর মতন লাগে । এই , তোমার কোন প্রবলেম আছে আমার ছাগল কে ভাল লাগলে ? তোমাকে আমার ভাল লাগলেই তো হল । আর কাকে দেখাতে হবে তোমার ?
- কাউকে না ।
-তাহলে আমার কথা শুননা কেন?
- শুনি তো ।
- কি শুনো তুমি? কি শুনো ?
- সবই তো ।
- এই আজ কত তারিখ জানো ?
- জানি তো
- তোমার মনে আছে আজকে কি? আজ কেন তোমাকে আসতে বলছি , আমার সাথে দেখা করতে বলছি?
- কিসের জন্য ?
- তাও জাননা তুমি?
- বল না plz. কেন?
নীলিমা এবার আরও রেগে গেল । কিছুক্ষণ পর কান্না শুরু করে দিল ।
রক্তিম বলল - এই , কি হইছে তোমার ?
বলে রক্তিম নীলিমার মাথায় হাত রাখল । নীলিমা রক্তিম এর হাতটা সরিয়ে দিয়ে বলল - plz. তুমি আমাকে ছুঁইও নাত । আমি আর পারতেছি না । আমার তোমার সাথে সম্পর্ক রাখা ইম্পসিবল। তোমার মতন ছেলের সাথে আমি relation রাখতে পারব না । plz leave me.
রক্তিম বলল - প্লিজ এত রাগ করো না প্লিজ ।
- বললাম না তোমাকে আমি তোমার সাথে relation রাখব না । তুমি যাও এখান থেকে ।
রক্তিম কিছু না বলে একটু দূরে সরে গেল । তারপর ব্যাগ থেকে কিছু বের করল । নীলিমার সামনে ৬ টা গোলাপ ধরে বলল- happy propose day !!! এই দিনে এই ছাগলটাকে propose করছিলা। আজ ১ বছর হল । এই ছাগলটা এখনও মানুষ হয় নায় , sorry !!
নীলিমা চোখ মুছে গোলাপ গুলো নিল । একটু হাসি ফুটল নীলিমার মুখে । নিচের ঠোঁটে কামড় দিয়ে বলল - এতক্ষণে দিলা কেন? তুমি জানতে , তাই না?তবে আগে বললে না কেন ? আমাকে কষ্ট দিতে খুব ভাল লাগে তাই না? কেন এমন করলা তুমি?
- তুমিও তো আমকে কষ্ট দিলা । ওওও তোমার জন্য আরও একটা জিনিস আনছি ।
রক্তিম ব্যাগ থেকে একটা চকবার আইসক্রিম বের করল ।
নীলিমা হাতে নিল আইসক্রিমটা। দেখল আইসক্রিম গলে পানি হয়ে গেছে । নীলিমা বলল - এটা তো আগে দিতে পারতে? দেখো কি অবস্থা !!!! গোলাপ গুলো ও দেখছ ব্যাগ এর ভিতর চাপে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে ?
- sorry ! মনে ছিলনা ।
- তোমাকে নিয়ে কি যে করি? তুমি এমন পাগল কেন বলতো? অবশ্য তোমার পাগলামির জন্যই তোমাকে আমি এত ভালবাসি । i love you. এই যে গলে যাওয়া চকবার , চ্যাপ্টা গোলাপ দিছো তাতে আমার যতটা ভাল লাগছে , ভাল গুলো দিলে এতটা লাগত না ।
বলেই নীলিমা রক্তিমকে জড়িয়ে ধরে বলল - আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাব না। আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি জান ।
- আমিও।
নীলিমা তারপর ২ টা t-shirt বের করল ।বলল- নাও,তোমার জন্য আনছি। এখন থেকে এগুলা পরবে, বুঝছ ? আর যেন ভুল না হয় ।আর এগুলা পরলেই আমার কথা বেশি করে মনে পড়বে। মনে হবে আমি তোমার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আছি, বুঝতে পেরেছ?
- হ্যাঁ । থাঙ্কস। i love you ,জান।
রক্তিম আবার ও বাদাম নিয়ে ছোলাসহ খাওয়া শুরু করল ।নীলিমা হেসে বলল - এই আবার?দাও আমি ছুলে দেই বাদাম আর তুমি খাও ।
নীলিমা বাদাম ছুলে দিতে লাগল আর রক্তিম খেতে লাগল । আবার হয়ত ঝগড়া হবে একটু পর। রক্তিম আবার উলটা পাল্টা কিছু করবে । নীলিমা বলবে রক্তিমকে ছেড়ে যাবার কথা। কিন্তু সব আবার একটু পর ঠিক হয়ে যাবে । এইতো ভালোবাসা । মধুর ভালোবাসা!!!!!!!
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×