somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেমের বিয়ে ভালো না পরিবার আয়োজিত বিয়ে ভালো?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিয়ে করা যে একটা অতীব ভালো কাজ এটা নিয়ে কারও কোন সন্দেহ মনে হয় নেই। তাই বলে যারা বিয়ে করবে না বলে পণ করেছে তাদের কিন্তু খারাপ বলা যাবে না। একটা ছেলে বা মেয়ে বিয়ে করবে কি করবে না এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমাদের সমাজে সাধারণত দুই পদ্ধতিতে বিয়ে হয়ে থাকে।

১। প্রেম করে বিয়ে
২। পরিবারের পছন্দ মত বিয়ে।

প্রেমের বিয়ের সূচনা বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন বাড়ির ছাদের চিলেকোঠায় ঘুড়ির নাটাই নিয়ে টানাটানি করতে গিয়ে, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডোরে, অফিসের কাজের সুত্রে, ফেইসবুকে। এছাড়া আরও বহুবিধ এনালগ এবং ডিজিটাল পদ্ধতি আছে। প্রেমিক প্রেমিকারা এগুলি ভালো জানে। প্রেমের বিয়ের অনেক সুবিধা। বিয়ের আগেই প্রেমিক, প্রেমিকা একজন আরেকজনকে বুঝতে এবং চিনতে পারে। ফলে নিজেদের মধ্যে আগে থেকেই একটা বোঝাপড়া থাকে। একজন আরেকজনকে বাজিয়ে দেখতে পারে।

প্রেমের বিয়ের অসুবিধা হল অনেক সময় এই বিয়ে পরিবার মেনে নিতে চায় না। ফলে চোরের মত পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে হয়। এমন কি অনেক সময় থানা, পুলিশ, গুণ্ডারা পর্যন্ত পিছু নেয়। বহু বছর আগে আমার এক চাচি নাকি চাচার প্রেমে পড়ে খাল সাঁতরে চাচার বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন বিয়ের জন্য। আমার বাবা মা সব সময় এই কারণে ওনাদের ক্ষ্যাপাতেন আমাদের সামনে। আমার বাবা মার বিয়ে উভয়ের পরিবারের অমতে হয়েছিল। আমার বড় খালু অভিভাবক হয়ে ওনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন।

কয়েক বছর আগে পালিয়ে বিয়ে করা অপরিচিত এক ছেলে আর এক মেয়েকে আমার বাবা প্রায় দেড় মাস আমাদের বাসায় লুকিয়ে রেখেছিলেন। ওদের বিয়ের কাজী আবার আমার বাবার পরিচিত ছিলেন। বয়সে তরুণ কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর পর নিজেই এদের লুকানোর ব্যবস্থা করেছিলেন আমাদের বাসায়। ওদের উভয়ের পরিবার নাকি হন্যে হয়ে ওদেরকে খুজছিল। ছেলে মেয়ে দুটি ভয়ে আমাদের বাসার সামনের বারান্দায় পর্যন্ত যেত না। মেয়েটা বাড়ি থেকে পালানোর সময় তার মায়ের কিছু গহনা নিয়ে এসেছিল। ওরা আমাদের বাসায় অনেক দিন ছিল তাই ওরা চাচ্ছিল আমার বাবা খরচ হিসাবে গহনাগুলি গ্রহণ করুক। আমার বাবা অবশ্য নিতে রাজি হয় নাই। বর্তমানে ওরা জাপানে আছে। যদিও অজানা কারণে ওরা এখন ইচ্ছে করে আমাদের এড়িয়ে যায়।

পরিবারের পছন্দের বিয়েতে সুবিধা হল এই বিয়ের জন্য যত খুশি পাত্র বা পাত্রি দেখা যায় এবং তার মধ্যে থেকে যে কোন একজনকে পছন্দ করা যায়। পাত্র বা পাত্রি চাইলেই যে কোন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ছেলে বা মেয়ের সৌন্দর্য, অর্থ, বিত্ত, পারিবারিক মর্যাদা এগুলি জেনে বিয়ে করা যায়। আরও কিছু সুবিধা অনেক সময় পাওয়া যায়। যেমন আমার উপরে উল্লেখিত বড় খালু নাকি আমার খালার সাথে বিয়ের সময় গ্রামে ওনার চাচার বিরাট বাড়িকে নিজেদের বাড়ি বলে চালিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পরে ধরা পড়লেও কিছু করার ছিল না কারণ ততদিনে আমার খালা আমার খালুর প্রেমে পড়ে গেছেন।

পরিবারের পছন্দের বিয়েতে অসুবিধা হল অনেক সময় পাত্র বা পাত্রিকে ফুলিয়ে ফালিয়ে প্রদর্শন করা হয়। দেখা যায় পাত্র অনেক ভালো পরিবারের কিন্তু বিয়ের পর দেখা গেল পাত্র নেশাখোর। একটা মেয়ের কথা জানি যার বিয়ে হয়েছিল এক প্রবাসী ছেলের সাথে। ছেলে ইউরোপের কোন দেশে ভালো চাকরী করে। উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের কয়েক বছর পর মেয়েটি জানতে পারলো ঐ ছেলের আগে থেকেই আরেকটা বউ আর সন্তান আছে বিদেশে। ততদিনে মেয়েটা দুই সন্তানের মা হয়ে গেছে। ছেলেটা তাকে বিদেশ নিয়ে যাবে বলে দিনের পর দিন ঘুরিয়েছে। বছরে সে একবার বা দুইবার আসত। এই ধরণের প্রতারনার পরেও মেয়েটা সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করেছে বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে। বারো তের বছর এভাবে জোড়াতালি দিয়ে সংসার করার পর এক পর্যায়ে মেয়েটা আলাদা হতে বাধ্য হয়। কারণ ছেলেটা এখন আর দেশে আসে না এবং কোন খরচ দেয় না। মেয়েটা চাকরী করে তাই সন্তানদের নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে।

বিয়ের কোন পদ্ধতিটা ভালো এটা নিয়ে মনিষীদের মধ্যে মতভেদ আছে। যে মনিষী প্রেম করে বিয়ে করেছেন তিনি বলেন প্রেমের বিয়ে ভালো আর যিনি প্রেম করার সুযোগ পান নাই অথবা ছেঁকা খেয়েছেন তিনি বলেন পরিবার আয়োজিত বিয়ে ভালো। বহুবিধ ঝুকি থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করা যে অতীব উত্তম একটা কাজ এই বিষয়ে প্রায় সকল মনিষীই একমত পোষণ করেছেন। কারণ ওনারা মনে করেন ‘নো রিস্ক নো গেইন’। দিল্লিকা লাড্ডু যে খাবে সে পস্তাবে, আর যে না খাবে সেও পস্তাবে। তাদের কথা হল পস্তাতেই যখন হবে তখন খেয়েই পস্তাই। :)

সুত্রঃ কোন সুত্র নাই।
ছবিঃ shutterstock.com
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২৭
৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভোটের পর, আমরা পাকীদের বুটের নীচে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২



পাকীরা অমানুষ, অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক; ওরা ২টি জাতিকে ঘৃণা করে, ভারতীয় ও বাংগালীদের; ওরা মনে করে যে, বাংগালীদের কারণেই পাকিরা হিন্দুদের কাছে পরাজিত হয়েছে ১৯৭১... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক রহমান আসবে, বাংলাদেশ হাসবে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৮


আমি যখন স্কুলে পড়তাম, দুপুরের শিফটে ক্লাস ছিল। একদিন স্কুলে যাওয়ার আগে দেখি ছোটো মামা সংসদ টিভিতে অধিবেশন দেখছেন। কৌতূহল হলো, মামা এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছেন। আমিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামে কোনটি মত এবং কোনটি মতভেদ?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৫৪




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটি ডায়াটের গল্প, যেভাবে ওজন কমিয়েছিলাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৮


১৬ ডিসেম্বরের খাবার ছিল। উপরের চায়ের ছবিতে ফেসবুকের দুই গ্রুপে দুটো পুরস্কার পেয়েছি প্রতিযোগিতায় আলহামদুলিল্লাহ।

মোবাইলে পোস্ট, ভুল ত্রুটি থাকিতে পারে, মার্জনীয় দৃষ্টিতে রাখবেন।

জব করি বাংলাদেশ ব্যাংকে। সারাদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×